সড়ক পরিবহন আইন: অপরাধের শাস্তি কমছে, শিথিল হচ্ছে চালকের যোগ্যতা

সড়ক পরিবহন

বাংলাদেশ সরকার ’সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সংশোধন’ করতে যাচ্ছে। সংশোধনের খসড়ায় প্রায় দশ জায়গায় শাস্তি কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে অভিযুক্ত চালক সহ সব পরিবহন শ্রমিকদের জেল ও জরিমানার ক্ষেত্রে বেশ ছাড় দেওয়া হবে।

সড়ক পরিবহন

বিদ্যমান আইন অনুযায়ী দুর্ঘটনায় কোন ব্যক্তি গুরুতরভাবে আহত হলে বা প্রাণহানি ঘটলে দায়ী ব্যক্তি সর্বোচ্চ পাঁচ বছর জেল বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হবেন। সংশোধনের খসড়া প্রস্তাবে জরিমানা কমিয়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি ’গুরুতরভাবে’ আহত’ শব্দ বাধ্য হয়েছে।

তিন চাকার মোটরযানের ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে এখন পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাস হলেই যথেষ্ট। বিদ্যমান আইনে এ যোগ্যতা ছিল অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত। যন্ত্র চালিত বৈদ্যুতিক ব্যাটারি চালিত যানবাহন, বাইসাইকেল, রিক্সা এবং ভ্যানকে মোটরযানের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে।

সংশোধনের খসড়া যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া হয়ে গেলে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এটি শীঘ্রই অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ৮৪ ও ৯৮ ধারার অপরাধ জামিনযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে ৯৮ ধারার অপরাধকে অপরযোগ্য হিসেবে বলা হয়েছে।

এর আগে এ তিনটি ধারায় বর্ণিত অপরাধ জামিনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হতো। নতুন সংশোধনীর খসড়া অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড এর কথা বলা হয়েছে। এর আগে এটি ছিল ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

তাছাড়া ট্রাফিক সংকেত না মানার ক্ষেত্রে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী এটি ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে নতুন প্রস্তাবনায় কারাদণ্ডের বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে।

নতুন প্রস্তাবনাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। চালক সংকটের সমাধানে নতুন প্রস্তাবনা কাজে আসবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তবে পরিবহন ও বিশেষজ্ঞরা নতুন প্রস্তাবনাকে ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছেন না।

বাংলাদেশ প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর শামসুল হক জানান যে, সংশোধনের নতুন প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করা হলে দুর্ঘটনা রোধ করা, সড়কে শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং আইন ভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।

Previous Article

ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি ও ধর্ষণ মামলা

Next Article

অন্তঃসত্ত্বা না হওয়ার শর্তে স্বাক্ষর করেছিলেন মাধুরী