জুমবাংলা ডেস্ক: আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং অন্য বছরের তুলনায় দাম ভালো পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার সবজি চাষিদের মাঝে খুশির জোয়ার বইছে।
সবজি চাষিরা বলছেন, অধিক মুনাফা পেতে আগাম জাতের সবজি চাষের বিকল্প নেই। এতে সবমিলিয়ে মাত্র ৭০-৭৫ দিনেই ফসল বাজারজাত করা সম্ভব। আর বাজারে ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনসহ বিভিন্ন আগাম জাতের সবজির চাহিদা থাকায় ভাল দাম পাওয়া যাচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে (২০২২-২০২৩) এখন পর্যন্ত ফুলকপি, বাধাঁকপিসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি চাষাবাদ হয়েছে প্রায় পাঁচহাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে। তবে এখনো সবজি চাষের সময় থাকায় আগামী বছর মার্চ মাস নাগাদ প্রায় সাড়ে ছয়হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সরজমিনে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পানি জমে থাকে না এমন জমি নির্বাচন করতে হয় আগাম জাতের ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষের জন্য। সেই ফসল মাত্র ৭০-৭৫ দিনে কৃষকদের ঘরে উঠে। সারাদেশের বাজারে এসব ফুলকপি আর বাঁধাকপির চাহিদাও প্রচুর। ফলে লালমনিরহাটের চাষিদের উৎপাদিত সবজি এলাকার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ট্রাকে করে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের সবজি বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ভালো দাম দিয়ে পাইকাররা ক্ষেতেই এসব সবজি ক্রয় করছেন বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউড়া এলাকার কৃষক ইমান আলী (৪০) জানান, এবছর তিনি দু’বিঘা জমিতে প্রায় নয়হাজার ফুলকপির চারা রোপন করেছিলেন। গত বছরের তুলনায় বৃষ্টি কম হওয়ায় ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতিটি ফুলকপি প্রায় এককেজি ওজনের হয়েছে। প্রতি কেজি ফুলকপির উৎপাদন খরচ পড়েছে ৬ থেকে ৭ টাকা। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপির দাম ৩০-৩৫ টাকা হলেও তিনি পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন ১৭/১৮ টাকা দরে।
তবে বেগুন চাষে অপেক্ষাকৃত কম উৎপাদন খরচ হওয়ায় বেশ ভালো দাম পেয়েছেন বলে জানান তিনি। শুরুতে প্রায় ৩০ টাকা দরে বেগুন বিক্রি করলেও বর্তমানে বেগুনের পাইকারি মূল্য অনেক কম বলে জানান তিনি। এরপরেও গত তিনমাসে বেগুন বিক্রিতে যথেষ্ট লাভ করেছেন।
একই কথা বলেন ওই এলাকার কৃষক বাবুল হোসেন (৩৭)। তিনি জানান, বাঁধাকপিরও বেশ ভালো ফলন হয়েছে এবার। খুব শীঘ্রই বাঁধাকপির বিক্রি শুরু হবে।
আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় মুনাফা ভালো হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলার দেওডোবা এলাকার কৃষক মোশারফ হোসেন (৫০) জানান, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনসহ বিভিন্ন ধরণের শাক-সবজি চাষাবাদ করেছেন তিনি। এরমধ্যে আগাম জাতের সবজি বিক্রি করে সবজি চাষিদের বেশ ভালো লাভ হয়েছে । এখন তিনি দ্বিতীয় দফায় বেগুন চাষ করছেন।
লালমনিরহাটে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান জানান, বাজারের সবজির দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। ফলে অনেকেই সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। চলতি মৌসুমে (২০২২-২০২৩) জেলার পাঁচটি উপজেলায় এখন পর্যন্ত পাঁচহাজার সাতশ’ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে, যা আগামি মার্চ মাস নাগাদ সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে।
গত মৌসুমে জেলায় ছয়হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরণের সবজি চাষ হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।-বাসস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।