আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার তৈরি লং রেঞ্জের এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে প্রথম সার্ভিসে আসে আজ থেকে ১৭ বছর আগে ২০০৭ সালে। বর্তমানে রাশিয়ার পাশাপাশি ভারত, চীন ও তুরস্কের সামরিক বাহিনীর এই ডেডিকেটেড এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম অপারেট করে। বর্তমানে এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে কার্যকর একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এটিকে কার্যত সভিয়েত আমলের এস-৩০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের উপর হাইলি আপগ্রেড করে নতুন প্রযুক্তির সমন্বয়ে ডিজাইন ও তৈরি করে রাশিয়ার আলমার্জ এন্টি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি। গত ২০২১ সালের হিসেব অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট সংখ্যক ইন্টারসেপ্টর মিসাইলসহ প্রতিটি এস-৪০০ ব্যাটারির রপ্তানি মূল্য হতে পারে প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার।
এর ইন্টারসেপ্টর মিসাইলের ম্যাক্সিমাম রেঞ্জ ৪০০ কিলোমিটার। তবে এটি বিভিন্ন দূরত্বের টার্গেটের জন্য চারটি ভিন্ন ভিন্ন সিরিজ ও রেঞ্জের ইন্টারসেপ্টর মিসাইল দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে। বিশেষ করে লং রেঞ্জের এরিয়াল টার্গেট ধ্বংস করার জন্য ৪০০ কিলোমিটার রেঞ্জের ৪০এন৬ ইন্টারসেপ্টর মিসাইল ব্যবহার করা হয়।
তার পাশাপাশি মিডিয়াম রেঞ্জের ২৫০ কিলোমিটারের মধ্যে টার্গেট ধ্বংস করার জন্য ৪৮এন৬ এবং ১২০ কিলোমিটার টার্গেটের জন্য ৯এম৯৬ ই২ সিরিজের ইন্টারসেপ্টর মিসাইল ব্যবহার করে। তবে ০ থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার রেঞ্জের মধ্যে যে কোন এরিয়াল টার্গেট ধ্বংস করার জন্য ৯এম৯৬ ই সিরিজের এডভান্স ইন্টারসেপ্টর মিসাইল ব্যবহার করা হয়।
রাশিয়ার আলমার্জ কোম্পানির তৈরি অত্যাধুনিক এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের কিছু ব্যাটারি ইউক্রেনের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকা এবং ক্রিমিয়া দ্বীপে মোতায়েন করা থাকলেও বাস্তবে এর কোন কার্যকর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় না। রশিয়া এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দিয়ে ইউক্রেনের বেশকিছু যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে বলে দাবি করলেও এ সংক্রান্ত কোন ভিডিও বা ইমেজ প্রকাশ করেনি।
অন্যদিকে ক্রিমিয়া দ্বীপে এটি মোতায়েন করা থাকলেও রাশিয়ার ব্লাক সী ফ্লীটের বেশকিছু যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন বেশ কয়েক বার স্ক্যাল্প ক্রুজ মিসাইল হামলায় ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্থ করার সময় এর রাডার সিস্টেম কোন কোন সারা দেয়নি। তবে রাশিয়া যাই বলুক না কেন চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার এস-৩০০/এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের বেশকিছু ইউনিট ইউক্রেন সামরিক বাহিনীর মিসাইল ও ড্রোন হামলায় একেবারে ধ্বংস কিংবা মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
আবার এসব এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দ্বারা ভুলভাবে এ পর্যন্ত নিজ দেশেরই ১০টি থেকে ১২টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার এসব ডিফেন্স সিস্টেম দ্বারা ধ্বংস করা হয়েছে। গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে রাশিয়ার লুহানস্ক ও ক্রিমিয়ায় মোতায়েন থাকা তিনটি থেকে পাঁচটি এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইউনিট ধ্বংসের বিষয়টি প্রকাশ পায় রাশিয়ার বেশকিছু মিডিয়ায়।
তাছাড়া রয়টার্স নিউজের দেয়া তথ্যমতে, সাম্প্রতিক সময়ে, রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়ায় কোন এক বিমান ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের চারটি মিসাইল লঞ্চার ইউক্রেনের ড্রোন কিংবা মিসাইলের আঘাতে একেবারেই ধ্বংস কিংবা মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যদিও বিষয়টি কিন্তু একেবারে শতভাগ নিরপেক্ষ কোন সূত্র দ্বারা প্রমান করা সম্ভব হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।