জুমবাংলা ডেস্ক : আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটের আকার খুব বেশি না বাড়লেও বাড়ছে বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা। আগামী অর্থবছরে এক লাখ কোটি টাকা বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে, যা চলতি অর্থবছরের মূল এডিপির বৈদেশিক অংশের তুলনায় ৬.৩৮ শতাংশ বেশি এবং সংশোধিত এডিপির তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে যেখানে ৯৪ হাজার কোটি টাকা ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা আগামী অর্থবছরে বাড়িয়ে এক লাখ কোটি টাকা করা হচ্ছে।
যদিও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী খরচ করতে না পারায় সংশোধিত বাজেটে সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর আগে অর্থ খরচের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এডিপিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থার বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বরাদ্দ নির্ধারণে চার দিনের সিরিজ বৈঠক হয়েছে। এর আগে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে বরাদ্দের ধারণা চাওয়া হয়।
বৈঠকগুলোতে বিস্তারিত আলোচনার পর প্রকল্পভিত্তিক বরাদ্দের প্রাথমিক খসড়া তৈরি করা হয়। ইআরডির একজন কর্মকর্তা জানান, এর মধ্যে পরবর্তী অর্থবছরের উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্যমাত্রা প্রস্তুত করা হয়েছে, যা গত অর্থবছরের মূল এডিপির চেয়ে বেশি হবে। প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত করতে এর মধ্যে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত এক লাখ কোটি টাকার মধ্যে ৯৬ হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে এবং ব্লক বরাদ্দের জন্য রয়েছে চার হাজার কোটি টাকা।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর আগে অর্থ খরচের সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি। যেসব প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ আছে, সেগুলো বিশেষভাবে মনিটর করতে হবে। প্রকল্পের গতি বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। বরাদ্দ দিয়ে দিলাম, খরচ করতে পারল না, তাহলে তো এত বরাদ্দ দিয়ে লাভ নেই।
তিনি বলেন, সরকার বর্তমানে ডলার সংকট কাটাতে বৈদেশিক ঋণ ছাড়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করে অর্থ ছাড় না করতে পারলে সরকারের উদ্দেশ্য পূরণ হবে না।
ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক অর্থ খরচের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, তা আশানুরূপভাবে পূরণ না হওয়ায় সংশোধিত এডিপিতে কমানো হয়েছে বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা।
ইআরডির তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বৈদেশিক অর্থছাড় হয়েছে ৪৯৯.৭ কোটি ডলার। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪৮৭ কোটি ডলার। এই সময় সবচেয়ে বেশি অর্থ ছাড় করেছে এডিবি। এই সংস্থা অর্থ ছাড় করেছে ১৩০ কোটি ডলার। জাপান ছাড় করেছে ১০৪ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংক ছাড় করেছে ৮৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। এ ছাড়া রাশিয়া ৮০ কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং চীন ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।