জুমবাংলা ডেস্ক : আওয়ামী লীগ সরকারকেই এক বৃহৎ সিন্ডিকেট আখ্যা দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেছেন, সর্বত্র সিন্ডিকেটের রাজত্ব তৈরি করেই ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছে সরকার।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হাতিরপুলে গণসংহতি আন্দোলন কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের এক সভায় এ কথা বলেন নেতারা।
মঞ্চের বর্তমান সমন্বয়ক ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান রিজু।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, জনসম্মতিহীন অবৈধ এই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের সর্বক্ষেত্রেই একটা সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। কার্যত এই সরকারই এখন এক বৃহৎ সিন্ডিকেট। ফলে ক্ষমতা ব্যবহার করে অবাক লুটপাট আর অন্যায় অত্যাচারের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। ব্যাংকসহ আর্থিক খাতের পরিস্থিতি গভীর সংকটে নিপতিত। টাকা ছাপিয়ে এখন শেষ রক্ষার চেষ্টা চলছে। সরকার ব্যাংক খাত পরিচালনার নীতি পরিবর্তনের কথা বললেও পরিস্থিতি মোকাবিলার উপযোগী প্রকৃত কোনো উদ্যোগ সেখানে নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণের হাঁকডাক সত্ত্বেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বেপরোয়া কারণে মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হচ্ছে। জনগণের পকেট হাতিয়ে নেওয়া দুর্বৃত্তদের স্বার্থ রক্ষার্থেই কাজ করছে সরকার।
তারা আরও বলেন, সরকারের জবাবদিহিতাহীন একচেটিয়া শাসনের ফলে সামাজিক নৈরাজ্যেরও বিস্তার ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজের বিভিন্ন অংশে ধর্ষক, নিপীড়ক, দুর্বৃত্ত ও দখলদারদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি দল ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায় এসব রোমহর্ষক ঘটনা ঘটছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের পাশাপাশি গত ক’দিনে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতির গুরুতর অবনতি ঘটলেও জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফলে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ অনুযায়ী এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উপযোগী নীতি গ্রহণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে সরকার। সীমান্তে বাংলাদেশের হাজার হাজার নাগরিক নিজেদের জানমাল নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে আবারও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নতুন ঢেউ আসার হুমকি তৈরি হচ্ছে।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতৃবৃন্দ বলেন, ডামি নির্বাচনের ডামি সরকারের অধীনে দেশের মানুষের ভোট ও জীবন-জীবিকা যেমন বিপন্ন, তেমনি জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব কোনোভাবে নিরাপদ নয়। যে কোনোভাবে ক্ষমতায় থাকার বিনিময়ে জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিকিয়ে দিতেও তারা দ্বিধা করছে না। গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে বিদায় করা এবং একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও নতুন গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা ছাড়া বাংলাদেশের মানুষের কোনো মুক্তি নেই।
সভায় নেতৃবৃন্দ সেই লক্ষ্যে গণআন্দোলন জোরদার করতে তলা থেকে জনগণের ঐক্য গড়ে তোলার সংগ্রাম জোরদার করতে গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর কাদের ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার, জেএসডির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাংগঠনিক সমন্বয়ক ইমরান ইমন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
নেতারা জানান, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় পুরানা পল্টন মোড়ে সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে ব্যাংক লোপাট ও অর্থ পাচারের প্রতিবাদে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।