নিজস্ব প্রতিবেদক: সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের সম্পর্কে বরফ গলতে শুরু করেছে। গতকাল তাদের মধ্যে টেলিফোনে কথা হয়েছে।
ফোনালাপের বিষয়টি দুই পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে। দলের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যা ও ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে খুব শিগিগরই তাদের মধ্যে সামনাসামনি কথা হবে বলেও জানিয়েছেন।
রওশন এরশাদ গতকাল সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কাদেরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ও আসবে আমাকে দেখতে। তখন সবকিছু নিয়েই আমরা আলাপ করব। কোনো সমস্যা হবে না। আমি আগেও বলেছি, বার বারই বলেছি—আমি ঐক্য চাই। দলকে বিভক্ত করার প্রশ্নই ওঠে না, সেটা হবেও না।’
রওশনের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘উনি মাত্র দেশে ফিরলেন। একটু বিশ্রাম নিক। এরপর আমরা বসব। আশা করছি, কোনো সমস্যা হবে না। সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংককে চিকিৎসা শেষে রবিবার দেশে ফিরে বিমানবন্দরে রওশন এরশাদ যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি অত্যন্ত গঠনমূলক। দলের প্রত্যেকে বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবেই নিয়েছেন। আমার বিষয়েও উনি খুব সম্মানের সাথে কথা বলেছেন। এটা নিশ্চয় খুব ভালো।’
জি এম কাদের ও রওশন এরশাদের মধ্যে দ্বন্দ্বে রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনে লাঙ্গলের মনোনয়ন নিয়ে জটিলতা এতদিন জটিলতা ছিল। জি এম কাদেরের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাঁর পক্ষে দলের মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু মনোনয়ন দিয়েছেন বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে। তবে রওশনপন্থীরা বলেছিলেন, এই মনোনয়ন বৈধ নয়। রওশন এরশাদ যাঁকে মনোনয়ন দেবেন, তিনিই হবেন লাঙ্গলের বৈধ প্রার্থী।
রংপুর সিটির আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থীর বিষয়েও রওশন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন না। রংপুরের বর্তমান সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে ইতোমধ্যে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তাকে দলের নির্বাচনি প্রতীক ‘লাঙ্গল’ বরাদ্দ দেওয়ার জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছেন।
রওশন এরশাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দল তো একজনকে (মোস্তফাকে) মনোনয়ন দিয়েছে। এখানে আবার ভিন্ন কোনো বিষয় তো নেই।’
সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে রওশন এরশাদকে সরিয়ে জি এম কাদেরকে মনোনয়ন দিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে চিঠি দেওয়ায় দেবর-ভাবীর মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়ে।
প্রসঙ্গত, দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের সঙ্গে জি এম কাদেরের দ্বন্দ্ব পুরনো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নানা বৈঠকে দুজন দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন। তিন বছর আগে এরশাদের মৃত্যুর পর দলে কর্তৃত্ব নিয়ে দেবর-ভাবি কাদের ও রওশনের বিরোধে দলটি আবার ভাঙনের মুখে পড়েছিল। তখন জ্যেষ্ঠ নেতাদের হস্তক্ষেপে সমঝোতা হয়।
সেই সমঝোতায় রওশনকে সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার পাশাপাশি দলে প্রধান পৃষ্ঠপোষকের পদ দেয়া হয়। আর কাদের দলের চেয়ারম্যানের পদ রাখার পাশাপাশি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতার আসন নেন। সম্প্রতি রওশন এরশাদের নামে চিঠিতে আগামী নভেম্বর মাসে দলের কাউন্সিল ডাকা হয়। পরে সেই কাউন্সিল স্থগিত করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।