হেদায়েত উল্লাহ, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা): চোখে ছিল স্বপ্ন। হবেন সফল লিচুচাষি। কিন্তু বিধি বাম। বারবার দিচ্ছেন লোকসান। মিলছে না কৃষি অফিসের পরামর্শও। এ অবস্থায় হতাশ হয়ে পড়েছেন এক চাষি।
ওই চাষির নাম মো. জোবায়েরুল ইসলাম। তিনি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার জগদীশপুর গ্রামের ইব্রাহীম মণ্ডলের ছেলে। জোবায়েরুল বলেন, ‘লোকসান দিতে দিতে এমন অবস্থা হয়েছে, মনে হয় বাগানের সব গাছ কেটে ফেলি।’
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, জোবায়েরুলের বাগানের লিচু রসালো ও সুমিষ্ট। কিন্তু তাঁর বাগানের ফলন কম।
জোবায়েরুল জানান, বাজারে যথেষ্ট চাহিদা থাকায় ২০০৮ সালে নিজের বসতভিটার পাশের তিন বিঘা জমিতে মাদ্রাজি, চায়না ৩ ও বোম্বাই জাতের ৮০টি লিচুগাছ লাগান তিনি। এ কাজে দুই ভাই মো. জহুরুল ইসলাম ও মো. জাকিরুল ইসলামও তাঁকে সহায়তা করেন। সময়ের সঙ্গে বেড়ে উঠতে থাকে লিচুর চারা। ২০১৫ সালে প্রথম ফল আসে বাগানে। প্রথম দুই বছর ফলন কম হয়। ২০১৭ সালে আশানুরূপ ফল আসে বাগানে। প্রায় লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেন জোবায়েরুল। কিন্তু পরের বছর থেকে নানা সমস্যার মুখোমুখী হন তিনি। কমতে থাকে ফলন। সর্বশেষ ২০২২ সালে মাত্র ৩০ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেন জোবায়েরুল।
লিচুর উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে কয়েকটি সমস্যার কথা বলেন জোবায়েরুল। তিনি বলেন, বর্ষার কারণে লিচুবাগানে প্রচুর পোকার উপদ্রব দেখা দেয়। আক্রান্ত লিচু ঝরে যায়। গাছে থেকে যাওয়া লিচুও কালো হয়ে যায়। খাওয়ার উপযোগী থাকে না। এলাকায় আর কোনো লিচুবাগান না থাকায় বাদুড় ও পাখির উপদ্রবও বেশি হয় তাঁর বাগানে।
এসব সমস্যা সমাধানে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন- জানতে চাইলে জোবায়েরুল বলেন, তিনি পরিচিত কয়েকজন লিচুচাষির কাছে পরামর্শ নিয়ে পোকা দমনের চেষ্টা করেছেন। তবে তাতে খুব বেশি উপকার পাননি। ২০১৮ সালে একবার কৃষি অফিসে যোগাযোগ করেন। তবে সেখান থেকে কোনো সাহায্য পাননি। এরপর আর যোগাযোগ করেননি।
জানতে চাইলে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. মজনু মিয়া বলেন, তিনিও কৃষি অফিসের কাছে নিজের খেতের জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন। তবে সাহায্য পাননি।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহমুদ রেজা বলেন, তিনি দ্রুত একজন বিশেষ প্রতিনিধিকে জোবায়েরের বাগান পরিদর্শনে পাঠাবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।