শিশুদের লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটি ও আলঝেইমার অভিন্ন কিনা, এ নিয়ে অনেকেই জানার আগ্রহ দেখিয়েছেন। উভয় বিষয়ের মিল আছে। কারণ, দুটোই একই প্রক্রিয়ার ব্যাঘাতে হয়ে থাকে। আজ থেকে ২০ বছর আগেও ধারণা ছিল যে আলঝেইমার এবং ডিমেনশিয়া কেবল বৃদ্ধদের হয়ে থাকে। যদিও এরই মধ্যে বদলে গেছে প্রেক্ষাপট। ২০২৩ সালে চীনে ১৯ বছর বয়সী একজন তরুণ আলঝেইমার রোগী শনাক্ত হয়। এর আগে তিনি বহু বছর ধরে ভুলে যাওয়া রোগে ভুগছিলেন।
আলঝেইমার হলে মানুষ যা কিছু শিখেছে, সবকিছু সে ভুলে যায় আর শিশুদের লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটি হলো শিশুর মস্তিষ্ক ঠিকমতো গঠনই হতে পারে না; ফলে সে কোনো কিছু সহজভাবে শিখতে পারবে না। লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটির অনেকগুলো স্তর আছে। আমি এখানে বলছি বেসিক লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটির কথা। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, তাহলে আমি কেন লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটির কথা লিখতে গিয়ে শিশুদের আলঝেইমারের প্রসঙ্গ তুলেছি? কারণ, উভয় ক্ষেত্রেই দেখা গেছে ঘুমের ভেতর মস্তিষ্কের পরিচ্ছন্নতা প্রক্রিয়া সঠিকভাবে না হওয়ায় মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়েছে।
আলঝেইমার রোগীদের মাথার সামনের দিকের অর্থাৎ মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্সে এমিলয়ডস প্লাকস পাওয়া গেছে, যা হলো মস্তিষ্কের সামনের অংশে জমা হওয়া ক্যালসিয়াম। মস্তিষ্কের এই অংশেই বুদ্ধি এবং স্মৃতি জমা থাকে। কিন্তু এর পরিবর্তে ক্যালসিয়াম বা এমিলয়ডস প্লাকস জমা হলে মস্তিষ্ক নতুন করে কিছু শেখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। পাশাপাশি আগের স্মৃতিও মুছে যায়।
এখন যেসব শিশুদের লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটি আছে, তাদের মস্তিষ্ক পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে তাদের মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্সে আলঝেইমার রোগীদের মতো ক্যালসিয়াম বা এমিলয়ডস প্লাকস জমা হয়। আর সেটা এত ছোট বয়সে হলে সেই শিশুর যে মস্তিষ্ক পরিণত হয়ে ওঠার সুযোগই পায় না। ফলে তার মস্তিষ্কের সংরক্ষণক্ষমতা, স্মৃতি জমা রাখার ক্ষমতা এবং কোনো কিছু শেখার ক্ষমতা তৈরি হওয়ার সুযোগই পায় না। এতে করে এসব শিশু সারা জীবন ধরে লার্নিং ডিসঅ্যাবিলিটিতে ভোগে।
এ জন্য রাত ৯টার ভেতর শিশুদের ঘুমাতে যাওয়া খুবই জরুরি। যদিও হালের শিশুরা বিভিন্ন কারণে দেরিতে ঘুমাতে যায়; এতে করে তাদের ঘুমের স্তরগুলো ঠিকমত পূরণ হতে না পারায় মস্তিষ্কের গঠনও ঠিকমতো হয় না। এ বিষয় নিয়ে আমি আগের পর্বগুলোতে বিস্তারিত লিখেছি। সেখানে উল্লেখ হয়েছে, কীভাবে রাতের প্রহরগুলোর সঙ্গে মানুষের ঘুমের স্তরগুলো ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।