জুমবাংলা ডেস্ক : সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, আগে শুনতাম শিল্প বাঁচলে শ্রমিক বাঁচবে। এখন দেখতে পারছি শিল্প বেঁচে আছে কিন্তু শ্রমিকরাই বেঁচে থাকতে পারছে না।
শনিবার (১৮ মে) সকালে রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আসন্ন জাতীয় বাজেট (২০২৪-২৫) উপলক্ষে ‘শ্রমিকদের জন্য কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এ বৈঠকের আয়োজন করে।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এখন শ্রমিক বাঁচলে শিল্প বাঁচবে এই বক্তব্য তুলে ধরতে হবে। জিডিপিতে যাদের সবচেয়ে বেশি অবদান সেই শ্রমিকদের পেছনে রেখে বাজেট হতে পারে না।
বৈঠকে জাতীয় বাজেটে শ্রমিকদের জন্য রেশনিং বরাদ্দের দাবি জানানো হয়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান ইসমাইল।
মাহবুবুর রহমান বলেন, জাতীয় বাজেটে শিল্প বাজেট, কৃষি বাজেট, স্বাস্থ্য বাজেট, শিক্ষা বাজেট, প্রতিরক্ষা বাজেট ইত্যাদি বাজেট থাকলেও আলাদাভাবে শ্রমিকদের জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দের খাত নেই। রেশনিং ব্যবস্থা চালুর জন্য গার্মেন্টস জিডিপির উন্নয়নের সুফল শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন বা অগ্রগতি ঘটায়নি। ব্যাপকভাবে বেড়েছে আয় বৈষম্য, স্বাস্থ্য বৈষম্য, শিক্ষা বৈষম্য, সম্পদ বৈষম্য ও খাদ্য বৈষম্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্রমিক নেতা শাজাহান খান বলেন, বাজেটে শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা, চিকিৎসা, আবাসন ব্যবস্থার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া দরকার। বিজিএমইএ, বিকেএমইএর অনেক সাবেক সভাপতি এখন সংসদ সদস্য। তাদেরকেও এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সংসদে কথা বলা উচিত।
তিনি বলেন, মালিক প্রতিনিধি ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা সংসদে রেশনিং ব্যবস্থা, চিকিৎসা, আবাসন ব্যবস্থার বিষয়ে মতবিনিময় করলে সংসদে উপস্থাপন করা সহজ হবে। এবারের সংসদ অধিবেশনে আমি এ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরবো।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিশ্ববাজারে গার্মেন্টস শিল্পকে প্রতিযোগিতায় টিকে রাখা এবং টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হলে শ্রমিক, মালিক ও জাতি সবাই উপকার পাবে।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, জাতীয় বাজেটে রেশনিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিকদের জন্য চাল, ডাল, তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য প্রদান করা হলে শ্রমিক পরিবারে খাদ্য নিশ্চয়তা আসবে। শিল্পের অস্থিরতাও কমে আসবে। বায়ারদের সহায়ক কর্মপরিবেশ সৃষ্টি হলে অর্ডার আরও বাড়বে।
বিলসের নির্বাহী পরিচালক সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শ্রমজীবী মানুষের জন্য যে বরাদ্দগুলো থাকা জরুরি সেটা আমরা দেখি না।
শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বলেন, শিল্পে শ্রমিকদের জন্য জাতীয় বাজেটের ১.৫ শতাংশ বরাদ্দ হলেই ১০ হাজার কোটি টাকা জোগাড় হয়ে যায়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৫৯ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছিল। ১৯৭২-১৯৭৩ সনে বাংলাদেশের প্রথম বাজেট ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা, বর্তমানে তা ৯৬৭ গুণ বেড়েছে।
তারা আরও বলেন, ১৯৭২ সালে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা ছিল ৩২ শতাংশ। বর্তমানে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৬ শতাংশ। ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ১৪ কোটি মানুষের নিজস্ব কোনো আবাসন নেই।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন, সালাউদ্দিন স্বপন, শহিদুল ইসলাম সবুজ, জলি তালুকদার, কাজী রহিমা সাথী, লাভলী ইয়াসমিন, শবনম হাফিজ, সুলতানা আক্তার, কে এম মিন্টু, রাজু আহমেদ, নুরুল ইসলাম, মাহমুদ হোসেন প্রমুখ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।