অধিকাংশ ল্যাপটপে পুনরায় চার্জযোগ্য লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। তবে ব্যাটারির আয়ন বিভিন্ন কারণে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দীর্ঘসময় চার্জ ধরে রাখতে পারে না।
ফলে দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজ করতে সমস্যা হয়। তবে ল্যাপটপের ব্যাটারির যত্ন নিলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার কৌশল দেখে নেওয়া যাক।
সারা রাত ল্যাপটপের ব্যাটারি চার্জ না করা
প্রায় সময় বলা হয় সারা রাত ল্যাপটপের ব্যাটারি চার্জ দেয়া ভালো। তবে যদি ডিভাইসে স্বয়ংক্রিয় শাট অফ ফিচারযুক্ত চার্জার থাকে সেক্ষেত্রে এটি করা ভালো। যদি কোনো চার্জারে এ ফিচার না থাকে তাহলে সারা রাত চার্জ দেয়া হলে তা ব্যাটারি সেলের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এছাড়া অধিক তাপমাত্রার কারণে চার্জারে আগুন লেগে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
খোলা জায়গায় ল্যাপটপ চার্জ দেয়া
ল্যাপটপের ব্যাটারি চার্জ করার সময় তাপ উৎপন্ন হয়। যদি সে তাপ ঠিকমতো নির্গমন না হয় তাহলে ব্যাটারির ওপর চাপ তৈরি হবে। ব্যাটারির তাপ বেড়ে গেলে চার্জ বেশিক্ষণ থাকবেও না। এ কারণে ল্যাপটপ খোলা জায়গায় রেখে চার্জ দিতে হবে। এতে যে তাপ উৎপন্ন হবে তা দ্রুত বের হয়ে যাবে। অনেকেই আলাদা স্ট্যান্ড ব্যবহার করে। এগুলো তাপ নির্গমনে সহায়ক।
২০-৮০ শতাংশের মধ্যে চার্জ রাখা
একবার চার্জ দিয়ে ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকেই ল্যাপটপের ব্যাটারি শতভাগ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। আবার চার্জের পরিমাণ ১০ শতাংশের নিচে চলে এলেও ব্যবহার করেন। এ দুটি কাজই ব্যাটারি হেলথের জন্য ক্ষতিকর। অধিকাংশ প্রযুক্তিবিদ ও ল্যাপটপ উৎপাদনকারী চার্জিংয়ের ক্ষেত্রে ২০-৮০ শতাংশ অনুসরণ করার কথা জানিয়ে থাকে। তাই জরুরি প্রয়োজন না থাকলে ৮০ শতাংশ চার্জ হয়ে যাওয়ার পর চার্জারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া ভালো।
চার্জিং লেভেল ৮০ শতাংশে লক রাখা
বর্তমান সময়ের ল্যাপটপের সঙ্গে উন্নত চার্জিং প্রযুক্তি যুক্ত থাকে। ফলে নির্ধারিত লেভেল পর্যন্ত চার্জ হওয়ার পর চার্জিং পাওয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। উৎপাদনকারী ভেদে এটি স্মার্ট চার্জিং বা অপ্টিমাইজড চার্জিং নামে পরিচিত। ডিভাইসভেদে ফিচারের উপস্থিতি ও ব্যবহার নির্ভর করে। তবে ফিচার না থাকলে বায়োস সেটিংস থেকে এটি নির্ধারণ করা যায়।
অন্য চার্জার ব্যবহার না করা
ল্যাপটপের ব্যাটারি অনুযায়ী নির্ধারিত চার্জার ব্যবহার করা উচিত। কম শক্তিশালী চার্জার ব্যবহার করলে সেটি প্রয়োজন অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে না। ফলে ব্যাটারি চার্জ হতে সময় লাগবে এবং হেলথ কমে যাবে। এছাড়া কোম্পানির বাইরে থার্ড পার্টি চার্জার ব্যবহার করাও ক্ষতিকর।
চার্জিংয়ের সময় ল্যাপটপ ব্যবহার না করা
চার্জিংয়ে থাকা অবস্থায় ল্যাপটপ ব্যবহারকে ইতিবাচক বলা হয়। কেননা সে সময় সরাসরি বিদ্যুতে ডিভাইস চলে। তবে প্রায় সময় চার্জিংয়ে রেখে ল্যাপটপ ব্যবহার করা ব্যাটারির জন্য ক্ষতিকর। কেননা এ সময় অধিক তাপ উৎপন্ন হয়। আর এ তাপ ব্যাটারির সেল নষ্ট করতে সক্ষম। এছাড়া চার্জিংয়ের সময় ল্যাপটপ গরম হয়ে গেলে তখন ব্যবহার না করাই উত্তম।
ল্যাপটপের ব্যাটারির ওপর চাপ কমানো
চার্জ কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাটারি ফুল চার্জ করার একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা থাকে। যে কারণে যত বেশি চার্জ দেয়া হবে তত বেশি এ সাইকেল শেষ হয়ে আসবে। তাই প্রয়োজন ছাড়া ব্যাটারির ওপর বেশি চাপ না দেয়াই ভালো। এজন্য ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা কমিয়ে রাখা, ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ রাখা, ব্যাটারি সেভিং মোড চালু করাসহ কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।
সবসময় ল্যাপটপ চার্জে না রাখা
চার্জ হয়ে যাওয়ার পর সরাসরি বিদ্যুতের মাধ্যমে ল্যাপটপ ব্যবহার করা ভালো হলেও দীর্ঘমেয়াদে তা ক্ষতিকর। মাইক্রোসফট সবসময় ব্যাটারি লেভেল ১০০-এর নিচে রাখা ও স্মার্ট চার্জিং ফিচার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।