জুমবাংলা ডেস্ক : বাগেরহাটের শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের সুন্দরবন সংলগ্ন পশ্চিম রাজাপুর গ্রামে বাঘ আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ দেখা গেছে। দুই ধরণের পায়ের ছাপ দেখে এলাবাসী ধারণা করছে, বুধবার রাতে দুইটি বাঘ বন থেকে লোকালয়ে ঢুকেছে। তবে বনবিভাগ বলছে, ওই রাতে দুইটি নয় একটি বাঘ লোকালয়ে ঢুকে ভোররাতে আবার বনে ফিরে গেছে।
গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকতে মাইকিং করা হয়েছে। পুনরায় বাঘ যাতে না আসতে পারে সেজন্য বনবিভাগ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) ও কমিউনিটি প্যাট্রোলিং গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যদের গ্রামে পাহারা দিতে বলা হয়েছে। খবর পেয়ে দুপুর দুইটার দিকে শরণখোলা থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তালুকদার হুমায়ুন করিম সুমন জানান, সকাল ৮টার দিকে এমাদুল হাওলাদার (৩৮) নামের এক কৃষক প্রথমে তার বাড়ির সামনে বাঘের পাড়া দেখতে পান। তার মাধ্যমে জানতে পেরে আশপাশ এলাকায় খোঁজ নিয়ে বাঘের পায়ের অসংখ্য ছাপ দেখা যায়। টগরাবাড়ী গ্রামের শামছু হাওলদারের বাড়ি, আলকাজ হাওলাদারের বাড়ি ও রিয়ার হাওলাদারের বাড়ি বাঘের পাড়া রয়েছে। এ ছাড়া এলাকার ধান ক্ষেতেও বাঘের পাড়া দেখা গেছে।
ওই ইউপি সদস্য জানান, শরণখোলা উপজেলার আওতাধীন পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর ফরেস্ট স্টেশনের কলমতেজী টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন বন থেকে ভোল নদী সাঁতরে ওয়াপদার রাস্তা পার হয়ে বাঘ গ্রামে ঢোকে। এসব পায়ের ছাপ দুই ধরণের দেখে মনে হচ্ছে দুটি বাঘ এসেছিলো। গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঘ বিচরণ করেছে। গ্রামবাসীকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি শিশুরা যাতে বাইরে না যায় সেব্যাপারেও অভিভাবকদের বলা হয়েছে। বাঘ বনে ফিরে গেছে না গ্রামের ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে আছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি তারা। মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিজার করছে। তবে, গ্রামের কারো কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের এসিএফ মো. এনামুল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট বন অফিসের বনরক্ষী, ভিটিআরটি ও সিপিজি সদস্যদের মাধ্যমে বাঘের পায়ের ছাপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া বাঘের বিচরণ এলাকার পাড়া অনুসরণ করে দেখা যায় বাঘটি আবার বনে ফিরে গেছে। মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। গ্রামবাসীর সমন্বয়ে বনরক্ষী, ভিটিআরটি ও সিপিজি সদস্যরা গ্রাম পাহারায় রয়েছে।
শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইদুর রহমান বলেন, ওই গ্রামের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাঘের অসংখ্য পায়ের ছাপ চোখে পড়েছে। এলাবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বাঘ যাতে লোকালয়ে না ঢুকতে পারে সেজন্য বনবিভাগের ‘টাইগার কনজারভেশন প্রকল্পের’ মাধ্যমে ভারতের আদলে বনের পাশ দিয়ে প্লাষ্টিকের নেটের বেড়া দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।