স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে নিহত বিশিষ্ট রাজনীতিক, মুক্তিযুদ্ধের নিবেদিত সংগঠক, শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে আজ। শহীদ ময়েজউদ্দিনকে নিয়ে অজানা কিছু কথা ফেসবুকে লিখেছেন নৌকার স্বাধীনচেতা সমর্থক, আকু চৌধুরী।
ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো:
দু’টি ঋণ কখনও পরিশোধ করা যায় না । একটি মায়ের দুধের ঋণ, আর শহীদদের রক্তের ঋণ । দুঃখের বিষয়! শহীদ ময়েজউদ্দিন হত্যাকারী খুনিদের বিচার হলেও বিচার হয়নি, খুনের সহযোগীদের । কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ বলেছেন, যদি দণ্ড সহিতে হয় তবু মিথ্যাবাক্য নয় । জয় জয় সত্যের জয় ।
আমরা শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন এর মৃত্যুবার্ষিকী ঘটা করে পালন করলেও অনুসরণ করছি না, বা হৃদয়ে ধারণ ও লালন করছি না, তাঁর ন্যায়-নিষ্ঠা, সততা, ত্যাগ ও আদর্শ ।
সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয়! শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন হত্যার অনেক সহযোগী ও খুনিদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ-স্বজন এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা রয়েছেন, শহীদ ময়েজউদ্দিনের প্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ও ছত্রছায়ায় ।
আর সংগঠন থেকে বাদ পড়েছেন, জীবন বাজি রেখে যারা এ হত্যা মামলা পরিচালনা করেছিলেন এবং সাক্ষী দিয়েছিলেন ।
সহযোগিরা শুধু খুনিদের সহযোগিতাই করেন’নি, মামলার রায় অমান্য করে আদালতে বোমা বিস্ফোরণও ঘটিয়েছিলেন ।
১৯৮৫ সালের ৫ আগষ্ট, শহীদ ময়েজউদ্দিন হত্যা মামলার বিচারে, মাননীয় আদালত খুনিদের বিরুদ্ধে যখন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড শাস্তি ঘোষণা করেন, তখন খুনিদের সহযোগিরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে আদালত প্রাঙ্গণে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান ।
খুবই মর্মান্তিক দুংখের বিষয! আদালত প্রাঙ্গণে খুনিদের, সহযোগীদের বোমার আঘাতে শহীদ ময়েজউদ্দিন সাহেবের এক শুভাকাঙ্ক্ষী পিরোজপুর রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের সেক্রেটারি ধীরেন বাবু তার দুটি পা হারান এবং তিনি সারাজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেন, তিনির সাথে আরো অনেকে আহত হয়েছিলেন । ধীরেন বাবু কয়েক বছর পূর্বে মারা গেছেন ।
আজ ৪৮ বছর পর, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যনায়ক ও সহযোগী এবং প্রধান বেনিফিশিয়ারিদের বিরুদ্ধে যেমন তদন্ত ও বিচারের গণদাবি উঠেছে । তেমন, তদন্তের মাধ্যমে শহীদ ময়েজউদ্দিনের খুনের সহযোগিদেরকে চিহ্নিত করে, বিচারের মুখোমুখি ও তাদের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ করা এখন সময়ের দাবি ।
ফকির লালন বলেছেন, সময় গেলে সাধন হবে না, আমি মনে করি এখনই উপযুক্ত সময় ।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন সাহেব, সামরিক শাসক হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে ১৯৮৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে, ১৫ দলীয় জোটের, গণতন্ত্র উদ্ধারের হরতাল কর্মসূচি আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে নিজের জন্মভূমি কালিগঞ্জের রাজপথে তৎকালীন সরকারের কিছু গৃহপালিত সন্ত্রাসীর ছুরিকাঘাতে শহীদ হন ।
শহীদ মোহাম্মদ ময়েজউদ্দিন এর অসংখ্য খ্যাতির মাঝে, শ্রেষ্ঠ কীর্তি হলো তার মৃত্যু । কারণ, তিনি তার জীবন দিয়ে গেছেন, মানুষের অধিকার ‘গণতন্ত্র‘ পূর্ণদ্ধার করতে গিয়ে । শহীদ ময়েজউদ্দিন গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের হৃদয়ে চিরদিন প্রস্ফুটিত ফুলের মত জ্যোর্তিময় উজ্জ্বল দীপ্ত হয়ে থাকবেন ।
শহীদ ময়েজউদ্দিন-সহ মানুষের অধিকারের জন্যে যারা জীবন দিয়ে গেছেন, সে সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা । জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।