আরিফ খান, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী): শিশু হুজাইফ (১১)। বছর খানেক আগে বাবা হারুন মিয়াকে হারিয়েছে সে। মা-বোন আর বড় ভাইয়ের সাথে থাকেন রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের বউ বাজার এলাকায় বেড়িবাঁধে ছোট্ট একটি ঘরে।
বড় ভাই দিনমজুরের কাজ করে। আর হুজাইফ তার ছোটবোন তাইবাকে সাথে নিয়ে প্রতিদিন রেণু পোনা বিক্রি করে সংসারের হাল ধরতে সহযোগিতা করে বড় ভাইকে। প্রাইমারি স্কুল পেরোনোর আগেই তাকে নেমে পড়তে হয়েছে জীবনযুদ্ধে।
হুজাইফ সাগর মোহনায় ঢেউয়ের তালে তালে শক্ত হাতে মশারি জালের মাধ্যমে তুলে আনে বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা। আর নদীর পাড়ে বসে তার ছোট বোন তাইবা (৭) বিশেষ এক ধরনের সাদা চামচের মাধ্যমে পাত্র থেকে বাগদা রেণু বাছাই করে অন্য পাত্রে মজুদ করছে। দিনশেষে এসব পোনা বিক্রি করে তিন থেকে চারশত টাকা পায় তারা।
শুধু হুজাইফ ও তায়বা একা নয়, তার মতো আরও অনেক শিশু এভাবেই আহরণ করে চলেছে চিংড়ি পোনা। শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহ করতেই এ কাজে জড়িয়ে পড়ছে তারা।
জেলেরা জানান, চৈত্র থেকে আষাঢ় এ চার মাস বাগদা রেণুর মৌসুম। এ সময়টায় প্রকৃতিগতভাবেই নদীগুলোতে উৎপন্ন হয় বাগদা চিংড়ির রেণু পোনা। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে এ পোনার বিশেষ চাহিদা থাকায় রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবি, বড়বাইশদিয়া, ছোটবাইশদিয়া ও চরমোন্তাজের বিভিন্ন পয়েন্টে নিষিদ্ধ মশারি জাল নিয়ে নদীতে রেণু পোনা ধরেন। বাগদা রেণু পোনা মহাজনের কাছে বিক্রি হয় শত হিসেবে। আর মহাজন বিক্রি করেন পিচ হিসেবে।
চরমোন্তাজ ইউনিয়নের রেণু শিকারের সঙ্গে জড়িত রাসেলসহ আরও অনেকে জানান, অভাবের তাড়নায় জীবন-জীবিকার তাগিদে তারা এসব পোনা শিকার করেন। প্রতিদিন একেক জন ৬০০ থেকে ৮০০ পোনা শিকার করছেন। এ পোনা বিক্রি করে এখন তাদের সংসার চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।