সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য সুখবর অপেক্ষা করছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য তাদের জন্য মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সম্ভাবনা আবারো আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। নতুন বছর শুরুর আগে থেকেই এই ভাতা নিয়ে পরিকল্পনা চলছিল, কিন্তু সাময়িকভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন আবার নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে এবং আগামী ২০ মে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
সরকারি চাকরিজীবীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে নতুন তথ্য
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে সরকারি কর্মচারীদের জন্য সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা চালুর চিন্তা-ভাবনা চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, ১ থেকে ৯ নম্বর গ্রেডের কর্মীদের জন্য প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ এবং ১০ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মীদের জন্য ২০ শতাংশ হারে এই ভাতা চালু করার প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে। তবে এই হার আরও বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হলে মোট খরচ দাঁড়াবে প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকা।
Table of Contents
২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে প্রায় ৮৪ হাজার কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১০.৪১ শতাংশ। আগের সরকারের সময় পদোন্নতির মাধ্যমে অনেক কর্মচারীর বেতন কাঠামো বদলে যাওয়ায় এই খাতে ব্যয় বেড়েছে। এই প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, “এই মুহূর্তে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি বৈঠক হবে, যেটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নির্ধারণে সহায়ক হবে।”
আলোচনার পটভূমি ও প্রেক্ষাপট
গত জানুয়ারিতেই মহার্ঘ ভাতা চালুর আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু তখন দেশের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তা স্থগিত করা হয়। এই সিদ্ধান্ত অর্থনীতিবিদদের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করে। অনেকে মনে করেন যে এই ভাতা সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করে অর্থনৈতিক ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে প্রশাসনের অভ্যন্তরে অসন্তোষ তৈরি হওয়ায় সরকার পুনরায় এই ভাতার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ২০ শতাংশ হারে ভাতা চালুর প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে, যা অর্থ উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এই সিদ্ধান্ত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
ভাতা বাস্তবায়নের সম্ভাব্য ফলাফল
মহার্ঘ ভাতা চালু হলে সরকারি চাকরিজীবীদের জীবনযাত্রার মান কিছুটা উন্নত হবে। বর্তমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে তাদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে। তবে অর্থনৈতিক দিক থেকে এই সিদ্ধান্তের প্রভাব বিশ্লেষণ করা জরুরি।
সম্ভাব্য ব্যয় বিশ্লেষণ
- ১ থেকে ৯ গ্রেডের জন্য ১০% হারে ভাতা চালু হলে খরচ হবে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা
- যদি ১৫% হারে ভাতা দেওয়া হয়, তাহলে মোট ব্যয় দাঁড়াবে ৬,৫০০ কোটি টাকা
- ১০ থেকে ২০ গ্রেডের জন্য ২০% হারে ভাতা দেওয়া হলে সামগ্রিক খরচ আরও বাড়তে পারে
এই ব্যয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারকে রাজস্ব আয় এবং অন্যান্য ব্যয়ের উপর নজর দিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে এই প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হতে পারে। এরপর তা প্রধান উপদেষ্টার সম্মতির জন্য পেশ করা হবে এবং বাজেটে অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে।
এমন উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে আরও অন্যান্য সুবিধাও পুনর্বিবেচনা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিস্তারিত পরিকল্পনা ও কাঠামো এখনও চূড়ান্ত না হলেও, চলতি আলোচনাগুলো আশা জাগাচ্ছে।
FAQs
মহার্ঘ ভাতা কী?
মহার্ঘ ভাতা হল সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য একটি অতিরিক্ত অর্থ সহায়তা, যা সাধারণত মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের বেতন কাঠামোতে যোগ করা হয়।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে মহার্ঘ ভাতা কত শতাংশ হতে পারে?
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, ১-৯ গ্রেডের জন্য ১০-১৫% এবং ১০-২০ গ্রেডের জন্য ২০% হারে মহার্ঘ ভাতা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
এই ভাতা কার্যকর হলে সরকারের মোট ব্যয় কত হবে?
মহার্ঘ ভাতা কার্যকর হলে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় প্রায় ৬,০০০ থেকে ৬,৫০০ কোটি টাকার মধ্যে হতে পারে।
এই সিদ্ধান্ত কবে থেকে কার্যকর হতে পারে?
চূড়ান্ত অনুমোদনের পর এটি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়ে কার্যকর হতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কী বলছেন?
কিছু অর্থনীতিবিদ মনে করেন এই ব্যয় সরকারকে চাপের মুখে ফেলতে পারে, তবে অনেকেই বলছেন এটি দরকারি সিদ্ধান্ত।
এই ভাতার ঘোষণা কখন আসতে পারে?
আগামী ২০ মে বৈঠকের পর সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত হলে বাজেট বক্তৃতায় এটি ঘোষণা করা হতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।