জুমবাংলা ডেস্ক : রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) ষষ্ঠ বছরে পা রেখেছ আজ। তবে দিনটি ঘিরে চোখে পড়েনি বড় কোনো আয়োজন। এক প্রকার অনাড়ম্বর পরিবেশে পালিত হবে এবারের মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। পুলিশের বিরুদ্ধে আবু সাঈদকে গুলি হত্যার অভিযোগ থাকায় ইমেজ সংকট কাটাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নতুনভাবে যুক্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা। ইতিমধ্যে মহানগর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সবাইকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। কালের কণ্ঠের করা প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-
আজ শনিবার (২৬ অক্টোবর) রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এসব তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলামসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নিহত আবু সাঈদ ও জুলাই-আগস্টের শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন বলে জানান তিনি।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের সময় থাকা শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ এখন রংপুরে নেই।
পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের কেউ মহানগর পুলিশ কমিশনার অফিসে নেই। নগরীর ছয়টি থানায় নতুন করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেওয়া হয়েছে। এমনকি ওসি তদন্তের চেয়ারেও নতুন মুখ আনা হয়েছে। বদলি হয়েছেন ইন্সপেক্টর, এসআই, এএসআই ও কনস্টেবল পর্যায়ের সদস্যদেরও। এ কার্যক্রম এখনো অব্যাহত রয়েছে।
রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ড. ইলিয়াস প্রামানিক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের দিন আবু সাঈদকে টার্গেট করে গুলি করার মতো কোনো পরিস্থিতি সেদিন তৈরি হয়নি। এই দৃশ্য যখন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার হয়েছে তখন বড় ইমেজ সংকটে পড়েছে পুলিশ। এটা সত্য কথা। এ ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে পুলিশকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।
তাদের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড দিয়েই ইমেজ ফিরিয়ে আনতে হবে। এমনকি আবু সাঈদ হত্যার একটা মিথ্যা এফআইআর সাজিয়েছিল পুলিশ। সেখানে ছাত্রদের ওপর দোষ চাপানো হয়েছিল। এমন কর্মকাণ্ডে পুলিশ সাধারণ মানুষের আস্থা হারায়। আমি মনে করি, পুলিশকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব দেখাতে হবে।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক আসিফ আল মতিন বলেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠছে এগুলো তো পুলিশের করার কথাই না। তারা যদি পেশাদার আচরণ করে তাহলে কখনো এমনটা হতো না। শুধু ছাত্র-শিক্ষক না, সব স্তরের মানুষের প্রতি পেশাদার আচরণ করতে হবে। তা সব সময় করা উচিৎ। তাহলে তাদের যে ইমেজ সেটি রক্ষা পাবে।’
সুজন রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ ফখরুল আনাম বেঞ্জু মনে করেন, ‘পুলিশের জন্ম মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়। সেই সময় তারা আত্মহুতি দিয়ে পাকিস্তান বাহিনীকে তারা প্রতিহত করেছে। সেই পুলিশ বাহীনির ঐতিহ্য দলীয় প্রভাব ও স্বার্থ ব্যবহার করতে গিয়ে সংস্থাটির ইমেজ নষ্ট হয়েছে। পুলিশের এই ইমেজ রক্ষায় প্রথমে পলিসি সংস্কার করা দরকার। মনোবল বাড়াতে দরকার শুদ্ধাচার। জনবান্ধব ও গণতান্ত্রিক পুলিশ ব্যবস্থার দরকার। তাহলেই পুলিশ ইমেজ সংসট থেকে বেরিয়ে এসে জনগণের সেবামুখী সংস্থা হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।’
রংপুর পুলিশ কমিশনার মো. মজিদ আলী বলেন, ‘আবু সাঈদের ঘটনায় অবশ্যই ইমেজ কিছুটা ক্ষুন্ন হয়েছে। যাতে এটা রক্ষা করতে পারি, উন্নতি করতে পারি সেজন্য জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারের সঙ্গে আমরা বসছি। আইজিপি স্যার তাঁদের সঙ্গে বসবেন এবং কথা বলবেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘যে উদ্দেশে তাঁরা শহীদ হয়েছেন সেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা আমরা কাজ করতেছি। পুলিশ কাজ করছে। তা ছাড়া যে ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো ছিল সেগুলো সংশোধন করে আবারও পুলিশকে পেশাদার পুলিশ হিসেবে রূপান্তর করতে চেষ্টা করছি। আইজিপি স্যার এই উদ্দেশ্য নিয়েই কাজ করছেন। এবং আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
২০১৮ সালে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের যাত্রা শুরু হয়। সেই হিসেবে আজ ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দিনটি উপলক্ষে দুপুরে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম।
রাষ্ট্রপতির অপসারণ রাজনৈতিকভাবে মীমাংসার চেষ্টায় ছাত্রনেতারা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।