বিনোদন ডেস্ক : ষাট-সত্তরের দশকে হিন্দি গানের জগতে মোহাম্মদ রফীকে টেক্কা দেয়ার মতো ছিলেন একজন-মুকেশ। তার কণ্ঠ দেয়া অনেক গান আজও জনপ্রিয়। আওয়ারা হু, কাহি দূর জাব দিন, ডাম ডাম ডিগা ডিগা প্রভৃতি তারই কণ্ঠে আজও ঘরে ঘরে বাজে। কিন্তু এ জনপ্রিয় শিল্পীকেও অর্থকষ্টে পার করতে হয়েছে। এমন অবস্থা গিয়েছে যে সবজিওয়ালার কাছ থেকেও টাকা ধার করেছেন তিনি। সম্প্রতি বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এ তথ্য দিয়েছেন খোদ মুকেশের পুত্র নিতিন মুকেশ।
বাবার আর্থিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি এক জীবনে কাউকে এত উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যেতে দেখিনি। তার বহুদিন গিয়েছে কোনো খাবার ছাড়াই কাটিয়ে দিয়েছেন। ফির ভি দিল হ্যায় হিন্দুস্তানি, আওয়ারা হু গাওয়ার পরও ছয়-সাত বছর তার এমন জটিলতা গিয়েছে।’ সম্প্রতি নিতিন মুকেশ জি টিভিতে সা রে গা মা পা লিটল চ্যাম্পস প্রতিযোগিতায় অতিথি হয়েছিলেন। সেখানেই তিনি এসব কথা বলেন।
মুকেশ আরো বলেন, ‘এমনও সময় গিয়েছে যখন তিনি আমার ও আমার বোনের স্কুলের ফি দিতে পারেননি। আমার এখনো মনে আছে আমাদের বাড়ির পাশে একজন সবজি বিক্রেতা ছিলেন, যে মুকেশ জির কণ্ঠ খুব ভালোবাসতেন। তিনি বাবাকে ধার দিতে চাইলেন। সে টাকা নিয়েই বাবা আমাদের স্কুলের ফি দেন। সে সবজি বিক্রেতা এ তথ্য কোনোদিন আমাদের দিতে চাননি।’
নিতিন মুকেশ জানিয়েছেন, তার বাবার এই কঠিন সময়ে তাদের বাবার সহযোগী হতে অনুপ্রেরণা দিতেন তার মা। তিনি বলেন, ‘মা আমাদের সবই জানাতেন। বলতেন বাবা এখন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এগুলোই আমার স্মৃতি, যা কোনোদিন ভোলা সম্ভব না।’
নিতিন মুকেশ মূলত অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া কিশোর তরুণদের অনুপ্রেরণা দিতে এসব কথা বলেছেন। তার স্মৃতি ও খারাপ সময়ের কথা শুনে শঙ্কর মহাদেবনও বলেন, ‘এতে সবাই অনুপ্রাণিত হবে কঠিন সময়ে হাল ধরে রাখতে।’
বহু গানের জনপ্রিয় গায়ক মুকেশের জন্ম ১৯২৩ সালে। তিনি ছিলেন কেএল সায়গলের গানের ভক্ত। তবে ক্যারিয়ার শুরু করেন একজন অভিনেতা হিসেবে। ১৯৪১ সালে ‘নির্দোষ’ দিয়ে তার অভিনেতা পরিচয়ে যাত্রা হয়। খুব বেশি সিনেমায় অভিনয় করেননি। গানেই পরিচিত হয়েছেন মুকেশ। প্লেব্যাকে তিনি ছিলেন বলিউডের অনন্য গায়ক। স্বীকৃতি হিসেবে লাভ করেছেন ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়া ফিল্মফেয়ারের বিচারে চারবার সেরা গায়কের পুরস্কারও পান তিনি। মুকেশ মারা যান ১৯৭৬ সালে।
নিতিন মুকেশও বলিউডে প্লেব্যাক করেছেন। সত্তরের দশকে তার যাত্রা হয়। নুরি, তেজাব, সোনে পে সোহাগা, রাম লক্ষ্মণের মতো সিনেমায় তার গান রয়েছে কিন্তু খুব বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেননি। নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে মুকেশ পরিবারের ভাগ্য একটু কঠিনই বলা চলে। নিতিন মুকেশের পুত্র নীল নিতিন মুকেশ নিজেকে অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন। আকর্ষণীয় চেহারা থাকলেও বলিউডে তিনি এখনো সেভাবে সফলতা পাননি। তবে জেল, সাত খুন মাফ, ওয়াজির, নিউইয়র্ক সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।