দিন ভাগ করা হয়েছে চব্বিশ ঘণ্টায়, ঘণ্টা ষাট মিনিটে আর মিনিট ষাট সেকেন্ডে। আজকাল তো বেশির ভাগ লোক দশমিকে শতকে গণনা করতে অভ্যস্ত, তাহলে দিনকে দশ ঘণ্টার দুটো অংশে, ঘণ্টাকে একশ মিনিটে আর মিনিটকে একশ সেকেন্ডে ভাগ করলেই হয়। তাহলে ঘণ্টা আজকের চেয়ে একটু দীর্ঘ আর মিনিট ও সেকেন্ড সংক্ষিপ্ত হবে বটে, কিন্তু মেট্রিক পদ্ধতিতে সময় গণনা করার সুবিধা আছে।
এ পদ্ধতি গ্রহণ করার প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে কিন্তু কখনো কাজে লাগানো হয়নি, কেননা তাহলে সারা পৃথিবীতে কোটি কোটি ঘড়ি বরবাদ করে নতুন ঘড়ি বানাতে হবে। কোটি কোটি বই আর পাঠ্যপুস্তক নতুন করে লিখে ছাপাতে হবে। তাই সময়-গণনার অসুবিধাজনক পদ্ধতিটা প্রাচীন ব্যাবিলন থেকে আমাদের সময় পর্যন্ত টিকে রয়েছে। ব্যাবিলনের লোকেরা ডজন আর ষাটে গুণত।
প্রাচীন কাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত লোকে নানা ধরনের ঘড়ি ব্যবহার করে আসছে। আগেকার দিনের একটা ঘড়ি ছিল সূর্যঘড়ি। মাটিতে একটা খুঁটি খাড়াভাবে পোঁতা হতো, সূর্যের সঙ্গে সঙ্গে খুটিকে ঘুরত তার ছায়া। সকালে আর সন্ধ্যায় দীর্ঘ ছায়া, মধ্যাহ্নে ছোট। এতে অবশ্য মিনিট ও সেকেন্ড অনুমান করার কোনো উপায় ছিল না, আর মেঘলা সূর্যহীন দিনে এ ঘড়ি ছিল অকেজো।
বালি ও জলঘড়িও প্রচলিত। একটি পাত্র থেকে অন্য পাত্রে কতটা বালি বা জল ঝরল তা থেকে সময়ের মাপ। বড়োলোকের বাড়িতে এ ঘড়ি দেখার জন্য বিশেষ দাস থাকত। সব জল বা বালি ওপরের পাত্র থেকে নিচের পাত্রে পড়লে, সে পাত্র বদলে হাঁক দিত ‘সকালের পর এতটা বেজেছে’। অনেকটা ঘণ্টাওয়ালা ঘড়ির মতো।
হাসপাতাল আর ক্লিনিকে বিভিন্ন চিকিৎসার সময় গণনার জন্য এখনো বালিঘড়ির চল আছে। অনেক পরে উদ্ভব হলো ভার ও পেন্ডুলামওয়ালা ঘড়ির। সবশেষে এল স্প্রিঙে চলা পকেটঘড়ি। বিজ্ঞানের অগ্রগতি যত প্রখর তত সঠিক হয়ে দাঁড়াচ্ছে সময় গণনা। সারা পৃথিবীতে সঠিক সময় সঙ্কেত জানায় রেডিও।
এত সঠিক সময় কার দরকার? সমুদ্রে তার জাহাজ ঠিক কোথায়, জানার জন্য সঠিক সময় দরকার জাহাজের ক্যাপ্টেনের, রাত্রে বা কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় চলার সময় এটার দরকার পড়ে বিমানের দিগনির্ণকের, ইঞ্জিনিয়র ও ক্রীড়াবিদ, শিক্ষক ও ছাত্র—সবার দরকার সঠিক সময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।