নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর শিবপুরে শত্রুতার জের ধরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাতুল চন্দ্র বর্মন নামে একজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম এর ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনার ৬ দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। আহত রাতুলের মা নিভা রানী বর্মনের শিবপুর মডেল থানায় গতকাল শুক্রবার ( ১২ মে) এজাহারের প্রেক্ষিতে মামলা হয়। মামলা নং-১৩ ।
তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। হামলায় আহত শিবপুর পৌরসভার আব্দুলখানা গ্রামের মৃত সন্তোষ চন্দ্র বর্মনের ছোট ছেলে ফটোগ্রাফার রাতুল চন্দ্র বর্মন (২৫)। সে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র।
হামলাকারী হিসেবে শিবপুর পশ্চিমপাড়া বড়ঝালবাড়ি গ্রামের মৃত সুধীর চন্দ্র বর্মনের ছেলে কিশোর গ্যাং দীপ্ত চন্দ্র বর্মন (২৪), সজিব চন্দ্র বর্মন (২৬) ও তার সহযোগী অজ্ঞাত ৫/৬ জনকে দায়ী করা হচ্ছে। ঘটনার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৩০ এপ্রিল ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসে রাতুল। ৭ মে বাড়ীর পাশে আব্দুল খানা সর্বজনীন দূর্গামন্দিরে ধর্মীয় অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল রাতুল। অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় দেড়টার দিকে বিবাদীগণ পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাতুলকে অনুষ্ঠান থেকে ডেকে নিয়ে আব্দুলখানা বিলপাড় (পুকুরপাড়) নামক নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত সন্ত্রাসী দীপ্ত চন্দ্র বর্মন ও সহযোগীরা রাতুলকে হত্যার উদ্যোশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি মাথা ও সারা শরীরে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সন্ত্রাসীরা। এসময় রাতুলের সঙ্গে থাকা একটি আইফোনসহ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। রাতুলকে মাঠে পড়ে থাকতে দেখে আশেপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। শিবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে আবার দীপ্ত চন্দ্র বর্মন ও তার সাথে অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন ধারালো দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র সহ হাসপাতালে গিয়ে রাতুলের মৃত্যু নিশ্চিত করতে হামলা করতে যায় এবং রাতুলের আত্মীয় স্বজনদের মারতে উদ্যত হয় তাদেরকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। হাসপাতালে থাকা লোকজন হামলার ঘটনা দেখে ফিরাইলে বিবাদী সন্ত্রাসীগণ হাসপাতাল হইতে দ্রুত চলিয়া যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতুলের অবস্থার অবনতি দেখে ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়। বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে সে।
আবদুল খানা গ্রামের লিটন বলেন, কিশোর গ্যাং দীপ্ত চন্দ্র বর্মন আমাদের হিন্দু সম্পাদয়ের জন্য আতংক ঘটনার দিন আবদুল খানা সর্বজনীন দূর্গামন্দির একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে রাতুলকে ডেকে নিয়ে তার উপর হামলা করে, তাহলেতো বোঝা যায়, এটা পরিকল্পিত হামলা করেছে।এলাকার শান্তির লক্ষে ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে একযোগে দৃষ্টান্ত মূলক স্বাস্তি দেওয়া হোক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিন্দু সম্পাদয়ের একাধিক ব্যাক্তি জানান , দীপ্ত চন্দ্র বর্মনের বড় ভাই সজিব চন্দ্র বর্মন আপন ভাতিজির সাথে অসামাজিক সম্পর্ক স্থাপন করে। পরে ওই স্কুল পড়ুয়া মেয়ে আত্মহত্যা করে। এলাকার শান্তির লক্ষ্যে মামলার আসামি ও তাদের সহযোগীদের কে গ্রেফতারসহ বিচারের দাবি করেন।
শিবপুর মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই আফজাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় আহত রাতুলের মা বাদী হয়ে এজাহারের দিয়েছে। এজাহারের প্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। গ্রেফতারের বিষয়ে তিনি বলেন, পলাতক আসামিদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।