এদিকে, প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে অনুসন্ধান করে সব গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে লিখিত নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) কৃষ্ণপদ রায় স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনা গতকালই পুলিশের সব ক্রাইম বিভাগে পাঠানো হয়।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘ঢাকার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় উঠতি কিশোর-তরুণরা গ্যাং গ্রুপ তৈরি করেছে। মা’দক ব্যবসা, ইভটিজিং ও খু’নের মতো অপরাধে তারা জড়াচ্ছে। আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি এসব বখাটে তরুণ-কিশোরকে সংশোধনের জন্য অভিভাবকদের বড় ভূমিকা আছে। গ্যাং গ্রুপ পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না।’
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি আনিসুর রহমান বলেন, মোহাম্মদপুর ও আদাবরকেন্দ্রিক গ্যাং গ্রুপের ২২ জনকে আ’টক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ‘লাড়া দে’ গ্রুপের প্রধান মীমও রয়েছে। যে অভিভাবক তার সন্তানদের শোধরাতে ভূমিকা রাখবেন না, তারা এলাকায় থাকতে পারবেন না। বখাটে সন্তানরা এলাকা কলুষিত করবে, এটা হতে দেওয়া যাবে না। সোমবার মোহাম্মদপুরের সোনালী সংঘ মাঠে কমিউনিটি পুলিশের সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে এলাকাবাসী তাদের মতামত তুলে ধরবে। পুলিশের কোনো সদস্য যদি গ্যাং গ্রুপকে সহায়তা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জানা গেছে, রোববারের অভিযানে মোহাম্মদপুর ও আশপাশ এলাকা থেকে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা হলো- ‘লাড়া দে’ গ্রুপের লিডার মীম ও তার সহযোগী নাঈম, জিসান, অভিক, বিচি হৃদয়, লেভেল হাই গ্রুপের প্রধান মানিক, শাকিল, রায়হান। বাঁশবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতারের পরপরই মীমের মাথায় বুলেটপ্রুফ হেলমেট ও হাতকড়া পরানো হয়। এ সময় তার পরনে ছিল কালো প্যান্ট ও সাদা গেঞ্জি। এ ছাড়া গতকাল সকাল থেকেই মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় টহল দেয় পুলিশ। তাই কোনো সড়কে বখটেদের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
মোহাম্মদপুর এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ঈদের আগে গ্যাং গ্রুপের সদস্যদের গ্রেফতার করায় এলাকার সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন। কারণ, প্রায় প্রতিদিন দিনদুপুরে এসব গ্যাং পার্টির সদস্যরা ছিনতাই ও চুরি করে আসছিল। এতে তাদের সহায়তা করছিল কয়েকজন অসাধু পুলিশ সদস্য। গ্যাং পার্টির সক্রিয় সদস্যরা গ্রেফতার হওয়ায় এখন চুরি, ছিনতাই ও মা’দক কারবারে জড়াতে সাহস পাবে না তারা।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুর ও আশপাশ এলাকায় গ্যাং গ্রুপ তাদের বখাটেপনা চালিয়ে গেলেও পুলিশ ছিল নির্বিকার। কোথাও কোথাও পুলিশের অসাধু সদস্যরা গ্যাং গ্রুপ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সহায়তা করে আসছিল। অভিযানে বখাটে কিশোর-তরুণদের গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে পুলিশের কারা-কীভাবে তাদের সহায়তা করেছে, বেরিয়ে আসবে তা।
‘লাড়া দে’ গ্রুপের সদস্য সংখ্যা তিন শতাধিক। ফেসবুকেও গ্রুপ রয়েছে তাদের। এ গ্রুপের অধিকাংশের বয়স ১২-৩০ বছরের মধ্যে। ‘লাড়া দে’ নামের অর্থ বলতে তারা বোঝাচ্ছে ‘নাড়িয়ে দেওয়া’ বা ‘ঝাঁকুনি দেওয়া’। এই গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে তামিমুর রহমান মীম। তার বাবা একরামুল। মীমের বাসা মোহাম্মদপুরের বাঁশবাড়ি এলাকায়। তবে মীম বর্তমানে নবোদয় হাউজিংয়ের লোহার গেট এলাকায় বসবাস করে আসছিল। তার নামে মা’দক ব্যবসা, ছিনতাইয়ের একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। সূত্র : সমকাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।