টুইঙ্কেল টুইঙ্কেল লিটল স্টার, হাউ আই ওয়ান্ডার হোয়াট ইউ আর—এ ছড়া শোনেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। হ্যাঁ, দূর আকাশের ছোট্ট ওই ঝিকিমিকি তারাদের নিয়েই ছড়াটি। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন, তারাগুলো কেন রাতের আকাশে মিটমিট করে জ্বলে?
আসলে, ভূপৃষ্টের উপরিভাগে আছে বায়ুমণ্ডল। এ বায়ুমণ্ডলের জন্যই আমরা তারাদের ঝিকমিক করতে দেখি। কিন্তু বায়ুমণ্ডলের বাইরে গেলে, অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা মহাকাশে কোনো নভোযান থেকে নক্ষত্রের দিকে তাকালে আর ঝিকমিক করতে দেখব না! কিন্তু কেন হয় এমন? চলুন, আরেকটু বিস্তারিত জানা যাক।
পৃথিবী থেকে বহু বহুদূরে এসব নক্ষত্রের অবস্থান। আকাশে এগুলোকে দেখায় বিন্দুর মতো। এসব নক্ষত্রের নিজস্ব আলো আছে। এ আলো চলে সরল পথে। ওদিকে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে স্তরে স্তরে রয়েছে ধূলিকণা, গ্যাসসহ নানা উপাদান। নক্ষত্র থেকে নিঃসৃত আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর এক স্তর থেকে অন্য স্তরে যাওয়ার সময় দুটি স্তরের ঘনত্ব, তাপমাত্রা, ধূলিকণাসহ আরও নানাকিছুর তারতম্যের জন্য প্রতিসরিত হয়।
প্রতিসরিত হওয়া মানে, আলোর চলার পথ একটু বেঁকে যাওয়া। ফলে আলো দিক পরিবর্তন করে। এভাবে বিভিন্ন স্তরে বারবার দিক বদলে বিন্দুর মতো বহুদূর থেকে আসা এ আলোর রেখা আমাদের চোখে ধরা দেয়। এ কারণেই নক্ষত্রকে ঝিকমিক করতে দেখা যায়।
কিন্তু বায়ুমণ্ডলের বাইরে কোনো স্পেস স্টেশন থেকে নক্ষত্রের আলো দেখলে তা কোথাও প্রতিসরিত হবে না। সরাসরি আমাদের চোখে এসে পড়বে। এ কারণে সেখানে নক্ষত্রকে ঝিকমিক করতে দেখা যাবে না।
নক্ষত্র মিটিমিটি করে জ্বলে বুঝলাম, কিন্তু গ্রহগুলোও কি এই আলোর খেলা দেখায়? উত্তর, হ্যাঁ। গ্রহগুলোও মিটমিট করে। আসলে ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডলের বাইরে যা-ই দেখি না কেন, সবই মিটমিট করে। এখন ভাবতে পারেন, গ্রহদের এ ঝিকিমিকি আমাদের চোখে পড়ে না কেন তাহলে? কারণ গ্রহগুলো তুলনামূলক পৃথিবীর কাছাকাছি অবস্থিত। তাই নক্ষত্রের চেয়ে গ্রহগুলোকে বড় দেখায়। আসলে আকাশে এগুলোকে দেখায় চাকতির মতো।
অবশ্য বাস্তবে গ্রহের তুলনায় নক্ষত্র যোজন যোজন বড়। কিন্তু ওগুলো এত দূরে, আমাদের কাছে এগুলোকে মনে হয় বিন্দুর মতো। যাহোক, চাকতির মতো এসব গ্রহ থেকে স্থিতিশীল ও অনেকটা বিস্তৃত যে আলো বায়ুমণ্ডলের নানা স্তর পেরিয়ে আমাদের চোখে আসে, দিক বদলানোর ফলে তাতে খুব বেশি প্রভাব পড়ে যান। এজন্যই গ্রহগুলোকে আমরা ঝিকমিক করতে দেখি না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।