জুমবাংলা ডেস্ক: আলোচিত বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যায় গ্রেফতার হওয়া বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের মা ঝর্ণা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ছেলে কাউকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে এটা আমি বিশ্বাস করতে পারি না। আমার ছেলে ষড়যন্ত্রের শিকার। সিসি টিভির ফুটেজে দেখেছি তাতে আমার ছেলেকে দেখা যায়নি।’
স্থানীয়রা জানান, রাঙ্গারদিয়া গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য রুহুল আমিন ও ঝর্ণা আমিন দম্পতির বড় ছেলে মেহেদী হাসান। রুহুল আমিনের চার সন্তানের মধ্যে মেহেদী হাসান সবার বড়।
বাবা রুহুল আমিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ওয়ারেন্ট অফিসার ছিলেন। রাসেলের বাবা রুহুল আমিন ২০০৮ সালে ময়মনসিংহ থেকে অবসরে যান। বাবার চাকরির সুবাদে ছেলে মেহেদী হাসান রাসেল দেশের বিভিন্ন স্কুল কলেজে লেখাপড়া করেছেন। রাসেল রংপুরের একটি স্কুল থেকে এসএসসি ও ময়মনসিংহ সৈয়দ নজরুল কলেজ থেকে এইচ এস সি পাস করে। এসএসসি ও এইচ এস সিতে জিপিএ- ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। পরে ২০১৩ সালে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে ভর্তি হয়।
রাসেলের ছোট বোন জান্নাতী মীম গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। আর এক বোন গ্রামের যোগারদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী আর ছোট ভাই একই স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। বাবা রুহুল আমিন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ওয়ারেন্ট অফিসার ছিলেন।
সব পরামর্শ দেন রাসেল, লাশ সরানোর চাপও দেন তিনি :শেরেবাংলা হলের একাধিক শিক্ষার্থী ও তদন্তসংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলের নির্দেশেই আবরারকে তার রুম থেকে ২০১১ নম্বর রুমে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। আবরারের ওপর হামলার নেপথ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া ছাড়াও অন্য কারণ খুঁজে দেখছে তদন্ত সংস্থা ডিবি। এরই মধ্যে তদন্তসংশ্নিষ্টরা জানতে পেরেছেন, ক্যান্টিনে খাবার নিয়েও রাসেলের সঙ্গে আবরারের তর্ক হয়েছিল।
তদন্তসংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, আবরারকে মারধরের পর হামলাকারীরা রাসেলকে পরিস্থিতি জানায়। তখন তিনি নিজের কর্মীদের বলেন, ও অভিনয় করছে। আরও মারতে হবে। মারধরের এক পর্যায়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বমি করে দেন আবরার। তখন রাসেল তাকে ওই রুম থেকে সরিয়ে ২০০৫ নম্বর কক্ষে নিতে বলেন। সেখানে আবরারকে সুস্থ করারও চেষ্টা হয়। জ্ঞান ফিরলে আবরারকে শিবিরকর্মী বলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ারও পরামর্শ দেন রাসেল। এরপর নিজেই রাত দেড়টার দিকে চকবাজার থানায় ফোন দেন। তখন পুলিশ হলে গেলেও আবার তিনিই তাদের ঢুকতে বাধা দেন।
চকবাজার থানার উপপরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন ওই রাতে শেরেবাংলা হলে যান। তিনি বলেন, ঝামেলার খবর পেয়ে থানা থেকে তাকে টহল ডিউটি দেওয়ার সময়ে ওই হলে যেতে বলা হয়। রাত সোয়া ২টার দিকে তিনি হলের অভ্যর্থনা কক্ষে যান। এরপর সাধারণ সম্পাদক রাসেলকে ফোন দেন। ওই সময় রাসেল তাকে বলেন, প্রভোস্ট ও প্রক্টর স্যারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাদের অনুমতি ছাড়া হলে প্রবেশ করা যাবে না। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, তিনি ভেতরে প্রবেশের অনুমতি না পেয়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে টহল ডিউটিতে চলে আসেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।