নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: চারিদিকে সবুজ ধানক্ষেত। চৈত্রের বাতাসে দোল দিয়ে যাচ্ছে কচি কিশলয়। আঁকাবাঁকা ধানক্ষেতের আইল মাড়িয়ে চোখ মেললেই দেখা যায় হাসছে একটি পলাশ গাছ। এ যেন ক্যানভাসে আঁকা কোন ছবি। সবুজের মাঝে এমন পলাশ ফুলের পরশ নিতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন বাংলার প্রকৃতি প্রেমিরা।
গাজীপুরে কাপাসিয়া উপজেলার সেলদিয়া গ্রাম। কাঁচাপাকা রাস্তা, বনবাদাড় আর পাখির কলতানে মুখরিত গ্রামটি। বানার নদীর কোল ঘেঁষে মনোমুগ্ধকর সবুজ ধান ক্ষেতের অপূর্ব দৃশ্য। যতদূর চোখ যায়, শুধু সবুজ আর সবুজ। এরই মাঝে রক্তিম আলোকসজ্জা হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে একটি পালাশ গাছ। এ যেন আবহমান গ্রাম বাংলার উদ্ভাসিত এক চিরায়ত রূপ।
এমন গ্রাম-বাংলার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েই হয়তো কবি জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, ‘আমি বাংলার মুখ দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।’
বিস্তীর্ণ ধানক্ষেতের এমন অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে গাজীপুর ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছে প্রকৃতি প্রেমী মানুষ। গাছের এমন সৌন্দর্য দীর্ঘদিনের হলেও ফেসবুকের কল্যাণে এবারই ভাইরাল হয়েছে। তবে এই গ্রামের মানুষের কাছে একটি শান্তির যায়গা।
গ্রামের মানুষ ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় ফালান মিয়া, আতিকুল ও নজরুল ইসলাম এ তিনজনের ধানক্ষেতের মাঝেই বহু বছর আগে এ পলাশ গাছটি লাগানো হয়। যাতে কৃষকরা কাজ শেষে যেন এই গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে পারেন। আব্দুর রহমান শাহিন নামে গ্রামের এক প্রবাসী নিজ খরচে গাছটির নিচে ইট-সিমেন্ট দিয়ে কৃষকদের বিশ্রামের জন্য একটি মাচা তৈরি করে দিয়েছেন। গাছটিতে ফুল ফুটলে অনেক সুন্দর দেখা যায়। এজন্য বিভিন্ন মানুষ দেখতে আসে। এতে তাদের আনন্দ লাগে বলে জানান আতিকুল-নজরুলরা।
গাজীপুরা এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব শিকদার বলেন, কয়েকদিন হলো ফেসবুকে যায়গাটার ছবি ভাইরাল হয়েছে। গাজীপুর শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে এ যায়গা। তবুও দেখতে এসেছি, সত্যি বলতে ছবির থেকেও বাস্তবে দেখতে সুন্দর।
ওই গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী সুজন মিয়া বলেন, প্রতি বছর ফুল ফোটে। তবে এতো লোক আসে না। কিন্তু এবার ছবিটি ভাইরাল হয়ে গেছে। ফলে প্রতিদিন শতশত লোক আসছে দেখতে । এতে আমাদের গ্রামের মানুষও বেশ উৎফুল্ল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।