স্পোর্টস ডেস্ক: নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের কাছে লা লিগার শিরোপা হারালেও মৌসুমের শেষ মাদ্রিদ ডার্বিতে এগিয়েই থাকলো এ্যাথলেটিকো। কাল ঘরের মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে লিগ শিরোপা নিশ্চিত করা রিয়ালের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় দিয়ে অনেকটাই সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে গেছে দিয়েগো সিমিওনের দল। এই জয়ে ৩৫ ম্যাচে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে থাকা এ্যাথলেটিকোর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা ধরে রাখা প্রায় নিশ্চিতই বলা চলে। পঞ্চম স্থানে থাকা রিয়াল বেটিসের থেকে তারা ৬ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে। হাতে রয়েছে আর মাত্র তিনটি ম্যাচ।
ইয়ানিক কারাসকোর প্রথমার্ধের পেনাল্টির গোলেই খর্ব শক্তির রিয়ালের বিপক্ষে এ্যাথলেটিকোর জয় নিশ্চিত হয়। আগেই শিরোপা নিশ্চিত করা রিয়ালের জন্য এই ম্যাচটি ছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতা। যে কারনে করিম বেনজেমা, লুকা মড্রিচ, থিবাট কুর্তোয়াদের মত তারকাদের বদলী বেঞ্চে রেখেই মূল একাদশ সাজানোর সাহস করেছিলেন রিয়াল বস কার্লো আনচেলত্তি। এই সুযোগটি পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে এ্যাথলেটিকো, যদিও পুরো ম্যাচে বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ তারা নষ্ট করেছে।
মঙ্গলবার এ্যাওয়ে ম্যাচে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে যদি বেটিস জিততে না পারে তবে এ্যাথলেটিকোর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নিশ্চিত হয়ে যাবে। আর বেটিস জিতলে পরেরদিন এলচের বিপক্ষে জিততে পারলেই শীর্ষ চারে থাকা নিশ্চিত হবে।
কাল ম্যাচ শেষে এ্যাথলেটিকোর অধিনায়ক কোকে বলেছেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাকি থাকা তিন ম্যাচের একটিতেই জিততে পারলেই তা সম্ভব হবে।’
রোববার দিনের শুরুতে ভিয়ারিয়ালের সাথে এ্যাওয়ে ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে সেভিয়ারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। বেটিসের থেকে তারা সাত পয়েন্ট এগিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
২০১৬ সালের পর লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদকে হারাতে পারেনি এ্যাথলেটিকো। ২০১৫ সালের পর ঘরের মাঠে জিততে পারেনি দিয়েগো সিমিওনের দল। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় রিয়ালের বিপক্ষে শেষ আটটি ম্যাচে কোন জয়তো নেই, উল্টো অন্তত দুই গোলের ব্যবধানে তারা হেরেছে। পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসাটা নি:সন্দেহে সন্তুষ্টির। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলাটা সত্যিই স্বস্তিদায়ক।
ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচটি থেকে মূল একাদশে কাল শুধুমাত্র সুযোগ পেয়েছিলেন টনি ক্রুস, ক্যাসেমিরো ও এডার মিলিটাও। এ কারনে লুকা জোভিচ আক্রমনভাগে, এডুয়ার্ডো কামভিনগা মধ্যমাঠে ও জেসুস ভালেয়ো খেলেছেন রক্ষনভাগে। ইউক্রেনিয়ান গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন প্রথমবারের মত এবারের মৌসুমে মূল একাদশে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। আনচেলত্তি বলেছেন, ‘আমরা বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দিয়েছি। কারন আমরা সমস্যা এড়াতে চেয়েছি। আগামী কয়েকটি ম্যাচেও হয়ত এমনই হবে।’
প্রথমার্ধে এ্যাথলেটিকো ম্যাচটির প্রতি তাদের গুরুত্ব বুঝিয়ে দিয়েছে। এ্যাঞ্জেল কোরেয়ার প্রথম শটটি অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। কারাসকোর প্রথম শটও এ্যাথলেটিকোকে এগিয়ে দিতে পারেনি। ৪০ মিনিটে মার্কো আসেনসিওর ভুল পাসে ম্যাথুস কুনহা বল পেয়ে এগিয়ে গেলে ডি বক্সেও ভিতর ভালেয়ো ও মিলিটাও তাকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন। এ্যাথলেটিকো পেনাল্টির আবেদন করলেও রেফারি প্রথমে খেলা চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেন। এরপর ভিএআর এর সহায়তায় পেনাল্টি উপহার পায় এ্যাথলেটিকো। স্পট কিক থেকে কারাসকো কোন ভুল করেননি।
বিরতির পর ম্যাচে ফিরে আসার লক্ষ্যে ভিনিসিয়াস জুনিয়র, মড্রিচ ও ফেডে ভালভার্দে দলে ফিরলেও সফল হতে পারেনি রিয়াল। ম্যাচের শেষ ১০ মিনিট ভালভার্দে ও ভিনিসিয়াস এ্যাথলেটিকো গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাককে বারবার বিপদে ফেলার চেষ্টা করেছেন।
ভিয়ারিয়ালেরের মাঠে জুলেস কুনডেসের ৯৬ মিনিটের গোলে সেভিয়া ১-১ গোলে ড্র করে লা লিগায় শীর্ষ চারে থেকে মৌসুম শেষ করার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। ৮৬ মিনিটে অবশ্য গিওভানি লো সেলসোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ভিয়ারিয়াল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।