নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রকাশ্যে এক স্কুলছাত্রকে পিস্তল ঠেকিয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত আবু কাওসার (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তের বাড়ি থেকে একটি খেলনা পিস্তল ও দুটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়। তবে পুলিশ দাবি করেছে, উদ্ধার করা অস্ত্রটি আসল নয়, খেলনা পিস্তল। আর এ দাবি ঘিরেই জনমনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের হাজী প্রি ক্যাডেট স্কুলের সামনে। ঘটনার একটি ২২ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায় এবং ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
পরদিন বুধবার (৯ জুলাই) স্কুলছাত্রের বাবা সাইফুল ইসলাম শ্রীপুর থানায় একটি অপহরণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলায় আবু কাওসার ছাড়াও এমদাদুল হক (৫০), নূরুল ইসলাম (৪০), আরাফাত হোসেন (২২), এশফাকুল (২২) ও রিফাত (১৯) নামে আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় এক দোকানি মনির হোসেন বলেন, “আমাদের সামনেই পিস্তল উঁচিয়ে একজন ছাত্রকে গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়। আতঙ্কে সবাই ছুটোছুটি শুরু করে। তখন ওরা ফায়ারের চেষ্টাও করে। এখন যদি বলে এটা খেলনা পিস্তল, তাহলে আমাদের চোখে যা দেখলাম, সেটা কী?”
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, “পুলিশ অভিযুক্ত কাওসারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। সেখান থেকে একটি খেলনা পিস্তল ও দুটি ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কাওসার জানিয়েছে, সে পিস্তলটি অনলাইনে কিনে শুধু ভয় দেখানোর জন্যই ব্যবহার করেছিল।”
তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য এবং ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অনেকেই পুলিশের দাবির সঙ্গে একমত হতে পারছেন না। ভিডিওতে আতঙ্কিত ছাত্র, অস্ত্রের মতো কিছু উঁচিয়ে ধাওয়া এবং তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া—সবই জনমনে প্রশ্ন তুলেছে, আদৌ কি সেটি খেলনা ছিল?
পুলিশ বলছে, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অস্ত্রটি প্রকৃতপক্ষে খেলনা কি না, তা যাচাই-বাছাই করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার পর থেকে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও কঠোর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এমন সাহসী অপরাধ আরও বাড়তে পারে বলে মত দিয়েছেন স্থানীয়রা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।