জুমবাংলা ডেস্ক : যদি ব্যাঙ খাওয়া আপনার কাজ হয় তবে সকালে উঠে প্রথমেই ব্যাঙটি খেয়ে নিবেন। যদি আপনার কাজ হয় দিনে দুইটা ব্যাঙ খাওয়া তবে বড় ব্যাঙটি আগে খাবেন। প্রোডাক্টিভিটি কনসালটেন্ট ব্রায়ান ট্রেসির ‘ইট দ্যাট ফ্রগ’ বই এমনটিই বলছে। তবে এখানে আসল ব্যাঙ খেতে বলেননি ট্রেসি বরং ‘জমে থাকা কাজ’–এর রূপক হিসেবে ব্যাঙকে ব্যবহার করেছেন। ব্যাঙ খেয়ে ফেলা বলতে তিনি বুঝিয়েছেন, চ্যালেঞ্জিং কাজটা শনাক্ত করা এবং সকালে প্রথম সেই কাজটাই সম্পন্ন করা।
প্রখ্যাত সাহিত্যিক মার্ক টোয়েন একবার বললেন, ‘যদি প্রতিদিন একটা করে জীবন্ত ব্যাঙ খেয়ে তোমার দিন শুরু করতে হয়, তবে বাকি দিনটা কিন্তু তুমি ভীষণ স্বস্তিতে কাটাবে। কারণ সারা দিন যা-ই হোক না কেন, নিশ্চয় ব্যাঙ খাওয়ার চেয়ে খারাপ কিছু হবে না।’ মার্ক টোয়েনের এই উক্তি থেকেই নিজের বইয়ের নামকরণ করেছেন ট্রেসি।
প্রায়শই দেখা যায় আমাদের কাজ জমে থাকছে। সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও করা হয়ে ওঠেনি ক্লাসের অ্যাসাইনমেন্টটা। ডেডলাইন পেরিয়ে গেলেও অফিসের জরুরি কাজটাও পড়ে আছে। করবো করবো করে আর করা হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতেই ‘ইট দ্যাট ফ্রগ’ বইয়ে এই থিউরি দিয়েছেন ব্রায়ান ট্রসি।
কীভাবে কাজ করে এই থিওরি?
মস্তিষ্ক সবসময় চায় কম পরিশ্রম করতে। সামনে যদি অনেক কাজ বা জটিল কাজ থাকে তবে সেই কাজ করতে সায় দেয়না। বেশি সমস্য হয় যখন কাজটি গুরুত্বপূর্ণ হয় কিন্তু ডেডলাইন একটু দেরিতে এমন কাজ করতে বেশি আলসেমি আসে।
এসব সমস্যা রোধ করে প্রডাক্টিভিটি বাড়াতে মেনে চলতে পারেন এবিসিডিই মেথড। জমে থাকা কাজগুলো ঝটপট লিখে ফেলুন। সবচেয়ে জরুরি কাজগুলোর পাশে লেখা থাকবে ‘এ’, যেটি তার চেয়ে একটু কম জরুরি, তার পাশে লেখা থাকবে ‘বি’। এভাবে কাজের গুরুত্ব অনুসারে সব কাজকে ‘এ বি সি ডি ই’ দিয়ে চিহ্নিত করুন। মনে রাখবেন, প্রথমে হাতে তুলে নিতে হবে সবচেয়ে জরুরি কাজটি। আবার দিনে বেশি কাজ থাকলে শুধু গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করেই দিন শেষ করে ফেলা যাবেনা। বাকি কাজগুলোও করতে হবে। এখানে কাজের গুরুত্ব অনুসারে ধাপে ধাপে করতে হবে।
প্রডাক্টিভিটি বাড়াতে বাড়াতে হবে দক্ষতা। যেমন, আপনি যদি মিনিটে ২০টি শব্দ লিখতে পারেন, তবে হয়তো আপনার অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করতে তিন ঘণ্টা লাগে। কিন্তু যদি আপনার লেখা মানে টাইপ করার গতি বাড়াতে পারেন এবং মিনিটে ৬০ শব্দ লিখতে শুরু করেন, তবে ঘণ্টা দুয়েকেই অ্যাসাইনমেন্টটি শেষ করে ফেলতে পারবেন।
মোবাইল, ওয়েব ব্রাউজার, ফেসবুক ইত্যাদি ‘প্রযুক্তিগত সময়ক্ষেপণ’ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। ট্রেসির মতে, কাজের মধ্যে প্রায়ই আমরা একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস, দুইটা নোটিফিকেশন, তিনটা টেক্সট মেসেজের চক্রে পড়ে যাই। আর হারিয়ে ফেলি কাজের প্রতি একাগ্রতা ও মনোযোগ। ভীষণ জটিল ও বিশাল কোনো কাজ সামনে পড়লেই তা আগামীর জন্য ফেলে রাখবেন না। বরং কাজটিকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলুন, এরপর একটি করে অংশ শেষ করতে থাকুন।
গত ৩০ বছরে ১০৭টি দেশে বিভিন্ন জাতিসত্তার মানুষের ব্যক্তিগত ও পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর কাজ করেছেন ব্রায়ান ট্রেসি। অভিজ্ঞতা ও গবেষণার আলোকে লিখেছেন ৭০টির বেশি বই। সূত্র : দেশ রুপান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।