জুমবাংলা ডেস্ক : বাগেরহাটের রামপাল উপজলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকর বিরুদ্ধে নৈতিক স্খলনজনিত অভিযাগ উঠেছে। এই ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, এলাকাবাসী ও শিক্ষকরা তার অপসারনের দাবি করে অভিযাগ দায়ের করেছেন।
অভিভাবকদের মধ্য কেউ কেউ তাদের সন্তানদের বিদ্যালয় আর না পাঠানার হুমকিও দিয়েছেন। বিষয়টি খুলনা সিটি কর্পারেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেককে অবহিত করা হয়েছে।
বিদ্যলয়র ম্যানজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, অভিভাবক, শিক্ষকবৃন্দ ও স্থানীয় এলাকাবাসির সাথে পৃথক ভাবে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার উজলকুড় ইউনিয়নের তুলশিরাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমলেশ রায় সম্প্রতি এক পরনারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২৯ জানুয়ারী তাদের অনৈতিক কর্মকান্ডের একটি অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক নিজেই তার ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি শেয়ার করেন। সাথে সাথে তা ভাইরাল হয়। মানুষ ভিডিওটি ডাউনলোড করে ছড়িয়ে দেয়। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ভিডিওটি মানুষের মোবাইল ফোনে ঘোরাফেরা করায় এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকাবাসির মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃৃষ্টি হয়েছে। তারা দ্রুত ওই প্রধান শিক্ষকের অপসারনের দাবী করেছেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সেকেন্দার আলির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এ নিয়ে বেশ অসস্তিতে আছি। অভিভাবক, শিক্ষক, গ্রামবাসির কাছে আমি ছোট হয়ে গেছি। গত বছরের ২৯ আগস্ট তিনি প্রধান শিক্ষক হিসাবে তুলশিরাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের ২য় দিনই আমাকে একটি প্রসঙ্গ নিয়ে মিথ্যাবাদী বানিয়ে দেন তিনি। আমি প্রথম লোকজনের কাছ বিষয়টি শুনে বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে স্বচোখে দেখে বিশ্বাস করতে হয়েছে আমাকে। আমি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ভায়ের কাছে ঘটনা খুলে বলেছি। তিনি যে পরামর্শ দিয়েছেন সেই মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অমলেশ রায় বলেন আমার ফেসবুক আইডি কে বা কারা হ্যাক করে আমার ছবির সাথে অণ্য নারীর ছবি জুড়ে দিয়েছে। ভিডিও হ্যাক করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এক পর্যায় ভুল শিকার করে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরাধ করেন। তার স্ত্রী ও তার পক্ষে মোবাইল ফোনের পাশাপাশি স্ব-শরীরে স্থানীয় সংবাদ কর্মিদের সাথে দেখা করে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি এ বিষয়টি এখনও জানি না। এত বড় একটা সেনসিটিভ বিষয় আমাকে না জানানোর কারণ কি বুঝতে পারছি না। আমি ওই বিদ্যালয়ের সভাপতির সাথে কথা বলে জানাবো প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা।
এদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক অমলেশ রায় এ ঘটনার ১১ দিন পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি রামপাল থানায় একটি অভিযাগ দায়ের করেছেন। ওই অভিযাগে তিনি তার নিজ এলাকা কাঠাঁমারি এলাকার জয়দেব কবিরাজ, তিলক মন্ডল, গৌতম, তুলশি, চৈতন্য রায়, যুগল রায়, মঙ্গল রায় ও শেখর তরফদারসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে একটি মেয়ের সঙ্গে তার অশ্লীল ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযাগ করেন। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেছেন। এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা উপজেলা চেয়ারম্যান সেখ মোয়াজ্জেম হোসেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন আমি বিষয়টি ভালো করে জানি না। এখন জেনেছি এবং খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।