চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে পাশবিক নির্যাতনের পর কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে শিশু গৃহকর্মী রুনা হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার ও মামলার পুনঃ তদন্তের দাবি করেছে ছয়টি মানবাধিকার সংগঠন।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন কমিশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ আইন ও শালিস কেন্দ্র, লিগ্যাল এইড কমিটি, কাশফুল সোসাল ডেভলাপমেন্ট সোসাইটি এবং নারী ও শিশু কল্যাণ ফাউন্ডেশন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চট্টগ্রামে ১৩ নং আইস ফ্যাক্টরির টি এম টাওয়ার ৪র্থ তলায় আমিন আহমেদ রোকনের ফ্ল্যাটে গৃহকর্মী রুনার (১৪) ওপর নানাভাবে বিভিন্ন সময় পাশবিক নির্যাতন চালাতো গৃহকর্তা রোকন।
ভিক্টিম রুনার মা ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর মেয়েকে দেখতে আসলে মেয়ে রুনা তার ওপর চলা গৃহকর্তা রোকনের অন্যায় আচরণের কথা জানালে আসামি রোকন ক্ষিপ্ত হয়ে রুনাকে লাথি মারে, মায়ের সামনে মেয়েকে নির্যাতনের পর রান্না ঘরে নিয়ে গিয়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে রুনার শরীরের অধিকাংশই পুড়ে যায়। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে দুই দিন চিকিৎসার পর সে মারা যায়।
রুনার মা রোকেয়া বেগম সদরঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং ২৬(১১)২০১৪। একমাত্র আসামী চন্দনাইশের আবদুল জব্বারের ছেলে আমিন উদ্দিন আহমেদ রোকন। বর্তমান চন্দনাইশের জোয়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। নিজেকে স্থানীয় এমপি’র ভাগিনা পরিচয় দিয়ে সে অবৈধ ইটভাটা, জমি দখল, পাহাড় কাঠার মতো অপরাধ অবাধে করে যাচ্ছে।
তৎকালীন জাতীয় পত্রপত্রিকায় রুনা হত্যাকাণ্ড ঘটনা অন্যতম প্রধান সংবাদ হিসেবে প্রচার পেলেও রোকন গাঢাকা দেয়। ফলে তাকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েও গ্রেপ্তার করেনি আইনশৃংখলা বাহিনী।
উপস্থিত মানবাধিকার নেতৃবৃন্দ বলেন , একটি হত্যা মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় না এনে বাদীনিকে গুম করে মিথ্যা বাদীনি সাজিয়ে মামলা তুলে নেয়া হয়। একটি অসহায় শিশুর নির্মম হত্যাকাণ্ড এভাবে ধামাচাপা দিলে ন্যায় বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। নারী ও শিশু নির্যাতনের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী কোন পরিকল্পিত হত্যা মামলা প্রত্যাহার করা যায়না। এমনকি এই মামলায় ঘটনার কোন সাক্ষীকে আদালতে আনা হয়নি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নেতৃবৃন্দ মামলার ডকেটের কপি উপস্থাপন করে পুলিশের তদন্তের বিভিন্ন আইনগত অসংগতি তুলে ধরেন। এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইন শৃংখলা বাহিনীর প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান।
বক্তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের আন্তরিক সহায়তা কামনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ছয়টি মানবিকার সংস্থার পক্ষ থেকে সেলিম হোসেন চৌধুরী, মো: রফিকুল ইসলাম, মনসুর উল আলম প্রমুখ সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।