জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘নিয়োগ-দুর্ভিক্ষ’ কাটতে চলেছে। শিগগিরই রেলওয়েতে ১৫ হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের বরাত দিয়ে বলেন, রেলে জনবল সংকট সমাধান করতে ধাপে ধাপে শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রথম ধাপে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের ১৫ হাজার শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। তিন বছরের মধ্যে এসব পদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।
এরই মধ্যে সহকারী স্টেশন মাস্টারের ২৩৫টি পদে আবেদনের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২৩৫ জন সহকারী স্টেশন মাস্টার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এক বছরের মধ্যে ২৫০ জন সহকারী লোকো মাস্টার, ৩০০ জন পয়েন্টম্যান, ৪৫০ জন খালাসি, ৮০০ জন গেটকিপার নিয়োগ দেওয়া হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০১২ সালের পর পর্যায়ক্রমে ১৫ হাজার জনবল নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর কমপক্ষে অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করেন চাকরি বঞ্চিতরা। এতে দীর্ঘদিন আটকে থাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া।
এদিকে, চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রায় প্রতিদিন নিয়মিত অবসরে যাচ্ছেন বিভিন্ন পদের কর্মচারীরা। অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়লেও বাংলাদেশ রেলওয়ে জনবল সংকটে ধুঁকছেই। রেলওয়ে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য প্রায় কমপক্ষে ২৩ হাজার পদে জনবল নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গত ২৪ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এই সংকট নিরসনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, রেলে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকায় দেওয়া হবে। রেলে নিয়োগ পাওয়া সকলের প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে রেলের উন্নত সেবা নিশ্চিত করা হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, ১৯৮৪ সালে এই সংস্থার জন্য ৬৮ হাজার ৫২৪টি পদ নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে আরও ১৪ হাজার ৩৬৮টি পদ সৃজন করা হয়। জনবল বেড়ে হয় ৮২ হাজার ৮৯২। রেলওয়ের পক্ষ থেকে জনবল কাঠামোর অপ্রয়োজনীয় পদ বিলুপ্তি ও সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় পদ সৃজনের সুপারিশ করা হয় ২০১৯ সালের মার্চে। ২০২০ সালের ৯ আগস্ট এই জনবল কাঠামোয় ১৯৫টি বিসিএস ক্যাডার পদ স্থায়ীভাবে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছিল। তার সঙ্গে অস্থায়ীভাবে ৫ হাজার ৩৪৪টি নন-ক্যাডার পদসহ মোট ৫ হাজার ৫৩৯টি নতুন পদ সৃজনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। বিদ্যমান ৮২ হাজার ৮৯২টি পদ থেকে ১০২টি বিসিএস ক্যাডার পদসহ মোট ৪০ হাজার ৭২৮টি পদ বিলুপ্ত করে ৪৭ হাজার ৭০৩টি পদের সংশোধিত জনবল কাঠামো প্রস্তাব করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে এ বিষয়ে সম্মতি পাবার পর তা অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়। গত ৮ জুলাই বাংলাদেশ রেলওয়ের ৪৭ হাজার ৬৩৪ জনবলের সাংগঠনিক কাঠামোর অনুমোদন দেয় প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে এখন শূন্যপদ আছে প্রায় ১৫ হাজার। এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। বাকি শূন্যপদ দ্বিতীয় ও প্রথম শ্রেণীর কর্মচারীদের। সময়মতো নিয়োগ না হওয়ায় ও রেলওয়ের বিপুল সংখ্যক কর্মচারী অবসরে যাওয়ায় শূন্যপদ বাড়ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের দেওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অবসর নেন। ওই অর্থবছরে নিয়োগ দেওয়া হয় ৫৭৮ জনকে। রেলওয়ের জনবল কমে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৮০ জনে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।