Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায়: সহজ টিপস
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায়: সহজ টিপস

    লাইফস্টাইল ডেস্কMd EliasAugust 19, 202511 Mins Read
    Advertisement

    চৈত্রের রৌদ্র তপ্ত ধুলোর কাঁটা হয়ে ফুটছে রাস্তায়। রিকশাওয়ালার কপাল বেয়ে নামছে ঘামের স্রোত, অফিসের এসি কক্ষেও ফ্যানের নিচে বসে থাকা কর্মীরা টের পাচ্ছেন গলায় শুষ্কত্বের চাপা জ্বালা। বৈশাখের দাবদাহে বাংলাদেশের রাস্তা-ঘাট, বাড়ি-অফিস, হাট-বাজার যেন এক বিশাল টোস্টারে পরিণত হয়েছে। এই প্রচণ্ড গরমে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া শুধু অস্বস্তিকরই নয়, বিপজ্জনকও বটে – ডিহাইড্রেশন, হিট এক্সহশন, এমনকি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করে। কিন্তু প্রকৃতির কোলে জন্ম নেওয়া এই বঙ্গভূমিই কি আমাদের দেবে না উষ্ণতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রাকৃতিক অস্ত্র? অবশ্যই দেবে! শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায় নিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষদের জ্ঞানভাণ্ডার এবং আধুনিক বিজ্ঞানের মেলবন্ধনেই লুকিয়ে আছে টেকসই শান্তির চাবিকাঠি। এটা শুধু পানি খাওয়ার চেয়েও অনেক বেশি গভীর, অনেক বেশি প্রাণবন্ত এক যাত্রা – আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপনের ছন্দ এবং চারপাশের সহজলভ্য উদ্ভিদরাজির সাথে পুনর্মিলনের ডাক।

    শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায়

    প্রাকৃতিক উপায়ে শরীর ঠান্ডা রাখার বিজ্ঞান ও সহজ কৌশল

    শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায় বলতে শুধু বাইরের তাপ থেকে রক্ষা পাওয়া নয়, বরং শরীরের অভ্যন্তরীণ শীতলীকরণ ব্যবস্থাকে (Thermoregulation) সক্রিয় ও কার্যকর রাখার কৌশলকেই বোঝায়। আমাদের দেহ একটি চমৎকার স্বয়ংক্রিয় তাপ নিয়ন্ত্রক। গরমে রক্তনালী প্রসারিত হয় (Vasodilation), ঘাম উৎপন্ন হয়। ঘাম যখন বাষ্পীভূত হয়, তখন তা তাপ শোষণ করে শরীরকে শীতল করে। কিন্তু অতিরিক্ত গরম, আর্দ্রতা (বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ!) এবং পর্যাপ্ত তরলের অভাব এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে। এখানেই প্রাকৃতিক পন্থাগুলো তাদের জাদুকরী ভূমিকা পালন করে:

    1. জলের রাজত্ব: হাইড্রেশনই হিরো: শরীর ঠান্ডা রাখার সবচেয়ে মৌলিক ও অপরিহার্য প্রাকৃতিক উপায় হলো পর্যাপ্ত পানি পান। কিন্তু শুধু পানি নয়, সঠিক পানি পানও গুরুত্বপূর্ণ।

      • পরিমাণের হিসাব: শুধু তৃষ্ণা মেটানো নয়। সাধারণ নিয়ম হলো দৈনিক ৮ গ্লাস, কিন্তু গরমে, ব্যায়াম করলে বা ঘাম বেশি হলে এর পরিমাণ বাড়াতে হবে। প্রস্রাবের রং হালকা হলুদ বা স্বচ্ছ রাখাই লক্ষ্য। ঢাকার মতো ব্যস্ত শহরে অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করতে ভুলে যান – ডেস্কে বা ব্যাগে পানির বোতল রাখুন, রিমাইন্ডার সেট করুন।
      • শুধু পানি নয়, প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট: প্রচুর ঘামের সাথে সোডিয়াম, পটাশিয়ামের মতো ইলেক্ট্রোলাইটও বেরিয়ে যায়। ডাবের পানি, লেবু-পানি (এক চিমটি লবণ সহ), ঘরে বানানো স্যালাইন (ওরস্যালাইন), তোকমার পানি, ছাতুর শরবত প্রাকৃতিকভাবে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য রক্ষা করে। গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে ডাবের পানির ইলেক্ট্রোলাইট কম্পোজিশন অনেক স্পোর্টস ড্রিঙ্কের কাছাকাছিই, যা হাইড্রেশনের জন্য অত্যন্ত কার্যকর (উৎস: USDA FoodData Central)।
      • প্রাকৃতিক ফ্লেভারের মিশেল: পানি পান করতে ভালো না লাগলে তাজা ফলের রস (চিনি ছাড়া বা অল্প), বেলের শরবত, আখের রস (পরিমিত), বা পানিতে পুদিনা পাতা, শসা স্লাইস, লেবুর টুকরো ভিজিয়ে রাখুন। এগুলো পানিকে আকর্ষণীয় করবে এবং অতিরিক্ত পুষ্টিও দেবে।
    2. খাদ্যাভ্যাস: আপনার প্রথম শীতলীকরণ কেন্দ্র: আপনি যা খান, তা সরাসরি শরীরের তাপমাত্রাকে প্রভাবিত করে। কিছু খাবার হজম করতে শরীরকে বেশি কাজ করতে হয়, ফলে তাপ উৎপন্ন হয় (Thermogenesis)। আবার কিছু খাবার শরীরকে শীতল করে।
      • জলীয় ও হালকা খাবারের জয়গান: গরমে ভারী, তৈলাক্ত, ভাজাপোড়া, অতিরিক্ত মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। এগুলো হজমে কষ্ট দেয়, শরীরের তাপ বাড়ায়। বেছে নিন:
        • ফল: তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, আনারস, পেঁপে, বেল, কমলা, মাল্টা, আঙুর, জলপাই (করোন্দা), লিচু (পরিমিত)। এগুলোতে পানির পরিমাণ ৮০-৯৫%! তরমুজের লাইকোপিন ত্বককে সূর্যের ক্ষতি থেকেও রক্ষা করতে সাহায্য করে।
        • শাকসবজি: লাউ, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, পাটশাক, ডাঁটাশাক, লেটুস, শসা, টমেটো, মিষ্টিকুমড়া। স্যালাড, স্যুপ (ঠান্ডা বা হালকা গরম), স্টিম বা গ্রিল করে খান।
        • দুধ ও দুগ্ধজাত: ছানা, দই (প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ, হজমে সাহায্য করে), লাচ্ছি, মাঠা (জলযোগ)। দইয়ের প্রোবায়োটিক পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, যা সামগ্রিক সুস্থতার জন্য জরুরি।
        • ডাল ও স্যুপ: মুগ ডালের ঝোল, মসুর ডাল – হালকা করে রান্না করুন।
      • প্রাকৃতিক শীতলকারক মসলা ও ভেষজ:
        • পুদিনা পাতা (Mint): এর মেন্থল প্রভাব সরাসরি তাপমাত্রার অনুভূতি কমায়। চাটনি, রায়তা, লেবুপানি, সালাদে ব্যবহার করুন। গ্রাম বাংলায় পুদিনা পাতা চিবিয়ে খাওয়ার প্রচলন আছে।
        • ধনিয়া পাতা: শীতল গুণ সম্পন্ন, হজমে সহায়ক। সালাদ, চাটনি, রান্নায় শেষে ছড়িয়ে দিন।
        • ফটকরি (Alum): অল্প একটু ফটকরি পানিতে গুলে সেই পানি হাত-পায়ে মালিশ করলে শীতল অনুভূতি আসে (বাহ্যিক ব্যবহার, খাওয়া নয়!)। এটি প্রাচীন শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায় গুলোর একটি।
        • ইসবগুলের ভুসি: পানি বা ঠান্ডা দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে পেট ঠান্ডা রাখে, হজমে সাহায্য করে এবং শরীরে শীতল প্রভাব দেয়।
      • খাওয়ার সময় ও পদ্ধতি: একবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খান। রাতের খাবার হালকা রাখুন এবং শোয়ার অন্তত ২-৩ ঘন্টা আগে খেয়ে নিন।

    গরমে ঘর ও জীবনযাপন ঠান্ডা রাখার শিল্প

    শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায় কেবল খাদ্য ও পানীয়তে সীমাবদ্ধ নয়। আপনার পরিবেশ এবং দৈনন্দিন অভ্যাসই পারে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখতে।

    1. সঠিক পোশাক: প্রাকৃতিক তন্তুর জয়: আপনার পরিধেয় কাপড় শরীর ঠান্ডা রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

      • প্রাকৃতিক তন্তু বেছে নিন: সুতি (কটন), লিনেন, খাদি – এগুলো শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে দেয়, ঘাম শুষে নেয় এবং দ্রুত শুকায়, ফলে বাষ্পীভবনের মাধ্যমে শরীর শীতল হয়। ঢিলেঢালা, হালকা রঙের (সাদা, হালকা নীল, পেস্টেল) পোশাক পরুন। গাঢ় রং তাপ শোষণ করে।
      • সিন্থেটিক এড়িয়ে চলুন: পলিয়েস্টার, নাইলনের মতো সিন্থেটিক কাপড় ঘাম আটকে রাখে, বাতাস চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং শরীরে অস্বস্তি ও তাপ বৃদ্ধি করে।
      • প্রচলিত পন্থা: মাথা ও ঘাড় ঢাকার জন্য সুতি গামছা বা রুমাল ব্যবহার করুন। পায়ে খোলা স্যান্ডেল বা চটি পরুন।
    2. বাসস্থান শীতল রাখার প্রাকৃতিক কৌশল: রোদের প্রখরতা ও গরম বাতাস যেন ঘরে প্রবেশ না করে, সেদিকে নজর দিতে হবে।

      • দিনে ঢাকুন, রাতে খুলুন: সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঘরের জানালা, বিশেষ করে দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকের জানালা পর্দা, শাটার বা বাঁশের চালি (বাংলার ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি) দিয়ে ভালোভাবে ঢেকে দিন। সন্ধ্যার পর বা রাতে যখন বাইরের তাপমাত্রা কমে, তখন জানালা খুলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন। ক্রস ভেন্টিলেশনের জন্য বিপরীত দিকের জানালা খুলুন।
      • গাছপালা: প্রাকৃতিক এয়ার কন্ডিশনার: বারান্দায়, জানালার বাইরে, ছাদে গাছ লাগান। বিশেষ করে স্নেক প্ল্যান্ট, মানি প্ল্যান্ট, আলোভেরা, ফার্ন জাতীয় গাছপালা ঘরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গাছ বাষ্পীভবনের মাধ্যমে আশেপাশের পরিবেশ শীতল করে (Evapotranspiration)। ছাদ বাগান (রুফ গার্ডেন) সরাসরি ছাদের তাপ শোষণ কমায়।
      • পর্দা ও শেডিং: ভারী, গাঢ় রঙের পর্দার বদলে হালকা রঙের, সুতি বা ব্লাইন্ড ব্যবহার করুন যা আলো আসতে দেয় কিন্তু তাপ আটকে রাখে না। বাইরে ভেরান্ডায় বাঁশের চালি বা গ্রিন শেড নেট টাঙানো খুব কার্যকর।
      • পাখা ব্যবহারে কৌশল: সিলিং ফ্যান ঠিকমতো কাজ করছে কিনা নিশ্চিত করুন। জানালা খোলা রেখে ফ্যান চালালে বাইরের গরম বাতাস ভেতরে আসবে। জানালা বন্ধ করে ফ্যান চালালে বা রাতে ঠান্ডা বাতাস ঢুকলে ফ্যান চালালে তা দ্রুত ঘর ঠান্ডা করতে সাহায্য করবে। ফ্যানের সামনে বরফের বাটি রাখলে ঠান্ডা বাতাস পাওয়া যাবে (শক্তি খরচ সচেতনভাবে)।
      • ইলেকট্রনিক যন্ত্রের তাপ কমিয়ে রাখুন: কম্পিউটার, টিভি, ফ্রিজের পেছন দিক থেকে প্রচুর তাপ নির্গত হয়। এগুলো ব্যবহার না করলে প্লাগ খুলে রাখুন বা পাওয়ার সেভিং মোডে রাখুন। অপ্রয়োজনীয় লাইট বন্ধ রাখুন (LED বাল্ব ব্যবহার করুন, যা কম তাপ উৎপন্ন করে)।
    3. জীবনযাপনের ছন্দ: দৈনন্দিন রুটিনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনলে গরম সহজে মোকাবেলা করা যায়।
      • রোদের সময় এড়িয়ে চলা: সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাইরের তীব্র রোদ ও গরম এড়িয়ে চলুন। জরুরি কাজ থাকলে ছাতা, টুপি ব্যবহার করুন, পানি সঙ্গে রাখুন। খোলা রাস্তায় হাঁটার চেয়ে ছায়াযুক্ত রাস্তা বেছে নিন।
      • হালকা ব্যায়াম: ভোরবেলা বা সন্ধ্যায় হালকা ব্যায়াম, যোগব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করুন। দুপুরের প্রচণ্ড গরমে কঠোর ব্যায়াম শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। সাঁতার একটি উৎকৃষ্ট ব্যায়াম যা শরীর ঠান্ডাও রাখে।
      • ঠান্ডা পানির ব্যবহার:
        • পা ডুবানো: একটি বেসিন বা বালতিতে ঠান্ডা পানিতে পা ডুবিয়ে রাখুন। পা ঠান্ডা হলে সারা শরীরে শীতল অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে।
        • কব্জি ধোয়া: ঠান্ডা পানিতে কব্জি ধুয়ে নিন। এখানে রক্তনালী ত্বকের কাছাকাছি থাকে।
        • গোসল: দিনে একাধিকবার হালকা গোসল (ঠান্ডা বা স্বাভাবিক পানি) করুন, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে। মাথায় পানি ঢালুন।
        • ভেজা কাপড়: একটি পাতলা সুতি কাপড় বা গামছা ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে ভালোভাবে চিপে নিন। তা মাথায়, ঘাড়ে বা কাঁধে জড়িয়ে রাখুন। বাষ্পীভবনের মাধ্যমে শীতলতা দেবে। এটি গ্রামীণ জনপদে বহুল প্রচলিত একটি শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায়।
      • মানসিক শান্তি: মানসিক চাপ ও উদ্বেগ শরীরে উত্তাপের অনুভূতি বাড়ায়। ধ্যান, প্রাণায়াম, গান শোনা, বই পড়া বা যে কোন শখের কাজে মন দিন। পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঠান্ডা ঘরে, হালকা সুতি কাপড় পরে ঘুমান।

    শেকড়ের দিকে ফিরে দেখা: আয়ুর্বেদ ও লোকজ্ঞানে শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাচীন প্রাকৃতিক উপায়

    বাংলাদেশের সমৃদ্ধ লোকজ্ঞান এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় গরমের কষ্ট দূর করার অসংখ্য প্রাকৃতিক উপায় সন্নিবেশিত আছে, যেগুলো বিজ্ঞানসম্মতও বটে।

    • তুলসী পাতার মাহাত্ম্য: তুলসী পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যাডাপ্টোজেনিক গুণ শরীরের ভিতর থেকে ঠান্ডা রাখে, স্ট্রেস কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কয়েকটি কচি তুলসী পাতা চিবিয়ে খান বা পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো পান করুন (তুলসী চা)।
    • এলাচের সুঘ্রাণ: ছোট এলাচ (Cardamom) শীতল গুণের জন্য পরিচিত। এটি হজমে সাহায্য করে এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। সরবতে, দুধে বা চায়ে একটু এলাচ গুঁড়া মিশিয়ে নিন।
    • মেথির শীতলতা: এক চা চামচ মেথি রাতভর পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানি ছেঁকে পান করুন। মেথি শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপ কমাতে সাহায্য করে বলে বিশ্বাস করা হয়।
    • ঘরোয়া শরবতের রাজা তেঁতুল: তেঁতুলে প্রচুর ভিটামিন সি, ইলেক্ট্রোলাইট এবং টারটারিক অ্যাসিড থাকে যা শরীর ঠান্ডা রাখে। তেঁতুল ভিজিয়ে পানি ছেঁকে, মিছরি বা গুড় মিশিয়ে শরবত বানান। বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জে এর প্রচলন ব্যাপক।
    • আখের রসের প্রাকৃতিক মিষ্টি: বিশুদ্ধ আখের রস প্রাকৃতিক শর্করা, ইলেক্ট্রোলাইট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা তাৎক্ষণিক শক্তি ও শীতলতা দান করে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
    • নিমের শীতল পরশ: নিমের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও শীতল গুণের জন্য এটি বহুল পরিচিত। নিম পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে গোসল করুন বা নিমের ডাল দাঁত মাজলে মাড়ি ঠান্ডা থাকে। নিম পাতার রস (অল্প পরিমাণে) খাওয়া যায়।
    • সরিষার তেলের প্রলেপ: হাত-পায়ে তেল মালিশ করলে ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়ে এবং বাষ্পীভবনের মাধ্যমে শীতলতা আসে।

    গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা: গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে ক্যাফেইন (চা, কফি, কোলা ড্রিঙ্ক) এবং অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করুন। এগুলো প্রস্রাবের মাধ্যমে তরল বের করে দিয়ে ডিহাইড্রেশন বাড়ায়। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয়ও শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি করতে পারে।

    সতর্কীকরণ: এই নিবন্ধে উল্লিখিত সমস্ত শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায় সাধারণ সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য পরামর্শমূলক। যদি আপনার কোনও নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যা (যেমন ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, হৃদরোগ) থাকে, বা গরমে অসুস্থ বোধ করেন (মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, জ্বর), অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই টিপসগুলো কোনো চিকিৎসা বা ওষুধের বিকল্প নয়।

    জেনে রাখুন

    1. গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য সবচেয়ে ভালো ফল কোনগুলো?

      তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, বেল, আনারস, পেঁপে, কমলা, মাল্টা, জলপাই (করোন্দা) এবং আঙুর পানির পরিমাণে ভরপুর এবং প্রাকৃতিক শীতল গুণ সম্পন্ন। এগুলো খেলে শরীরে পানির চাহিদা মেটে, ভিটামিন-মিনারেল পাওয়া যায় এবং শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপ কমে। দিনে কয়েকবার অল্প অল্প করে ফল খাওয়া উপকারী।

    2. শরীর ঠান্ডা রাখতে কি ধরনের পোশাক পরা উচিত?

      গরমে পরার জন্য সুতি (কটন), লিনেন বা খাদির মতো প্রাকৃতিক তন্তুর তৈরি হালকা রঙের (সাদা, হালকা নীল, পেস্টেল) এবং ঢিলেঢালা পোশাক সবচেয়ে ভালো। এগুলো বাতাস চলাচল করতে দেয়, ঘাম শুষে নেয় ও দ্রুত শুকায়। গাঢ় রং ও সিন্থেটিক কাপড় (পলিয়েস্টার, নাইলন) তাপ ধরে রাখে ও অস্বস্তি বাড়ায়।

    3. শরীর ঠান্ডা রাখার ঘরোয়া পানীয় বানানোর সহজ উপায় কি?

      বেশ কয়েকটি সহজ পানীয় আছে: (১) এক গ্লাস পানিতে ১-২ টেবিল চামচ তেঁতুলের গুঁড়া/আচার ভিজিয়ে, ছেঁকে, মিছরি বা অল্প গুড় মিশিয়ে শরবত। (২) এক গ্লাস পানিতে এক টেবিল চামচ ছাতু, এক চিমটি লবণ, অল্প চিনি বা গুড় ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। (৩) এক গ্লাস ঠান্ডা পানিতে ১-২ টেবিল চামচ দই, অল্প লবণ, ভাজা জিরা গুঁড়া মিশিয়ে মাঠা। (৪) এক গ্লাস পানিতে ১-২ টেবিল চামচ তোকমা ভিজিয়ে, মিছরি বা চিনি মিশিয়ে শরবত। সবগুলোই প্রাকৃতিক শীতলতা দেবে।

    4. গরমে ঘুম ভালো করার প্রাকৃতিক উপায় কি?

      গরমে ঘুমানোর জন্য: ঘুমানোর আগে ঠান্ডা বা স্বাভাবিক পানি দিয়ে গোসল করুন। সুতি কাপড় পরুন। বিছানার চাদর ঠান্ডা রাখতে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে নিতে পারেন। ঘর ঠান্ডা রাখার কৌশল (পর্দা টানা, ফ্যান চালানো, রাতে জানালা খোলা) মেনে চলুন। হালকা খাবার খান রাতে। পায়ে ও ঘাড়ে ঠান্ডা পানির স্পর্শ দিন। পুদিনা বা ক্যামোমাইল চা পান করতে পারেন (ক্যাফেইনমুক্ত)।

    5. শরীর ঠান্ডা রাখতে মসলা কিভাবে সাহায্য করে?

      পুদিনা পাতায় থাকা মেন্থল মুখে ঠান্ডা অনুভূতি দেয় এবং শরীরকে শীতল করে। ধনিয়া পাতা শীতল গুণ সম্পন্ন এবং হজমে সাহায্য করে। এলাচও শীতল প্রভাবের জন্য আয়ুর্বেদে সুপরিচিত। এগুলো সরাসরি খাবারে যোগ করা যায় বা চায়ের সাথে মিশিয়ে পান করা যায়। এগুলো শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

    6. বাচ্চাদের শরীর প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা রাখার বিশেষ টিপস কি?

      বাচ্চাদের জন্য: বারবার বুকের দুধ বা পানি/ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিঙ্ক খাওয়ান। হালকা সুতি পোশাক পরান। সরাসরি রোদ থেকে দূরে রাখুন। ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করান বা স্পঞ্জ করান। খেলাধুলার সময় বিরতি নিন এবং ছায়ায় রাখুন। তরমুজ, শসার মতো জলীয় ফল খাওয়ান। তাদের ত্বক ও মাথা ঠান্ডা রাখতে ভেজা কাপড় ব্যবহার করুন। ঘরের তাপমাত্রা মনিটর করুন।

    প্রকৃতির অফুরান ভাণ্ডারই আমাদের দিয়েছে গরমের কষ্ট দূর করার সহজ সমাধান। শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায় – সঠিক হাইড্রেশন, শীতল খাদ্যাভ্যাস, প্রাকৃতিক তন্তুর পোশাক, সচেতন জীবনযাপন আর লোকজ্ঞানের সহজলভ্য ভেষজ উপাদান – এই সমন্বিত পন্থাই পারে গরমের দিনগুলোকে করে তুলতে আরামদায়ক ও সুস্থ। এটি শুধু অস্বস্তি দূর করাই নয়, শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে। মনে রাখবেন, এসি বা কোল্ড ড্রিঙ্কসের কৃত্রিম ঠান্ডাই একমাত্র পথ নয়; প্রকৃতির কাছেই আছে টেকসই শান্তির চাবিকাঠি। আজই বেছে নিন আপনার পছন্দের একটি প্রাকৃতিক উপায় – হতে পারে এক গ্লাস তেঁতুলের শরবত, একমুঠো তরমুজ, বা সুতির গামছায় ঠান্ডা পানির স্পর্শ – এবং অনুভব করুন প্রকৃতির দেওয়া শান্তির পরশ। গরমকে জয় করুন প্রাকৃতিকভাবে, সুস্থ থাকুন দীর্ঘদিন।


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    উপায়, টিপস ঠান্ডা প্রাকৃতিক যত্ন রাখা রাখার লাইফস্টাইল শরীর শরীর ঠান্ডা রাখার প্রাকৃতিক উপায় সহজ
    Related Posts
    nid

    যাদের এখনো মেসেজ আসেনি, এখনি বের করুন আপনার NID কার্ড!

    August 19, 2025
    love

    কম বয়সী ছেলেদের প্রতি কেন নারীদের বেশী আকর্ষণ

    August 19, 2025
    AC

    ১ টন এসি দিনে ৮ ঘণ্টা চালালে মাসে বিদ্যুৎ খরচ কত পড়ে

    August 19, 2025
    সর্বশেষ খবর
    nid

    যাদের এখনো মেসেজ আসেনি, এখনি বের করুন আপনার NID কার্ড!

    পেইজ ডেভেলপমেন্ট সেন্টার ২ লাখ সদস্যের লেনদেন সহজ হলো বিকাশ-এ

    NYT Strands hint

    NYT Strands Hint and Answers for August 19, 2025: Puzzle #534 Unpacked and Solved

    aamir

    আমির খানের অবৈধ সন্তান রয়েছে, অভিযোগ ভাই ফয়সালের

    love

    কম বয়সী ছেলেদের প্রতি কেন নারীদের বেশী আকর্ষণ

    winning powerball numbers

    Powerball Results for August 19, 2025: Winning Numbers Drawn for $605 Million Jackpot

    ওয়েব সিরিজ

    নতুন রোমান্টিক ড্রামা ওয়েব সিরিজ, যা আপনার মন ছুঁয়ে যাবে

    BFIU

    বিএফআইইউ প্রধানের বিষয়ে তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংক

    AC

    ১ টন এসি দিনে ৮ ঘণ্টা চালালে মাসে বিদ্যুৎ খরচ কত পড়ে

    barbara palvin

    Barbara Palvin Opens Up About Endometriosis Surgery in Brave Instagram Reveal

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.