বিউটি ট্রেন্ড হিসেবে ফেস অয়েল বা মুখে ব্যবহারের তেলের জনপ্রিয়তা অনেক। বিশেষ করে এই শীতকালে এমন তেলের চাহিদা বেড়েছে। তবে ত্বকভেদে আলাদা তেল নয়, বরং এমন এক তেল আছে, যা সব ত্বকের জন্য মানানসই শুধু নয়, ত্বকের সব সমস্যার সমাধানও বটে।
মারুলা গাছের সুমিষ্ট ফলের শাঁস ও বাদাম থেকে তৈরি হয় এই তেল। চুল ও নখের যত্নেও ব্যবহার করা হয়। ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা, উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি, ব্রণের সমস্যা রোধে এটি খুব ভালো একটি উপাদান। ত্বকে বার্ধ্যকের ছাপ প্রতিরোধ ও কমাতে এর জুড়ি মেলা ভার।
মারুলা গাছের আবাস সুদূর আফ্রিকায়। দক্ষিণ ও পশ্চিম আফ্রিকা ও মাদাগাস্কারে এই গাছ বেশি জন্মে। কারণ, এসব এলাকায় বৃষ্টি কম হয় আর অনেক বেশি সূর্যের আলো পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য অনুযায়ী, খ্রিস্টপূর্ব ১০ হাজার বছর আগে আফ্রিকানদের পুষ্টির উৎস ছিল মারুলা ফল। তাদের কাছে রয়েছে এই ফলের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব। মারুলা কিছু আফ্রিকান জাতিগোষ্ঠীদের কাছে বিয়ে ও উর্বরতার প্রতীক।
এটি অ্যানাকারডিয়াসি গোত্রের বাদামজাতীয় ফল। মিষ্টি স্বাদের জন্য মানুষের পাশাপাশি পশুদেরও খুব প্রিয় এই ফল। বিশেষ করে হাতিদের। এতে রয়েছে প্রচুর সুগার। তাই পাকা ফল মাটিতে পড়লে দ্রুত পচন ধরে। আর এই পচা ফল খেয়ে মাতাল হয়ে যায় বন্য প্রাণী। এ জন্য একটি মারুলা অয়েলের ব্র্যান্ডের নাম রাখা হয়েছে ‘ড্রাঙ্ক এলিফ্যান্ট’।
আগে দিগন্ত বিস্তৃত তৃণভূমিতে জন্মালেও এখন ব্যাপক চাহিদার জন্য মারুলা গাছ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। এই ফলের বীজের ভেতরের শাঁস এবং বাইরের শক্ত খোসা বা পুরো ফল থেকে তেল বের করা হয়। মারুলা তেলের রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ। অনেক বছর ধরে আফ্রিকান ভেষজ চিকিৎসায় এর ব্যবহার হয়ে আসছে। এমনকি রান্নায়ও এই তেল ব্যবহার করা যায়।
মারুলা তেল ত্বকের পুষ্টির জন্য একটি শক্তিশালী উৎস। এতে রয়েছে ত্বকের জন্য উপকারী অ্যামিনো এসিড, ফ্যাটি এসিড, প্রোটিন, ভিটামিন সি ও ই আর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। এটি উচ্চমানের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল অয়েল। তাই সহজে করতে পারে ব্রণের বংশ নির্বংশ। সরাতে পারে ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস আর সারাতে পারে একজিমা ও সোরিয়াসিসের মতো মারাত্মক চর্মরোগ। মারুলা অয়েলকে বলা হয় এলিক্সার অব ইয়ুথ। অর্থাৎ যৌবনের অমৃত।
কারণ, ত্বকের বয়সের লাগাম টানা যেন এর বাঁ হাতের খেল! কাজটি করতে সাহায্য করে এর ভেতরে থাকা এল আরজিনিন আর গ্লুটামিক অ্যাসিডের মতো অ্যামিনো এসিড। এরা হাইড্রেটিং করে ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রেখে ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করে। অন্যদিকে এর ভেতর বিদ্যমান ফ্যাটি অ্যাসিড যেমন ওমেগা ৬, ওমেগা ৯, পালমিটিক, স্টেয়ারিক, ওলিইক ও মিরিস্টিক অ্যাসিড ত্বকের ময়েশ্চার ধরে রাখে।
এর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট যেমন ফেনলিক যৌগ আর ভিটামিন সি ও ই ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করে রিঙ্কেল আর ফাইন লাইন কমায়, কমায় হাইপারপিগমেন্টেশন। এ ছাড়া সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ও নানা ধরনের দূষণের ফলে হওয়া ড্যামেজ থেকে ত্বককে রক্ষা করে। ভিটামিন সি ও ই ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।