সফট স্কিল হলো মানুষের বিশেষ কিছু ব্যক্তিগত ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, যেগুলো অন্যদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে ভালোভাবে কাজ করতে শেখায়। আপনি ফ্রেশার, চাকুরিজীবী বা ব্যবসায়ী যাই হউন না কেন , প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে টিকে থেকে সফলতা পাওয়া অনেক কঠিন। সফলতা পাওয়ার জন্যে আপনাকে প্রতিটা ফিল্ডে সমান ভাবে দক্ষ হতে হবে। এজন্যে আপনাকে হার্ড স্কিল ও সফট স্কিল এ সমান ভাবে দক্ষ হতে হবে।
মানিয়ে নেয়া ও ইতিবাচক মনোভাব
ক্যারিয়ার এ সফলতা পাওয়ার জন্যে মানিয়ে নেয়া ও ইতিবাচক মনোভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে বা ফিল্ডেই কাজ করুন ওখানকার পরিবেশের সাথে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। একই প্রতিষ্ঠানে বা ফিল্ডে, আপনাকে বিভিন্ন রকম ধর্মের, বর্ণের, সংস্কৃতির ও বয়সের ভিন্ন ভিন্ন মানসিকতার মানুষের সাথে কাজ করতে হতে পারে।
সেক্ষেত্রে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে, ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সবার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে নিজেকে এগিয়ে নিতে হবে দূর্দান্ত গতিতে। নিয়োগকর্তা অবশ্যই আপনার এই দক্ষতাটি আছে কিনা তা বিভিন্ন ভাবে যাচাই করবেন। মানিয়ে নেয়া বা ইতিবাচক মনোভাব এর বিষয়টি বিভিন্নভাবে অনুশীলন করতে পারেন। যেমন – বন্ধুদের সাথে এবং পরিবারের সাথে অনুশীলন করে আপনি এই দক্ষতাটি বাড়াতে পারেন।
বিনয়ী
বিনয়ী একটি চমৎকার ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য বা গুণ। প্রতিটা মানুষের পারিবারিক, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একসাথে কাজ করতে গিয়ে নম্রতা ভদ্রতা বজায় রেখে কথা বললে প্রতিষ্ঠানে একটি সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়। দলগত কাজের ক্ষেত্রে দলের সবাইকে অত্যন্ত আন্তরিক ও বিনয়ী হতে হয়, নাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় যার জন্যে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যায় না।
নেতৃত্ব দানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো বিনয়ী হওয়া। ক্যারিয়ার এ সফলতা পাওয়ার জন্যে, আমাদেরকে অবশ্যই উপরোক্ত সফট স্কিল গুলোতে ফোকাস করতে হবে। কোনো পাঠ্য বই পড়ে বা প্রশিক্ষণ নিয়ে এই স্কিল গুলো পরিপূর্ণ ভাবে শিখতে পারবেন না। এজন্যে দরকার নিয়মিত অনুশীলন ও উপস্থিত জ্ঞানবুদ্ধি।
টাইম ম্যানেজমেন্ট / সময় ব্যবস্থাপনা
বলা হয়ে থাকে, “সময় জীবন”। আমরা প্রায় সবাই দিন শেষে একটা আফসোস করে থাকি যে, যদি আরেকটু সময় পেতাম কাজটা আরেকটু গুছাতে পারতাম অথবা ভালো ভাবে করতে পারতাম। কাজগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্যে টাইম ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টাইম ম্যানেজমেন্ট এ দক্ষ হলে সঠিক সময়ে নিজের কাজ গুলো শেষ করে অফিসের অন্যদের আপনি সহযোগিতা করতে পারবেন, বসের কাজ গুলোতে সহযোগিতা করতে পারবেন এতে করে অফিসে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। টাইম ম্যানেজমেন্ট এ দক্ষ হলে ক্যারিয়ার এ এগিয়ে যাবেন দুর্দান্ত গতিতে।
টিমওয়ার্কের গুরুত্ব
কর্মক্ষেত্রে এককভাবে কাজ করা সব সময় সম্ভব হয় না। বেশির ভাগ কাজের জন্য একটি টিমের মধ্যে কাজ করা প্রয়োজন। টিমওয়ার্কের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান এবং উদ্ভাবনী চিন্তা করা সম্ভব। একটি কার্যকর টিম তৈরি করতে কিছু মূল বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া উচিত।
বিশ্বাস এবং সহযোগিতা: টিমের সদস্যদের মধ্যে বিশ্বাস থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বাসের মাধ্যমে একে অপরকে সমর্থন করতে এবং সহযোগিতা করতে পারে।
ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি: একটি টিমের বিভিন্ন সদস্যের বিভিন্ন দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা থাকে। তাঁদের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমস্যা সমাধানের নতুন নতুন পথ খুঁজে পাওয়া যায়।
লক্ষ্য নির্ধারণ: একটি কার্যকর টিমের জন্য একটি সাধারণ লক্ষ্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবাই যদি একই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করেন, তবে টিমটি সফল হতে পারে।
সফট স্কিলের প্রভাব
সফট স্কিলের উন্নতি কর্মক্ষেত্রে নানা ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে:
সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ: একটি সহযোগী এবং সমর্থনশীল কর্মপরিবেশ তৈরি করতে সফট স্কিল অপরিহার্য।
সৃজনশীলতা: টিমওয়ার্ক এবং যোগাযোগের মাধ্যমে সৃজনশীলতা বাড়ে, যা নতুন ধারণা এবং উদ্ভাবন তৈরি করতে সাহায্য করে।
সাফল্যের হার বৃদ্ধি: সফট স্কিল উন্নত হলে কাজের ফল এবং সাফল্যের হার বাড়ে।
নেতৃত্ব গুণ সফট স্কিলের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। একজন কার্যকর নেতা তার দলে অনুপ্রেরণা দিতে, দিক নির্দেশনা প্রদান করতে, এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন। নেতৃত্ব গুণ শুধু কর্মক্ষেত্রে নয়, বরং সমাজের বিভিন্ন স্তরেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা এমন একটি সফট স্কিল, যা নিজের এবং অন্যের আবেগ বোঝা, নিয়ন্ত্রণ করা এবং সেগুলোকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার দক্ষতা প্রদান করে। এটি কর্মক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক বজায় রাখতে, দ্বন্দ্ব মেটাতে এবং সহযোগিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।