গোপাল হালদার, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কৃষি জমিতে লবণাক্ততা বাড়ছে। ফলে অনাবাদী হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষিজমি। লবণাক্ততা বন্ধে এখনই উদ্যোগ না নিলে উপকূলীয় এই জেলায় কৃষি উৎপাদন হুমকির মুখে পড়বে বলে আশংকা কৃষি বিজ্ঞানীদের।
বর্তমানে শুস্ক মৌসুমে জেলার মোট আবাদী জমির সাড়ে ২৭ ভাগ অনাবাদী পড়ে আছে। এছাড়া এবছর বেশ আগেই জমিতে লবণাক্ততা দেখা যাচ্ছে।
উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে আবাদি জমির পরিমাণ তিন লক্ষ সাত হাজার আট শত পঁচাত্তর হেক্টর। কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, এর অর্ধেক প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমি লবণাক্ত। এসব জমিতে ফসল উৎপাদন হয় না বললেই চলে।
মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট পটুয়াখালী কার্যালয় থেকে জানা যায়, ১৯৭৩ সাল থেকে কয়েক দফায় লবণাক্ততার প্রভাব নির্ণয়ে গবেষণা করা হয়। এসব গবেষণায় দক্ষিণাঞ্চলের পানি এবং কৃষি জমিতে লবণের পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে।
প্রতি বছর মার্চ থেকে এপ্রিল মাসে জমিতে লবণের সাদা আস্তরণ দেখা যায়। তবে এবার ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই লবণের আস্তরণ দেখা যাচ্ছে। গলচিপা এবং কলাপাড়া উপজেলায় লবণাক্ততার প্রভাব সব থেকে বেশি।
কলাপাড়া উপজেলার নিলগঞ্জ গ্রামের মোঃ জাকির হোসেন বলেন, আমরা বর্তমানে পানির অভাবের মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই, আমাদের কোনো সাহায্যের প্রয়োজন নেই। আমাদের যে খালগুলো রয়েছে যদি তা খনন করা হয় তাহলে এই লবনাক্ততা থেকে মুক্তি পাওয়া খুবই সহজ হবে ও এই লবনাক্ততার ভিতরেও চাষ করে সফল হবো আশা করি।
মোঃ সুলতান গাজী নামে এককজন কৃষক বলেন, লবণক্ততার কারণে পটুয়াখালীর কৃষি জমি হুমকীর মুখে পড়েছে। এভাবে লবণ পানি বৃদ্ধি ঘন ঘন খরার ফলে বর্তমানে চাষাবাদ করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বর্ষার মৌসুম ছাড়া লবনাক্ততা কমে না।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কমকর্তা মোহম্মদ নজরুল ইসলাম জানান, মানুষ গভীরভাবে বিশ্বাস করে যে, লবণাক্ত জমি ব্যবহারযোগ্য নয়। বছরের পর বছর গবেষণা ও পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলে এখন লবণাক্ত জমিতেও খুব ভালোভাবে ফসল ফলানো সম্ভব। লবণসহিষ্ণু জাত, নিয়মিত সেচ, পানি ব্যবস্থাপনা, উপযুক্ত মাত্রার সার প্রয়োগ ইত্যাদি সকল প্রযুক্তির সম্মিলিত প্রয়োগের মাধ্যমেই লবণাক্ত জমিকে পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, লবণাক্ততা সহনশীল ফসল চাষাবাদ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। তবে বৃষ্টির মৌসুম এলে এই লবণাক্ততা কমে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই সংকট কালে কৃষি এবং কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।