সবাইকে বের হতে সাহায্য করে মারা গেলেন রেস্টুরেন্টের ক্যাশিয়ার ও ওয়েটার

সবাইকে বের হতে সাহায্য করে মারা গেলেন রেস্টুরেন্টের ক্যাশিয়ার ও ওয়েটার

জুমবাংলা ডেস্ক : বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের সাততলা গ্রীন কোজি কটেজ নামের বহুতল ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে। রাত সাড়ে নটার কিছু পর লাগা আগুন মুহূর্তেই ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ছড়িয়ে পড়ে ক্রেতাভর্তি প্রতিটি রেস্টুরেন্টের ফ্লোরে। ওই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ছিল ‘কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট’।

সবাইকে বের হতে সাহায্য করে মারা গেলেন রেস্টুরেন্টের ক্যাশিয়ার ও ওয়েটার

বেইলি রোডের এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্ট। গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলেই ধারণা করছে সবাই। তবে, সূত্রপাত নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা।

আগুন লাগার পর ওই রেস্টুরেন্টে থাকা সবাইকে দ্রুত বের হতে সাহায্য করেন রেস্টুরেন্টের ক্যাশিয়ার ও এক ওয়েটার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা নিজেরাই মারা গেছেন আগুনে পুড়ে। আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ আলতাফ নামের এক রেস্টুরেন্ট কর্মী এ তথ্য জানিয়েছেন।

মোহাম্মদ আলতাফ জানান, আগুন লাগার পর তাদের দুই সহকর্মী অন্যদের ভবন থেকে বের হয়ে যেতে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু সবাই পারলেও তারা সেখান থেকে বের হতে পারেননি। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে।

আলতাফ বলেন, ‘আগুন লাগার পর আমি রান্নাঘরে যাই এবং একটি জানালা ভেঙে লাফ নিয়ে নিজের প্রাণ বাঁচাই।’

বেইলি রোডের আগুনে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৪ জনে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ৪৩ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিতের পর রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আরও একজন মারা গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রিফিংয়ে জানান, অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় দগ্ধ হয়ে ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও ঢামেকে ভর্তি আছেন আরও ২২ জন। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় অন্তত ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার হয়েছে। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় আরও ৪২ জনকে। একই পরিবারের পাঁচজনসহ মারা গেছেন ৪৪ জন। এর মধ্যে ঢামেক হাসপাতালে ৩০, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ১০ এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে একজন মারা গেছেন । এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় ৩টি মরদেহ।

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পান তারা। প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ৯টা ৫৬ মিনিটে। পরে আগুনের ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়লে আরও ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে পুলিশ, আনসার, র‌্যাব ও এনএসআই। ১৩টি ইউনিটের ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ভবনটিতে পিৎজা ইন, স্ট্রিট ওভেন, খানাসসহ আরও রেস্টুরেন্ট ছিল। এছাড়া ইলিয়েন, ক্লোজেস্ট ক্লাউডসহ জনপ্রিয় বিপণিবিতানও ছিল।