স্পোর্টস ডেস্ক: অভিজ্ঞ রোমেলু লুকাকুকে ছাড়াই যে এগিয়ে যাওয়া যায় তা আরো একবার প্রমান করেছে চেলসি। বেলজিয়ান এই তারকাকে পিছনে ফেলে মুল একাদশে সুযোগ পাওয়া কেই হাভার্টজের গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ১৬’র প্রথম লেগের ম্যাচে লিলিকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে ম্যাচের আট মিনিটেই হাভাটর্জের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল চেলসি। ৬৩ মিনিটে দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে ব্যবধান দ্বিগুন করার পাশাপাশি দলের জয় নিশ্চিত করেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুন মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ। আগামী ১৬ মার্চ দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ খেলতে ফ্রান্সে যাবে চেলসি। গতকাল জয়ী হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখা ব্লুজরা সেই ম্যাচের আগে অনেকটাই নির্ভার হয়ে থাকলো। এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিল চেলসি। ম্যাচের পওে লুকাকু বিহীন চেলসির রুপ আরো ভালভাবে দৃশ্যমান হলো। ক্লাব রেকর্ড ৯৭ মিলিয়ন পাউন্ডে ইন্টার মিলান থেকে গত বছর লন্ডনে আসার পর লুকাকু এ পর্যন্ত মাত্র ১০ গোল করেছেন। চেলসির আক্রমনভাগের সাথে এই পরিসংখ্যান মোটেই মানানসই নয়। শনিবার ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগে ১-০ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে লুকাকু মাত্র সাতবার বল স্পর্শ করেছে। ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর একজন স্ট্রাইকারের জন এই পরিসংখ্যান সর্বনি¤œ। এর আগে ডিসেম্বরে কোচ থমাস টাচেলের ম্যাচ কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলে সমালোচিত হয়েছিলেন লুকাকু। যে কারনে লিভারপুলের বিপক্ষে লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তাকে দলের বাইওে রাখা হয়। যদিও গতকাল ম্যাচের আগে টাচেল লুকাকুর পক্ষেই নিজের অবস্থানের কথা বলেছেন। বর্তমান ফর্ম নিয়ে লুকাকুর সাথে যাতে কোন ধরনের মজা করা না হয় সে ব্যপারেও টাচেল সতর্ক করে দিয়েছিলেন।
কিন্তু তারপরেও লুকাকুর অনুপস্থিতিতে চেলসি আরো বেশী নিজেদের স্বাভাবিক ছন্দে খেলছে বলে দৃশ্যমান। রোববার লিগ কাপের ফাইনালে লিভারপুলের বিপক্ষে এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকারকে টাচেল খেলান কিনা সেটাই এখন মূল প্রশ্ন। কাল ম্যাচ শেষে টাচেল বলেছেন, ‘কেইকে নিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। বেশ কিছু সপ্তাহ জুড়ে কেই কঠোর পরিশ্রম করছে যার প্রভাব ম্যাচে পড়েছে। মাঠে যে এরিয়াগুলোতে সে খেলছে তাতে দলের দারুন সহযোগিতা হচ্ছে। গত ম্যাচে লুকাকু খেলতে পারেনি। সে শুধুমাত্র মানসিক ভাবে নয়, শারিরী ভাবেও বেশ পরিশ্রান্ত। আমি তা বুঝতে পারছি। এই মুহূর্তে তাকে সকলের সহযোগিতা করতে হবে। আজ আমরা অন্য খেলোয়াড়দের ওপর আস্থা রেখেছি। রোববারের ম্যাচের আগে আমাদের হাতে চারদিন সময় আছে। দেখা যাক ঐ ম্যাচে কে খেলতে পারে।’
ম্যাচ শুরুর আগে ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা নিয়ে পুরো মাঠ প্রদক্ষিন করেছেন বেন চিলওয়েল, রেসি জেমস ও ক্যালুম হাডসন-ওডুই। আবু ধাবীতে মাসের শুরুতে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাসকে ২-১ গোলে পরাজিত করে প্রথমবারের মত ক্লাব বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে চেলসি।
কাল ম্যাচের শুরুতেই সিজার আজপিলিকয়েটার লো ক্রসে জার্মান ফরোয়ার্ড হাভার্টজ মাত্র ৬ গজ দুর থেকে বল বারের উপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু আট মিনিটে কর্ণার থেকে এই হাভার্টজই দলকে এগিয়ে দেন। লিলিও রক্ষনভাগের ব্যর্থতায় হাকিম জিয়েচের কর্ণার থেকে হাভার্টজের হেডে লিড পায় চেলসি। মৌসুমে এটি হাভার্টজের সপ্তম গোল। গোল হজম করে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা কিছুটা নড়েচড়ে বসে। তারই ধারাবাহিকতায় বেঞ্জামিন আন্দ্রের দুর পাল্লার শট কোনমতে রুখে দেন এডুয়ার্ড মেন্ডি। প্রথমার্ধে আর কোন গোল না হওয়া বেশ হতাশা নিয়েই বিরতিতে যান টাচেল। কিন্তু বিরতির সময় দলকে যথাযোগ্য বার্তা তিনি দিয়েছেন।
বিরতির পর অনেকটাই আক্রমনাত্মক মেজাজে খেলতে থাকে চেলসি। মার্কো আলোসনোর শট ক্লিয়ার করেন লিরি টার্কিশ ডিফেন্ডার জেকি সেলিক। জিয়েচ ও মাতেও কোভাচিচও বদলী বেঞ্চে পাঠাতে বাধ্য হন টাচেল। শেষ পর্যন্ত কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ব্যবধান দ্বিগুন হয় চেলসির। ৬৩ মিনিটে থিয়াগো সিলভার দুদান্ত পাস পেয়ে যান এন’গোলো কান্টে। লিলির এরিয়ার মধ্যে কান্টে সেই পাস বাড়িয়ে দেন পুলিসিচের দিকে। দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে মাত্র ১০ গজ দুর থেকে লিও জার্দিমকে পরাস্ত করেন পুলিসিচ। সূত্র: বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।