জুমবাংলা ডেস্ক : নরসিংদীর রায়পুরায় শিশু আবু তালহাকে (১০) অপহরণের পর বিক্রি করতে না পেরে তার দুটি চোখ নষ্ট করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে প্রতিবেশি পাভেল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার উত্তরবাখরনাগর ইউনিয়নের টেকপাড়া এলাকা থেকে শিশু আবু তালহাকে চোখ-মুখ বেঁধে অপহরণ করা হয়। পরে শনিবার (৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় নরসিংদীর মাধবদী থানার কান্দাইল এলাকার রশিদ চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে শিশু তালহাকে উদ্ধার করে স্বজনরা।
অপহরণকারীরা একই দিনে তালহা ছাড়াও আরও ২ শিশুকে অপহরণ করেছে বলে জানিয়েছে শিশুটি নিজেই। বাকি দুইজন হলো রাব্বী ও আতিকুল। তবে তাদের নাম ব্যতীত আর কোনো পরিচয় বা ঠিকানা জানে না শিশু আবু তালহা। অপহরণকারী পাভেল সম্পর্কে শিশু আবু তালহার চাচাতো ভাই।
শিশু তালহা উপজেলা উত্তরবাখরনগর ইউনিয়নের টেকপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র।
আহত শিশু আবু তালহা সাংবাদিকদের বলেন, শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পাশে একটি দোকান থেকে আমার বড় ভাইয়ের কিনে দেওয়া রুটি নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে প্রতিবেশী ধন মিয়ার ছেলে পাবেল ও তার বন্ধু পথের মাঝে চোখ-মুখ বেঁধে আমাকে নিয়ে যায়। পরে সে আমাকে ১২ হাজার টাকায় অন্যদের নিকট বিক্রি করে দেয়। তারা আমার চোখ নষ্ট করে আমাকে দিয়ে ভিক্ষা করানোর পরিকল্পনা করেছিল। আমার সঙ্গে আরও দুইজন ছিল। পরে আমরা ৩ জন মিলে সুযোগ বুঝে তিন দিকে পালিয়ে যাই।
শিশুটি আরও জানায়, গত ১-২ মাস আগে পাখির ছানা গাছ থেকে নামানোকে কেন্দ্র করে আবু তালহা ও তার মায়ের সঙ্গে পাবেলের ঝগড়া হয়।
তালহার বাবা দুলাল মিয়া বলেন, শুক্রবার বিকেল থেকে তালহা নিখোঁজ হয়। পরে সম্ভাব্য অনেক জায়গায় তাকে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে মাইকের মাধ্যমে এলাকায় ঘোষণা করা হয়। এরই মাঝে তার ছবি দিয়ে ফেইসবুকে আমরা পোস্ট করি। তখন আমার কাছে একটা কল আসে। জানতে পারি আমার ছেলে মাধবদীর কান্দাইল এলাকায় রশিদ চেয়ারম্যানের বাড়িতে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। তখনই তার আহত ছবি ফেইসবুকে দেখে শিউর হই। এরপর বাড়ি থেকে লোকজন নিয়ে সেখানে গিয়ে সকাল ১০টায় তাকে নিয়ে আসি। ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি কামনা করছি। এর আগে আমার ছেলেকে নরসিংদী লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিতে পারি।
স্থানীয়রা বলছে, শিশুটি অন্তত্য সাহসী ও চালাক হওয়ায় ছুটে আসতে পেরেছ। তারা শিশুটির চোখ নষ্ট করতে চেয়েছিল। যারা শিশুটির সঙ্গে এমন জঘন্য কাজ যারা করেছে তাদের কঠিন শাস্তি কামনা করছি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাবেল ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তাদের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া এবং অভিযুক্ত পাবেলের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দেওয়ার কথাও জানান তিনি।
রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান মুঠোফোনের মাধ্যমে বলেন, শুনেছি অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগী দুজন সম্পর্কে চাচাতো ভাই। এক সঙ্গে দুইজন গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। এখন ঘুরতে গিয়েছিল না অপহরণ সেটা তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।