ঐতিহাসিক ‘হারানো মসজিদ’। রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের এক কিলোমিটার দক্ষিণে লালমনিরহাট সদর উপজেলার পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের রামদাস মৌজায় অবস্থিত। ১৯৮৬ সালের দিকে আশ্চর্যজনকভাবে লালমনিরহাটে পাওয়া যায় এই প্রাচীন মসজিদ, যা বাংলাদেশে মুসলমানদের আগমনের প্রারম্ভিক ইতিহাসের রাজসাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল প্রায় এক হাজার ৩৫০ বছর আগে ৬৯ হিজরিতে।
ধারণা করা হয়, হজরত আবু ওয়াক্কাস (রা.) এ অঞ্চল দিয়েই চীনে পাড়ি জমিয়েছিলেন। বর্তমানে চীনের বিস্মৃত কোয়াংটা নদীর ধারে কোয়াংটা শহরে তাঁর নির্মিত মসজিদ ও তাঁর সমাধি রয়েছে। ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক টিম স্টিল দাবি করেন, খ্রিস্টপূর্ব সময় থেকে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পার ধরে সিকিম হয়ে চীনের মধ্য দিয়ে আরব ও রোমান বণিকদের বাণিজ্যবহরের যাতায়াতের অনেক প্রমাণ রয়েছে তাঁর কাছে। এই হারানো মসজিদ হতে পারে সাহাবি আবু ওয়াক্কাস (রা.) নির্মাণ করেছেন।
১৯৮৩-৮৪ সালে স্থানীয় লোকজন আড়াটি চাষাবাদের জন্য পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেয়। ঝোপঝাড় পরিষ্কার করতে গিয়ে তারা দেখে, জায়গাটি সমতল জমি থেকে উঁচু এবং সেখানে রয়েছে প্রায় সাত-আটটির মতো মাটির উঁচু টিলা। জায়গাটি সমতল করার জন্য খোঁড়া শুরু হলে সেখানে প্রাচীনকালের তৈরি প্রচুর ইট পাওয়া যেতে থাকে; যে ইটগুলোতে অঙ্কিত কিছু নান্দনিক ফুল। সবাই ভেবে নিয়েছিল, পুরনো কোনো জমিদার কিংবা রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ হতে পারে এটি।
কিন্তু ১৯৮৬ সালের ১০ মহররমের একটি ঘটনা তাদের টনক নাড়িয়ে দেয়। সেদিন গ্রামের আইয়ুব আলী নামের এক ব্যক্তি অন্য অনেকের মতো ইটের স্তূপ থেকে ইট কুড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে দেখেন, ইটের ওপর কিছু একটা লেখা। লেখা স্পষ্ট দেখার জন্য টিউবওয়েলের পানিতে ভালোমতো ধুয়ে তিনি দেখতে পান এটি কোনো প্রাচীন শিলালিপি, যাতে লেখা আছে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ, হিজরি সন ৬৯’। তখনই স্থানীয় লোকদের মনে প্রত্যয় জম্মে যে, এটি-একটি প্রাচীন মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। বর্তমানে সেখানে একটি মসজিদ নির্মান করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।