জুমবাংলা ডেস্ক : স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের সুযোগে কামরুন্নাহার সেতুর সঙ্গে শাওনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর এলাকায় শাওন মিয়া (৪০)। গত ৯ সেপ্টেম্বর কামরুন্নাহার সেতু প্রেমিক শাওনকে নিয়ে তার বোনের শ্বশুরবাড়ি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী ইউনিয়নের করচাবাঁধা গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে তাদের বিয়ে হয়। এরপর সেখান থেকে কামরুন্নাহার সেতু তার বাবার বাড়ি ফিরে আসেন।
গত ১৭ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জজকোর্ট থেকে কামরুন্নাহার সেতুকে একটি মাইক্রোবাসে করে নবীনগর কহিনুর গেটের তুনু হাজীর ৬ তলা বাড়ির ৪ তলার একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে স্ত্রী হিসেবে রাখেন। তবে তিন দিনের মাথায় মানিকগঞ্জ ডাকঘরে থাকা কয়েকটি হিসাব থেকে কামরুন্নাহার সেতুকে টাকা উঠিয়ে দিতে বলেন শাওন। অস্ত্রের ভয়ে তাকে ৫ লাখ, ১০ লাখ এবং ১ লাখ করে ৩ বার টাকা উঠিয়ে দিতে বাধ্য হন তিনি। এর দুইদিন পর শাওন তার কাছে আরও টাকা চান। কিন্তু টাকা নেই জানালে শাওন তার নামে জমি লিখে দিতে বলেন। জমি লিখে না দেয়ায় তার ওপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই বলছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা জজকোর্টের আইনজীবী কামরুন্নাহার সেতু। তার বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ঢাকুলী এলাকায়।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘ও (শাওন) প্রতিদিন নোড়া (পাটা-পুতা) দিয়ে আমাকে মারত। নোড়ার আঘাতে আমার সারা শরীর থেঁতলে গেছে। এছাড়া নগ্ন ভিডিও বানাত। এসব যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সেই সুযোগও পাইনি। আমি সেখান থেকে জীবিত ফিরে আসতে পারব সে আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মূলত টাকা হাতিয়ে নেয়াই ওর কাজ। ও যে কত নারীর জীবন নষ্ট করেছে, কতো মানুষকে পথে বসিয়েছে- তা ও নিজেই বলতে পারবে না। ও প্রথমে নারীদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। নানা প্রলোভনে ফেলে তাদের অন্তরঙ্গ মেলামেশার ভিডিও ধারণ করে। তারপর তাকে জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়। না দিলেই শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন।’
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আজিমনগর এলাকায় শাওন মিয়ার (৪০) বাড়ি। তবে সে একেক সময় একেক নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে।
তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে নেয়া হয়। তারপর কয়েকবার তাকে বিবস্ত্র করে নগ্ন ভিডিও বানানো হয়। সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ি দেয়ার হুমকি দেন শাওন। সারাদিন কামরুন্নাহার সেতুকে ওই কক্ষে আটকে রেখে মারধর করতে থাকেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি, তদন্ত) মো. হানিফ সরকার জানান, ওই নারী আইনজীবীকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জে নিয়ে আসা হয়েছে। এর আগে তার বাবা অপহরণ মামলা করেছিলেন। সে মামলায় তাকে মঙ্গলবার দুপুরে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এদিকে অভিযুক্ত মো. শাওন মিয়া পলাতক রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।