নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ-২০২৩ শীর্ষক কার্যক্রমে গাজীপুর জেলা ও কালীগঞ্জ উপজেলায় সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় জেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন নুসরাত কবির।
মানুষ স্বপ্ন নিয়ে বাঁচতে চায়। মানুষ স্বপ্ন দেখে বাঁচতে চায়। প্রত্যেকটা মানুষের মনে থাকে অদম্য বাসনা কিংবা অনেক বড় হবার স্বপ্ন। ঠিক এমনই একজন মানুষ গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকার তুমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা এস.এম মোজাম্মেল কবির ও নুরুন্নাহার বেগম দম্পতির কন্যা নুসরাত কবির। বেড়ে ওঠার সাথে সাথে মানবসেবা যেন তার ব্রত হয়ে ওঠে। সেই নুসরাত কবিরের জীবনে রয়েছে অনন্য এক গল্প।
প্রত্যন্ত গ্রামে ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়ে নানা অনিশ্চয়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হয়েছে। বাড়ি থেকে কলেজের দূরত্ব ৪০ কি. মি. হওয়ায় কঠিন সংগ্রামের মাধ্যমে পড়ালেখা সম্পন্ন করতে হয়েছে। এক পর্যায়ে হোস্টেলের কঠিন জীবন সংগ্রাম ও নানা প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে শিক্ষাজীবন চালিয়ে নিয়েছেন তিনি। পরিবার থেকে বাল্যবিয়ের চাপ উপেক্ষা করে একজন সফল যুব নারী সংগঠক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে নানাবিধ প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেও নিজের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামাজিক কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা তার মূল লক্ষ্য।
স্বামী কিংবা পরিবারের ওপর নিভর্রশীল না হতে চাকরিতে যোগদান এবং পাশাপাশি নারী ও যুবদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন অদ্যাবধি।
তিনি অভিপ্রায় যুব সমাজ কল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। UNICEF ও UNIAID এর সক্রিয় সদস্য। হাসপাতালে মূমুর্ষ রোগীদের রক্তের জন্য হাহাকার দেখে ২০১৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পড়া অবস্থায় ১৫ বছর বয়সে ১৮ জন সদস্য নিয়ে অভিপ্রায় যুব সমাজ কল্যাণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
২০১৮ সালে ২৪ ঘন্টা বিনামূল্যে রক্তদাতা যোগান দেয়ার জন্য কল সেন্টার চালু করেন। যার মাধ্যমে সারা বাংলাদেশ থেকে দৈনিক ৫ থেকে ৬ ব্যাগ বিনামূল্যে রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। ২০১৭ সাল থেকে ২৬ হাজার ব্যাগ রক্ত বিনামূল্যে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে তার পরিচালনায় ৬৯টি বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রায় ৩৬ হাজার লোকের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় পরীক্ষা করা হয়। পাশাপাশি রক্তদানে উদ্বুব্ধকরণে কাউন্সিলিং দেওয়া হয়।
নুসরাত কবিরের নেতৃত্বে অভিপ্রায় যুব সমাজ কল্যাণ সংস্থা ব্যানারে ১৫টি বিনামূল্যে মেডিক্যাল ক্যাম্প আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রায় ৮ হাজার রোগী বিনামূল্যে সেবা নিয়েছেন। বিভিন্ন স্কুল কলেজের মাদক, সন্ত্রাস ও বাল্যবিবাহ বিরোধী সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।
বৃক্ষরোপন কর্মসূচি, করোনাকালীন সময়ে জরুরি অক্সিজেন সেবা নিশ্চিত করা। দুঃস্থ্য, পথশিশু ও এতিমদের সহায়তা দেওয়া হয়। ২০১৮ সাল থেকে UNICEF ও UNIAID বিভিন্ন প্রজেক্টে সরাসরি অংশগ্রহণের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া মানুষদের বিশেষ করে নারীদের উন্নয়নে অনবদ্য ভূমিকা রাখছেন তিনি। নুসরাত কবিররাই যেন আগামীর বাংলাদেশ। নুসরাত কবিরদের হাতেই আগামীর বাংলাদেশ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।