দেশে দেশে কী করেন চিফ হিট অফিসারেরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। দু-চার দিন বাদে গত মাস অর্থাৎ গোটা এপ্রিলের প্রায় প্রতিটি দিন দাবদাহে কষ্ট করেছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ। ১৬ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা গত ৫৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। মূলত তাপজনিত আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নয়নে কাজ করে থাকেন শহরের চিফ হিট অফিসারেরা।
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি ও লস অ্যাঞ্জেলেস, চিলির সান্টিয়াগো, সিয়েরা লিওনের সান্টিয়াগো, গ্রিসের এথেন্স ও অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে চিফ হিট অফিসার রয়েছে। সবশেষ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) দায়িত্ব পেয়েছেন বুশরা আফরিন, যিনি এশিয়ার কোনো শহরের প্রথম চিফ হিট অফিসার।
যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার পেন নিউজে প্রকাশিত লেখক ক্যাথেরিন আঙ্গার বেইলির এক লেখায় চিফ হিট অফিসারদের কাজ নিয়ে কথা বলা হয়। সেখানে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা গড়ে প্রায় এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।
পেন নিউজের ওই লেখায় দেখা যায়, জাতিসংঘের বৈশ্বিক চিফ হিট অফিসার এলেনি মিরিভিলি বলেছেন, ‘শহরে বসবাসরত গোষ্ঠীগুলো কিভাবে তাপ নিয়ন্ত্রণের আরও টেকসই পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেই। এসির ব্যবহার কমিয়ে আনা, পরিবেশবান্ধব নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবহার সম্পর্কে জানাতে পারি। স্থাপত্য নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সঙ্গেও আমরা কাজ করতে পারি। আগের দিনের স্থাপত্যবিদ্যার ব্যবহারে ফিরে যেতে পারি, যার ফলে ভবনের নির্মাণের কারণেই তাপমাত্রা কম থাকে।’
এলেনি মিরিভিলি বলেন, ‘আসলে তাপমাত্রা নিয়ে যুতসই যোগাযোগ বা আলোচনা করা কঠিন। ভূমিকম্প বা ঘূর্ণিঝড় যেমন দেখতে পাই, তাপমাত্রা তো দেখা যায় না।’
মেক্সিকোর মন্টেরে শহরের চিফ হিট অফিসার সুরেলা সেগু শহরটির তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে সরাসরি মেয়রের সঙ্গে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সংস্থা ও কোম্পানির মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি আমি। গাছ লাগানোর স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি উপকারিতা নিয়ে কথা বলছি।’
সুরেলা সেগু বলেন, ‘তাপমাত্রার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সমাজের সব শ্রেণির লোকজনকে একভাবে প্রভাবিত করে না। মেক্সিকোর প্রায় ৭০ শতাংশ ঘরবাড়ি নিজেদের নির্মিত। যেসব ভবন এলাকায় গাছ-গাছালি নেই, সেগুলোতে বসবাসকারী মানুষজন বিপদে রয়েছে। ওইসব এলাকার লোকজন বেশি কষ্টে করে থাকে।’
চিলির সান্টিয়াগো শহরের চিফ হিট অফিসার ক্রিস্টিনা হুইদরবো টর্নভাল বলেছেন, ‘আমি একজন স্থাপত্যবিদ ও নগর পরিকল্পনাবিদ হিসেবে গত ছয় বছর ধরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করছি। আমি অবশ্য ব্যাপকমাত্রার তাপ কমানোর চেয়ে মানিয়ে নেওয়া নিয়ে বেশি কাজ করে থাকি। শহরের পার্ক ও বনভূমির পরিমাণ আরও বাড়াতে চাই।
ক্রিস্টিনা হুইদরবো টর্নভাল বলেন, ‘আমরা ভিন্ন সমাধানের কথাও ভাবছি। অনেক একাডেমিক ও অধ্যাপকদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা নতুন নতুন আইডিয়া দিচ্ছেন এবং গবেষণা করছেন, আমরা তাদের থেকেও উপকৃত হচ্ছি। ব্যাপক তাপের বিষয়টা জটিল, কিন্তু আমি আশাবাদী। বছর খানেক আগে এ নিয়ে আলোচনাও ছিল না। এখন বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। গত মার্চে আমি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কাজে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ পেয়েছি। আমরা বর্তমানে ২০ লাখ গাছ লাগানোর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।