স্পোর্টস ডেস্ক: স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ইংলিশ ক্লাব চেলসি। বুধবার (০৫ মে) রাতে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে সেমি-ফাইনালের ফিরতি লেগে ২-০ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা। রিয়ালের মাঠে ১-১ ড্র করে ফেরা ইংলিশ দলটি দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ অগ্রগামিতায় ফাইনালের টিকেট কাটল।
চেলসির হয়ে ম্যাচের ২৮তম মিনিটে কাই হার্ভাটজের অ্যাসিস্ট থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন টিমো ভার্নার। আর ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ৮৫ মিনিটে ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচের অ্যাসিস্ট থেকে দলের লিড দ্বিগুণ করেন মেসন মাউন্ট।
পুরো ম্যাচে ছিল চেলসির একচ্ছত্র আধিপত্য। মাত্র এক-তৃতীয়াংশ সময় বল দখলে রেখেও প্রায় পুরোটা সময়ই প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় তারা। গোলের উদ্দেশে মোট ১৫টি শট নেয় দলটি, এর পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে।
অন্যদিকে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা ছিল ছন্নছাড়া। রক্ষণ, মাঝমাঠ ও আক্রমণভাগ-কোনও জায়গায়ই প্রত্যাশিত ফুটবল খেলতে পারেনি টুর্নামেন্টের রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
কিছুটা ধীর গতির ফুটবলে শুরু ম্যাচের দশম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নেয় রিয়াল। টনি ক্রুসের দূর থেকে নেওয়া শটটি অবশ্য অনায়াসে নিয়ন্ত্রণে নেন গোলরক্ষক এদুয়াঁ মেন্দি। পরের মিনিটে পাল্টা-আক্রমণ চালায় চেলসি। দুই মিনিট পর আন্টোনিও রুডিগারের জোরালো শট পাঞ্চ করার পর মাউন্টের গোলমুখে বাড়ানো বল পা দিয়ে রুখে দেন থিবো কোর্তোয়া।
খানিক পর জালে বল পাঠান ভার্নার। তবে অল্প ব্যবধানে অফসাইডে ছিলেন এই জার্মান ফরোয়ার্ড। ২৬তম মিনিটে করিম বেনজেমার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান মেন্দি। পাল্টা আক্রমণে পরের মিনিটে এগিয়ে যায় চেলসি।
ভার্নারের সঙ্গে একবার বল দেওয়া নেওয়া করে ডি-বক্সে কাই হাভার্টজকে খুঁজে নেন এনগোলো কান্তে। এগিয়ে আসা কোর্তোয়ার ওপর দিয়ে নেওয়া হাভার্টজের চিপ ক্রসবারে বাধা পায়, তবে সঠিক সময়ে গোলমুখে ছুটে গিয়ে হেডে ফাঁকা জালে বল পাঠান ভার্নার।
চোট কাটিয়ে অধিনায়ক সার্জিও রামোস ফিরলেও এই গোলে রিয়ালের রক্ষণের দুর্বলতা ফুটে ওঠে। হাভার্টজের শট নেওয়া থেকে গোল পর্যন্ত কেউই প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ জানায়নি, ভার্নারের হেডের সময় তো তার ধারে কাছে ছিল না কেউ!
দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো। তবে হাভার্টজের হেড ক্রসবারে বাধা পায়। পরের ১২ মিনিটে আরও দুটি ভালো সুযোগ পায় তারা; কিন্তু বাড়েনি ব্যবধান।
‘ওয়ান-অন-ওয়ানে’ উড়িয়ে মারেন মাউন্ট। গোলরক্ষককে একা পেয়েছিলেন হাভার্টজও; তবে তার শট এগিয়ে গিয়ে রুখে দেন কোর্তোয়া। দিকহারা সতীর্থদের মাঝে কোর্তোয়া ছিলেন স্বরূপে। ৬৬তম মিনিটে কান্তের শটও পা রুখে দেন তিনি।
সুযোগ নষ্টের মিছিলে ১০ মিনিট পর ম্যাচ শেষ করে দিতে পারতো চেলসি; কিন্তু ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের গোলমুখে বাড়ানো বলে পা ছোঁয়াতে পারেননি কেউ।
অবশেষে ৮৫তম মিনিটে জয়টা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন ইংলিশ মিডফিল্ডার মাউন্ট। নাচো ফার্নান্দেসের থেকে বল কেড়ে কান্তে ডি-বক্সে খুঁজে নেন পুলিসিচকে। যুক্তরাষ্ট্রের এই তরুণ উইঙ্গারের কাটব্যাক গোলমুখে পেয়ে দলকে উৎসবের উপলক্ষ এনে দেন মাউন্ট।
২০১১-১২ আসরে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এই প্রথম প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে উঠল চেলসি।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৯ মে তুরস্কের ইস্তানবুলে শিরোপা লড়াইয়ে আরেক ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে মাঠে নামবে চেলসি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।