রুশ জেটের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে সাগারে মার্কিন ড্রোন বিধ্বস্ত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, একটি রুশ যুদ্ধবিমানের সাথে সংঘর্ষের পর পাইলট বিহীন একটি মার্কিন ড্রোন কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। খবর-বিবিসি বাংলা’র।
ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া মুখোমুখি হলে কী বিপদ হতে পারে এই ঘটনা মূলত সেটিই জানান দিলো।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ড্রোনটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় এক নিয়মিত মিশনে ছিল এবং রাশিয়ার দুটি বিমান এটির গতিরোধ করতে চেষ্টা করে।
রাশিয়া জানায়, ড্রোনটি একবার হঠাৎ তার অবস্থান পরিবর্তন করার পরই সেটি বিধ্বস্ত হয়। তবে দুটি রুশ বিমানের সাথে সেটির সরাসরি কোন সংঘাত বা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি বলে দেশটি দাবি করেছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, এমকিউ-৯ রিপার ড্রোনটি তার ট্রান্সপনডার বন্ধ করে উড়ছিলো।
ট্রান্সপনডার একটি যোগাযোগ যন্ত্র যা বিমানকে ট্র্যাক করা বা অবস্থান জানার কাজে ব্যবহৃত হয়। রিপার ড্রোন একটি নজরদারি বিমান যার উইংস্প্যান হচ্ছে ৬৬ ফুট।
মার্কিন সেনা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার মধ্য ইউরোপের স্থানীয় সময় সকাল সাতটার পর এ ঘটনা ঘটে। এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমাদের এমকিউ-৯ যানটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছিল।
সেসময় একটি রুশ বিমান এটির গতিরোধ করে এবং সেটিকে আঘাত করে। যার কারণে সেটি বিধ্বস্ত হয় এবং এমকিউ-৯ চিরতরে হারিয়ে যায়।”
এতে বলা হয়, সংঘর্ষের আগে বেশ কয়েকবার এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান ‘বেপরোয়া, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং অ-পেশাদার উপায়ে’ ড্রোনটিতে জ্বালানী ফেলেছিল।
এ ঘটনার পর ওয়াশিংটনে থাকা রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনভকে তলব করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠকের পর রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আন্তোনভকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, মস্কো ড্রোনের ঘটনাটিকে ‘একটি উসকানি’ হিসেবে দেখছে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়াকে নিজেদের অন্তর্ভূক্ত করার পর থেকে কৃষ্ণ সাগর নিয়ে উত্তেজনা বেড়েছে।
এদিকে, ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য পরিদর্শন ও নজরদারি বিষয়ক ফ্লাইট বাড়িয়েছে। যদিও তারা সবসময় আন্তর্জাতিক আকাশসীমায় থেকেই এ কাজগুলো করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, রাশিয়া কি মঙ্গলবারের ঘটনা মার্কিন ড্রোনের কাজে বাধা সৃষ্টি করার জন্যই করেছে? নাকি প্রকৃতপক্ষে ড্রোনটিকে ধ্বংস করার জন্যই এমনটা করা হয়েছে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতে, এই অঞ্চলে মিত্র দেশের বিমানগুলোর সাথে যোগাযোগের সময় ‘রুশ পাইলটদের বিপজ্জনক কর্মকাণ্ডের নমুনা’ রয়েছে।
সুতরাং এটি একজন রুশ পাইলটের একটি ভুল হতে পারে, যিনি ড্রোনটিকে ভয় দেখানোর জন্য এর খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিলেন। আর যদি এটি মার্কিন বিমানের উপর রুশ যুদ্ধবিমানের ইচ্ছাকৃত আক্রমণ হয়, তবে এটি একটি বিশাল উস্কানি এবং উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য এটাই যথেষ্ট হবে।
সেক্ষেত্রে, আক্রমণটিকে মার্কিন প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য ক্রেমলিনের একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হবে। পশ্চিমা মিত্ররা ইউক্রেনের যুদ্ধ রুখতে জোড়ালো তৎপরতা চালিয়েছে যা রাশিয়ার সাথে সরাসরি সংঘাতে পরিণত হয়েছে। কৃষ্ণ সাগরের উপর ঘটা এই ঘটনা ঠিক তেমনই। যুক্তরাষ্ট্রকে এখন তার প্রতিক্রিয়া মূল্যায়ন করতে হবে। যেমন মার্কিন সামরিক কমান্ডাররা তাদের বিবৃতিতে সতর্ক করেছেন, এটি একটি বিপজ্জনক কাজ যা ‘ভুল ধারণা এবং অনিচ্ছাকৃত উত্তেজনা বৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে পারে’।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।