Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ: আবেদন করুন এখনই!
    লাইফস্টাইল ডেস্ক
    লাইফস্টাইল

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ: আবেদন করুন এখনই!

    লাইফস্টাইল ডেস্কMd EliasJuly 16, 202515 Mins Read
    Advertisement

    বিজ্ঞপ্তি দেখে হৃদয়টা দ্রুত স্পন্দিত হওয়ার সেই অনুভূতি… চোখ আটকে গেছে পত্রিকার বিজ্ঞপ্তি কলামে বা প্রিয় সরকারি ওয়েবসাইটের নোটিশ বোর্ডে। “সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ” – এই কয়েকটি শব্দই কি না হাজারো তরুণ-তরুণী, অভিজ্ঞ পেশাজীবী, এমনকি পরিবারের কর্তাব্যক্তিদের মনে জাগায় আশার আলো! একটি সরকারি চাকরি শুধু মাসের শেষে নির্দিষ্ট বেতন পাওয়ার নিশ্চয়তা নয়; এটি সামাজিক মর্যাদা, চাকরির নিরাপত্তা, সেবা করার সুযোগ এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার এক অনন্য সম্ভাবনা। কিন্তু এই সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে কতজনই না দিশেহারা হয়ে পড়েন! কোথায় খুঁজবেন সঠিক বিজ্ঞপ্তি? কীভাবে করবেন আবেদন? কী নিয়ে ভুল করবেন না? আজকের এই গভীর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে, আমরা সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগের প্রতিটি ধাপ, গোপন কৌশল এবং জরুরি তথ্য আপনাকে জানাবো, যাতে আপনি “আবেদন করুন এখনই!” এই আহ্বানে সাড়া দিতে পারেন আত্মবিশ্বাসের সাথে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) থেকে শুরু করে শিক্ষক নিয়োগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, পুলিশ, ব্যাংক, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান – সর্বত্রই চলছে নিয়োগের ছোটাছুটি। আপনার জন্য অপেক্ষা করছে কোন সুযোগটি? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ

    • সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ: কোথায় খুঁজবেন ও কীভাবে যাচাই করবেন?
    • নতুন নিয়োগে আবেদন প্রক্রিয়া: ধাপে ধাপে সফলতার গাইড
    • সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগের জন্য প্রস্তুতি: শুধু পড়া নয়, কৌশলগত যুদ্ধ!
    • সাক্ষাৎকারে সফলতা: আপনার ব্যক্তিত্বেরই পরীক্ষা
    • সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগে সাধারণ ভুল ও করণীয়
    • জেনে রাখুন (FAQs)

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ: কোথায় খুঁজবেন ও কীভাবে যাচাই করবেন?

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগের খবর এখন আগের চেয়ে সহজলভ্য হলেও, নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে সঠিক তথ্য পাওয়াটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ভুল তথ্য বা প্রতারণার কবলে পড়ে মূল্যবান সময় ও অর্থ হারানোর ঝুঁকি এড়াতে আপনাকে জানতে হবে সরকারি নিয়োগের খবর পাবার নির্ভরযোগ্য পথগুলো।

    1. সরকারের নিজস্ব পোর্টাল: এক কথায় নির্ভরতার আকর:

      • www.bpsc.gov.bd (বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন – বিপিএসসি): বিসিএস, বিশেষ ক্যাডার সার্ভিস, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের গেজেটেড পদে নিয়োগের জন্য এটি সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এখানেই প্রকাশিত হয় সবচেয়ে বেশি কাঙ্ক্ষিত চাকরির বিজ্ঞপ্তিগুলো। ওয়েবসাইটটির ‘নোটিশ’ ও ‘চাকুরীর বিজ্ঞপ্তি’ সেকশন নিয়মিত চেক করুন। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (BPSC)
      • www.teletalk.com.bd: প্রায় সমস্ত অনলাইনে আবেদনযোগ্য সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি (বিপিএসসি, শিক্ষক নিয়োগ, ব্যাংক, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি) প্রকাশিত হয় এই পোর্টালে। এটি সরকারি নিয়োগের কেন্দ্রীয় তথ্যভান্ডার হিসেবে কাজ করে। Teletalk Bangladesh Ltd.
      • নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের ওয়েবসাইট: যেমন শিক্ষা মন্ত্রণালয় (www.moedu.gov.bd), স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ (www.dghs.gov.bd), স্থানীয় সরকার বিভাগ (www.lgd.gov.bb), বাংলাদেশ পুলিশ (www.police.gov.bd), বাংলাদেশ ব্যাংক (www.bb.org.bd) ইত্যাদি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সরাসরি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি এখানে প্রকাশ পায়।
      • www.erecruitment.bb.gov.bd: বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগের জন্য নির্ধারিত পোর্টাল। e-Recruitment System
      • জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইট/নোটিশ বোর্ড: স্থানীয় পর্যায়ের (ক্লার্ক, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর, অফিস সহকারী ইত্যাদি) নিয়োগের খবর প্রায়ই সংশ্লিষ্ট জেলা বা উপজেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ওয়েবসাইট বা সরাসরি নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়।
    2. ঐতিহ্যবাহী পত্রিকা: এখনও প্রাসঙ্গিক: দৈনিক প্রথম আলো, ইত্তেফাক, জনকণ্ঠ, কালের কণ্ঠ, সমকাল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের মতো জাতীয় দৈনিকগুলোর চাকরির পাতায় সরকারি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি নিয়মিত প্রকাশিত হয়। বিশেষ করে শুক্রবার ও শনিবারের সংস্করণে এ ধরনের বিজ্ঞপ্তির সংখ্যা বেশি থাকে।

    3. নির্ভরযোগ্য অনলাইন জব পোর্টাল: কিছু বাণিজ্যিক জব পোর্টাল (যেমন Bdjobs.com, Chakri.com, Chakrir Dak) সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি আপডেট করে। তবে সতর্ক থাকুন: এখানে পাওয়া যেকোনো বিজ্ঞপ্তিকে অবশ্যই মূল সরকারি সোর্স (বিপিএসসি/টেলিটক/মন্ত্রণালয়ের সাইট) থেকে ক্রস-চেক করতে হবে। ভুয়া বিজ্ঞপ্তির আশঙ্কা এড়ানোর এটাই একমাত্র উপায়।

    সতর্কতা: “সুপারিশের গ্যারান্টি” বা “পারিশ্রমিকের বিনিময়ে চাকরি” দাবি করা কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে কখনই যাবেন না। সরকারি নিয়োগ সম্পূর্ণ মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়। কোন ফি দাবি করা হলে (অফিসিয়াল আবেদন ফি বাদে) অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা পুলিশকে জানান।

    নতুন নিয়োগে আবেদন প্রক্রিয়া: ধাপে ধাপে সফলতার গাইড

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগে আবেদন প্রক্রিয়া অনেকের কাছেই জটিল ও বিভ্রান্তিকর মনে হয়। ভুল তথ্য দেওয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত না করা বা সময়মতো জমা না দেওয়ার কারণে বহু যোগ্য প্রার্থীও সুযোগ হারান। আসুন, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সহজ বাংলায় বুঝে নিই:

    1. বিজ্ঞপ্তি মনোযোগ সহকারে পড়ুন (একবার নয়, বারবার!): এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। বিজ্ঞপ্তির প্রতিটি লাইন, প্রতিটি শর্ত ভালোভাবে বুঝে নিন।

      • পদের নাম ও সংখ্যা: আপনি কোন পদের জন্য আবেদন করছেন, কতটি শূন্যপদ আছে।
      • শিক্ষাগত যোগ্যতা: কোন বিষয়ে ন্যূনতম কোন ডিগ্রি/পরীক্ষায় কোন গ্রেড/জিপিএ প্রয়োজন। (যেমন: স্নাতক পাস/সম্মান/মাস্টার্স, এসএসসি/এইচএসসিতে জিপিএ)।
      • বয়স সীমা: বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ অনুযায়ী আপনার বয়স কত হতে হবে (সাধারণত ১৮-৩০/৩২/৩৫ বছর, কোটা প্রাপ্তদের জন্য কিছুটা ছাড় থাকে)। জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক প্রমাণপত্র।
      • অভিজ্ঞতা: কোন পদে পূর্ব অভিজ্ঞতা প্রয়োজন হলে তার বিবরণ।
      • কোটা ব্যবস্থা: মুক্তিযোদ্ধা কোটার, জেলা কোটা, নারী কোটা, উপজাতি কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা ইত্যাদি প্রযোজ্য কিনা এবং তার শর্তাবলী।
      • আবেদন পদ্ধতি: অনলাইন (টেলিটক পোর্টাল/নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট), অফলাইন (ডাকযোগে/সরাসরি জমা) নাকি উভয়ই?
      • আবেদন ফি: পরিমাণ, পরিশোধের পদ্ধতি (মোবাইল ব্যাংকিং, ব্যাংক ড্রাফট, ট্রেজারি চালান ইত্যাদি) এবং ফি জমার শেষ তারিখ। ফি পরিশোধের রিসিট/প্রুফ সংরক্ষণ করুন।
      • আবেদনের শেষ তারিখ ও সময়: অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! এই তারিখের পরে আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়। অনলাইন পোর্টালে শেষ মুহূর্তে ভিড় করে সাইট ডাউন হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাই আগেভাগেই আবেদন সম্পন্ন করুন।
      • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: স্ক্যান কপির তালিকা (যেমন: পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, স্বাক্ষর, জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ, সকল শিক্ষাগত সনদের স্বাক্ষরিত কপি, মার্কশিট/ট্রান্সক্রিপ্ট, কোটা প্রমাণপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), অভিজ্ঞতার সনদ ইত্যাদি)। প্রতিটি ডকুমেন্টের সাইজ ও ফরম্যাট (JPG/PDF) নির্দেশনা মেনে স্ক্যান করুন।
    2. অনলাইন আবেদন: সহজ কিন্তু সতর্কতার সাথে:

      • নির্দিষ্ট পোর্টালে (সাধারণত Teletalk Jobs) গিয়ে নিবন্ধন করুন। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিন এবং ব্যবহারকারী আইডি/পাসওয়ার্ড নিরাপদে রাখুন।
      • লগইন করে আবেদন ফর্মটি পূরণ শুরু করুন। সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে ও বিজ্ঞপ্তির শর্তানুযায়ী দিন। নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, শিক্ষাগত যোগ্যতার বিস্তারিত, যোগাযোগের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর – প্রতিটি তথ্য যাচাই করে লিখুন। ভুল তথ্য দেওয়া হলে আবেদন বাতিল হতে পারে।
      • নির্দেশিত স্থানে প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি আপলোড করুন। প্রতিটি ফাইল সঠিক সাইজে ও পরিষ্কার কিনা নিশ্চিত হোন।
      • আবেদন ফি পরিশোধ করুন নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে (বিকাশ, রকেট, নগদ, ব্যাংক ড্রাফট ইত্যাদি)। ট্রানজেকশন আইডি/রিসিট নম্বর সংরক্ষণ করুন এবং ফর্মে যথাস্থানে লিখুন।
      • ফর্মের সব অংশ পূরণ ও ডকুমেন্ট আপলোড শেষ হলে সম্পূর্ণ ফর্মটি আবার ভালো করে চেক করুন। কোন ভুল থাকলে সংশোধন করুন।
      • সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। সফলভাবে সাবমিট হওয়ার পর একটি কনফার্মেশন পেজ/পিডিএফ ডাউনলোড করুন বা প্রিন্ট আউট নিন। এটি আপনার আবেদনের প্রমাণপত্র। ইমেল বা এসএসএস কনফার্মেশন থাকলে সেটিও সংরক্ষণ করুন।
    3. অফলাইন আবেদন (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে):

      • নির্দিষ্ট ঠিকানায় ডাকযোগে বা সরাসরি জমা দিতে হবে এমন বিজ্ঞপ্তির জন্য প্রথমে অফিসিয়াল আবেদন ফর্ম সংগ্রহ করুন (পত্রিকায় প্রকাশিত বা ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা)।
      • নির্দেশিকা অনুসারে নীল/কালো কালির বলপয়েন্টে পেন দিয়ে স্পষ্ট অক্ষরে ফর্ম পূরণ করুন।
      • প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি ফর্মের সাথে স্টেপল বা ক্লিপ দিয়ে সংযুক্ত করুন (মূল কাগজপত্র জমা দেবেন না, শুধু সত্যায়িত কপি)।
      • আবেদন ফি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে পরিশোধের প্রমাণপত্র (ট্রেজারি চালান/ব্যাংক রিসিটের কপি) সংযুক্ত করুন।
      • নির্দিষ্ট খামে ঠিকানা লিখে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ডাকযোগে বা সরাসরি জমা দিন। রেজিস্ট্রি ডাক/কুরিয়ারের রিসিট সংরক্ষণ করুন।
    4. আবেদন পরবর্তী করণীয়:
      • আপনার আবেদনের স্ট্যাটাস (গ্রাহ্য হয়েছে কিনা, ভুলত্রুটি আছে কিনা) নিয়মিত চেক করুন (টেলিটক পোর্টাল বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে)।
      • প্রিলিমিনারি/লিখিত/মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, ভেন্যু ও এডমিট কার্ড ডাউনলোডের নোটিশের জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট নিয়মিত মনিটর করুন।
      • আবেদনের প্রিন্টেড কপি/কনফার্মেশন, ফি রিসিট, সকল স্ক্যান করা ডকুমেন্টের ব্যাকআপ নিরাপদে রাখুন। ভবিষ্যতে ইন্টারভিউ বা ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনে লাগতে পারে।

    মনে রাখবেন: আবেদন প্রক্রিয়ায় সামান্য অসতর্কতাই আপনার স্বপ্নের চাকরির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই ধৈর্য্য ও সতর্কতার সাথে প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করুন।

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগের জন্য প্রস্তুতি: শুধু পড়া নয়, কৌশলগত যুদ্ধ!

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগে প্রতিযোগিতা প্রচণ্ড। শুধু পড়াশোনা করলেই হবে না, লাগবে সঠিক কৌশল, নিয়মানুবর্তিতা এবং টার্গেটেড প্রস্তুতি। আসুন জেনে নিই কিভাবে নিজেকে অনন্য করে তুলবেন:

    1. সিলেবাস ও পরীক্ষার প্যাটার্ন বুঝে নিন:

      • বিজ্ঞপ্তিই সিলেবাসের মূল উৎস: কোন পরীক্ষা (প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক) কী ধরনের হবে, কোন কোন বিষয় থেকে প্রশ্ন আসবে, নম্বর বণ্টন কেমন – এই সবকিছুর বিস্তারিত বিবরণ বিজ্ঞপ্তিতে দেওয়া থাকে। এটি আপনার প্রস্তুতির রোডম্যাপ।
      • পূর্ববর্তী বছরের প্রশ্নপত্র: গত ৫-১০ বছরের প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করুন। এগুলো অধ্যায়ন করুন। দেখুন কোন বিষয়/টপিক থেকে বারবার প্রশ্ন আসে (হাইলাইট করুন), প্রশ্নের ধরণ (মাল্টিপল চয়েস, লিখিত, সংক্ষিপ্ত, নৈর্ব্যক্তিক), কঠিনতা কেমন। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পূর্বের প্রশ্নপত্র) বা নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রায়ই প্রশ্নপত্র আর্কাইভ থাকে।
      • পরীক্ষার ধরন: বিসিএস প্রিলি-তে ২০০ নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন, লিখিততে বিশদ রচনামূলক উত্তর, মৌখিকে ব্যক্তিত্ব যাচাই। শিক্ষক নিয়োগে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান, ব্যাংকে গণিত ও ইংরেজির উপর জোর। প্রস্তুতি পরীক্ষার ধরনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
    2. সঠিক স্টাডি ম্যাটেরিয়াল বাছাই করুন:

      • বেসিক বই: বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলী, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, সাধারণ বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি, গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা – প্রতিটি বিষয়ের জন্য নির্ভরযোগ্য ও আপডেটেড গাইড বই বা পাঠ্যবই পড়ুন। একাধিক সোর্স থেকে পড়লে ধারণা পরিষ্কার হয়।
      • কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ! নিয়মিত জাতীয় (দৈনিক পত্রিকা – প্রথম আলো, ডেইলি স্টার, প্রভাতী), আন্তর্জাতিক (বিবিসি, আল-জাজিরা), এবং বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সামাজিক উন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, খেলাধুলা, গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার, আন্তর্জাতিক সংস্থা সম্পর্কে আপডেট থাকুন। মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিন (যেমন: কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স) খুব সহায়ক। গত ৬-১২ মাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো নোট করুন।
      • বাংলাদেশ সংবিধান: বিশেষ করে বিসিএসসহ গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ পরীক্ষায় সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা, মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, সংসদ, নির্বাচন কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট সংক্রান্ত ধারাগুলো ভালো করে পড়ুন।
    3. টাইম ম্যানেজমেন্ট ও রুটিন:

      • বাস্তবসম্মত রুটিন: প্রতিদিন কত ঘন্টা পড়বেন, কোন বিষয় কখন পড়বেন – একটি লিখিত রুটিন করুন। আপনার কাজ ও বিশ্রামের সময়ের সাথে সামঞ্জস্য করুন।
      • বিষয়ভিত্তিক সময় বণ্টন: আপনার দুর্বলতা ও শক্তির জায়গা চিহ্নিত করুন। দুর্বল বিষয়ে বেশি সময় দিন।
      • নিয়মিত রিভিশন: শুধু নতুন পড়লে হবে না, আগে যা পড়েছেন তা নিয়মিত রিভাইজ করা জরুরি। সপ্তাহে একটি দিন পুরো সপ্তাহের পড়া রিভিশনের জন্য রাখুন।
      • ব্রেক জরুরি: একটানা ৪৫-৫০ মিনিট পড়ার পর ১০-১৫ মিনিট বিরতি নিন। মস্তিষ্ক বিশ্রাম পাবে, পড়ার মান ভালো থাকবে।
    4. মডেল টেস্ট ও মক টেস্ট:

      • নিয়মিত অনুশীলন: সপ্তাহে অন্তত ২-৩টি ফুল মডেল টেস্ট (সময় ধরে) দিন। এটি পরীক্ষার চাপ সামলানোর ক্ষমতা বাড়ায়, দুর্বলতা চিহ্নিত করে এবং গতি বাড়ায়। বিপিএসসি মডেল টেস্ট বা বিভিন্ন বিশ্বস্ত প্রকাশনীর মডেল টেস্ট বই ব্যবহার করুন।
      • বিশ্লেষণ: পরীক্ষা দেওয়ার পর উত্তরমালা মিলিয়ে দেখুন। কোন বিষয়/টপিকে ভুল করছেন, কেন করছেন – তা খুঁজে বের করুন। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিন।
      • অনলাইন মক টেস্ট: বিভিন্ন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মে (যেমন: 10 Minute School, Bijoy Digital School) সরকারি চাকরির জন্য নিয়মিত অনলাইন মক টেস্টের আয়োজন করা হয়। অংশগ্রহণ করুন।
    5. শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য:
      • পর্যাপ্ত ঘুম: মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা গভীর ঘুম অপরিহার্য।
      • সুষম খাদ্য: পুষ্টিকর খাবার খান। ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত চা-কফি এড়িয়ে চলুন। প্রচুর পানি পান করুন।
      • হালকা ব্যায়াম: প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটা, স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম করলে স্ট্রেস কমে, মন সতেজ থাকে।
      • ইতিবাচক মনোভাব: নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। ব্যর্থতাকে ভয় পাবেন না, শেখার সুযোগ হিসেবে নিন। পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ইতিবাচক আলোচনা করুন। স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের কৌশল (গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, মেডিটেশন) শিখুন।

    প্রস্তুতি মানে শুধু বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে থাকা নয়। এটি একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া যেখানে জ্ঞানার্জন, অনুশীলন, সময় ব্যবস্থাপনা এবং শারীরিক-মানসিক সুস্থতা সমান গুরুত্বপূর্ণ।

    সাক্ষাৎকারে সফলতা: আপনার ব্যক্তিত্বেরই পরীক্ষা

    লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর সাক্ষাৎকার (ভাইভা) চূড়ান্ত বাঁধা। এখানে শুধু জ্ঞান নয়, আপনার আত্মবিশ্বাস, যোগাযোগ দক্ষতা, চাপ সামলানোর ক্ষমতা, সততা এবং দেশ ও সমাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি যাচাই করা হয়।

    1. আত্ম-পরিচয় ও প্রার্থিত পদের প্রতি আগ্রহ: নিজের সম্পর্কে সংক্ষেপে কিন্তু কার্যকরভাবে বলতে পারা (নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, কেন এই চাকরি চান, এই পদের জন্য আপনি কেন উপযুক্ত)। প্রার্থিত পদ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। তাদের ভূমিকা, চলমান প্রকল্প, চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে ধারণা রাখুন।

    2. সাম্প্রতিক ঘটনা ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট: জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি (এমডিজি/এসডিজি অর্জন, ডিজিটালাইজেশন), সামাজিক সমস্যা, বৈদেশিক সম্পর্ক, পরিবেশগত ইস্যু (জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব) সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা ও নিজস্ব বিশ্লেষণমূলক মতামত তৈরি করুন। সরকারের নীতি ও কর্মসূচি সম্পর্কে জ্ঞান রাখুন।

    3. সাংবিধানিক জ্ঞান: বাংলাদেশ সংবিধানের মৌলিক নীতিমালা (ধারা ৮), মৌলিক অধিকার (ধারা ২৬-৪৭ক), রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ, সংসদ, ন্যায়পাল, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (ক্যাজ), সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সম্পর্কিত ধারাগুলো ভালো করে পড়ুন।

    4. নৈতিকতা ও সততা: সরকারি চাকরির মূল ভিত্তি হল সততা ও নৈতিকতা। দুর্নীতি, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, স্বজনপ্রীতি ইত্যাদি বিষয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী, নৈতিক দ্বন্দ্বের মুখে কী করবেন – এ ধরনের প্রশ্নের জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখুন। সৎ ও দায়িত্বশীল উত্তর দিন।

    5. ব্যক্তিগত দক্ষতা: আপনার শক্তি (যেমন: দলগত কাজ, সমস্যা সমাধান, নেতৃত্ব), দুর্বলতা (কিন্তু কীভাবে তা কাটিয়ে উঠছেন), ভবিষ্যত পরিকল্পনা, চাপ সামলানোর ক্ষমতা সম্পর্কে বলতে প্রস্তুত থাকুন। সত্য কথা বলুন, অতিরঞ্জন করবেন না।

    6. চেহারা ও পোশাক: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মার্জিত ও পেশাদার পোশাক (প্যান্ট-শার্ট বা সালোয়ার-কামিজ/শাড়ি) পরুন। আত্মবিশ্বাসী কিন্তু বিনয়ী ভাব বজায় রাখুন। বডি ল্যাঙ্গুয়েজে সতর্ক থাকুন (সোজা হয়ে বসুন, আই কনট্যাক্ট রাখুন, অপ্রয়োজনে নড়াচড়া করবেন না)।

    7. মক ইন্টারভিউ: বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা শিক্ষকের সামনে বসে মক ইন্টারভিউ দিন। সম্ভাব্য প্রশ্নগুলোর উত্তর জোরে জোরে অনুশীলন করুন। ভিডিও রেকর্ড করে নিজেকে দেখুন, কোথায় উন্নতি দরকার তা খুঁজে বের করুন।

    সাক্ষাৎকারে সফলতা নির্ভর করে আপনার আত্মবিশ্বাস, জ্ঞানের গভীরতা এবং সততার সমন্বয়ের উপর। ভয়কে জয় করে নিজেকে সেরা ভাবে উপস্থাপন করুন।

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগে সাধারণ ভুল ও করণীয়

    আবেদন থেকে চূড়ান্ত নির্বাচন পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে কিছু সাধারণ ভুল প্রার্থীদের স্বপ্ন ভঙ্গ করে। সচেতন থাকলেই এড়ানো যায়:

    1. বিজ্ঞপ্তি না পড়ে আবেদন: যোগ্যতা, বয়সসীমা, আবেদন পদ্ধতি না জেনেই আবেদন করা। করণীয়: বিজ্ঞপ্তি মন দিয়ে কমপক্ষে দু’বার পড়ুন। বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা নিজের কাগজপত্র মিলিয়ে নিন।
    2. ভুল তথ্য দেওয়া: ফর্মে নাম, জন্ম তারিখ, শিক্ষাগত তথ্য, মোবাইল নম্বর ভুল দেওয়া। করণীয়: প্রতিটি তথ্য সাবধানে লিখুন। জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষা সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখে দেখে তথ্য দিন।
    3. আবেদন ফি জমা না দেওয়া/ভুল দেওয়া: ফি জমা দেওয়ার ভুল পদ্ধতি অনুসরণ করা, ট্রানজেকশন আইডি ফর্মে উল্লেখ না করা। করণীয়: বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদ্ধতি ও হিসাব নম্বরেই ফি জমা দিন। রিসিট/প্রুফ সংরক্ষণ করুন ও ফর্মে সঠিক স্থানে লিখুন।
    4. ডকুমেন্ট আপলোডে ভুল: স্ক্যান কপি অস্পষ্ট, ভুল সাইজ, ভুল ফরম্যাট (JPG/PDF), প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড না করা। করণীয়: নির্দেশিত সাইজ ও ফরম্যাটে পরিষ্কার স্ক্যান কপি আপলোড করুন। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সমস্ত ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি দিতে হবে।
    5. শেষ মুহূর্তের আবেদন: আবেদনের শেষ দিন প্রচুর ভিড়ে ওয়েবসাইট ডাউন হওয়া, ফি জমাতে সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি। করণীয়: বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কয়েক দিনের মধ্যেই আবেদন সম্পন্ন করুন।
    6. এডমিট কার্ড/পরীক্ষার তারিখ না দেখা: পরীক্ষার তারিখ, সময়, ভেন্যু ও এডমিট কার্ড ডাউনলোডের নোটিশ মিস করা। করণীয়: নিয়মিত সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট চেক করুন। আবেদনের সময় দেওয়া মোবাইল নম্বর ও ইমেইল একটিভ রাখুন। এডমিট কার্ড প্রিন্ট আউট করে রাখুন।
    7. অপ্রয়োজনীয় টেনশন ও গুজবে কান দেওয়া: বিভিন্ন গুজব (পরীক্ষা পেছানোর, নিয়োগ বাতিলের) বা অন্যের প্রস্তুতি দেখে হতাশ হয়ে পড়া। করণীয়: শুধুমাত্র সরকারি সোর্স (বিপিএসসি/টেলিটক/মন্ত্রণালয়) থেকে তথ্য নিন। নিজের প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিন, অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করবেন না।
    8. সাক্ষাৎকারে অতিরঞ্জন বা অসত্য বলা: নিজের দক্ষতা বা অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে বলা। করণীয়: সম্পূর্ণ সত্য কথা বলুন। না জানলে সরাসরি বলুন, “স্যার/ম্যাডাম, বিষয়টি আমি এখনও বিস্তারিত জানি না, তবে শিখে নেব।”
    9. ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনে অনিয়ম: সকল মূল কাগজপত্র (শিক্ষা সনদ, মার্কশিট, জন্ম নিবন্ধন, নাগরিকত্ব, কোটা সনদ, অভিজ্ঞতার সনদ) এবং সেগুলোর সত্যায়িত ফটোকপি সময়মত উপস্থাপন না করা। করণীয়: বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সমস্ত মূল কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক সত্যায়িত ফটোকপি নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থাপন করুন।

    এই সাধারণ ভুলগুলো এড়িয়ে চললেই আপনার সরকারি চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বহুগুণ বেড়ে যাবে। সতর্কতা ও প্রস্তুতি হোক আপনার সাফল্যের হাতিয়ার।

    জেনে রাখুন (FAQs)

    1. প্রশ্ন: সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি কোথায় সবচেয়ে নির্ভরযোগ্যভাবে পাওয়া যাবে?

      • উত্তর: সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উৎস হল সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। যেমন বিসিএস ও অন্যান্য গেজেটেড পদের জন্য বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (BPSC), প্রায় সব অনলাইন আবেদনের জন্য টেলিটক জবস, শিক্ষক নিয়োগের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট, ব্যাংক নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ই-রিক্রুটমেন্ট বা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওয়েবসাইট। জাতীয় দৈনিকেও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়, তবে সেগুলোকে অবশ্যই মূল সরকারি সোর্স থেকে ক্রস-চেক করতে হবে।
    2. প্রশ্ন: অনলাইনে আবেদন করার পর আবেদন ফি কিভাবে জমা দিতে হয়?

      • উত্তর: বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা থাকে আবেদন ফি পরিশোধের পদ্ধতি। সাধারণত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (বিকাশ, নগদ, রকেট) এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট মার্চেন্ট নম্বরে ফি পাঠানো যায়। কখনও কখনও নির্দিষ্ট ব্যাংকের শাখায় ট্রেজারি চালান বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমেও ফি জমা দিতে হয়। ফি জমা দেওয়ার পর পাওয়া ট্রানজেকশন আইডি (TxID) অবশ্যই অনলাইন আবেদন ফর্মের নির্দিষ্ট স্থানে লিখতে হবে এবং রিসিট/কনফার্মেশন মেসেজ সংরক্ষণ করতে হবে।
    3. প্রশ্ন: আবেদনের সময় কোন কোন ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি দরকার হয়?

      • উত্তর: সাধারণত নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলোর স্ক্যান কপি (নির্দিষ্ট সাইজে, যেমন 300×300 পিক্সেল, 50-100KB, JPG/PDF ফরম্যাটে) প্রয়োজন হয়:
        • সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড)
        • স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি
        • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)/জন্ম নিবন্ধন সনদের স্ক্যান কপি
        • সকল শিক্ষাগত সনদ ও মার্কশিট/ট্রান্সক্রিপ্টের স্ক্যান কপি
        • কোটা প্রমাণপত্রের স্ক্যান কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে – মুক্তিযোদ্ধা সনদ, প্রতিবন্ধী সনদ ইত্যাদি)
        • অভিজ্ঞতার সনদের স্ক্যান কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
          বিজ্ঞপ্তিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের তালিকা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে, সেটিই অনুসরণ করুন।
    4. প্রশ্ন: আবেদন করার পর যদি কোন ভুল ধরা পড়ে, সেটা সংশোধন করা যাবে কি?

      • উত্তর: এটি নির্ভর করে আবেদন সিস্টেমের উপর। কিছু পোর্টাল (যেমন টেলিটক জবস) আবেদন জমা দেওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময়ের (সাধারণত ২৪-৭২ ঘন্টা) জন্য ‘এডিট’ অপশন দেয়। সেই সময়ের মধ্যে লগইন করে ভুল সংশোধন করা যায়। সময় পার হয়ে গেলে বা ‘ফাইনাল সাবমিট’ হয়ে গেলে সাধারণত আর সংশোধনের সুযোগ থাকে না। তাই সাবমিট করার আগে বারবার চেক করে নিন। কোন সংশোধন সুযোগ না থাকলে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হেল্পলাইন বা ইমেইলে যোগাযোগ করে জিজ্ঞাসা করুন।
    5. প্রশ্ন: সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কত এবং বয়সের ছাড় (Age Relaxation) কাদের জন্য প্রযোজ্য?

      • উত্তর: সাধারণ বয়সসীমা ১৮-৩০ বছর। তবে পদের ধরন (যেমন: টেকনিক্যাল, বিশেষজ্ঞ) এবং শর্ত অনুযায়ী এটি ৩২ বা ৩৫ বছরও হতে পারে। বয়সসীমার ছাড় (Age Relaxation) প্রযোজ্য হয়:
        • মুক্তিযোদ্ধা/মুক্তিযোদ্ধার সন্তান-সন্ততিদের জন্য: সর্বোচ্চ ৩২ বছর (বিভিন্ন পদে ২-৫ বছর পর্যন্ত ছাড়, বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিতে থাকে)।
        • প্রতিবন্ধী (অটিজম, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, শারীরিক প্রতিবন্ধী) প্রার্থীদের জন্য: সর্বোচ্চ ৪০ বছর (বিভিন্ন পদে ১০ বছর পর্যন্ত)।
        • বাংলাদেশের আদিবাসী/উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত প্রার্থীদের জন্য: সাধারণ নিয়মে ৩২ বছর।
        • সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য (কোটা প্রযোজ্য): বয়সসীমা সংশ্লিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী।
          সর্বোচ্চ গুরুত্ব: বয়সসীমা ও ছাড়ের শর্তাবলী সর্বদা সংশ্লিষ্ট চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত তারিখ অনুযায়ী গণনা করা হয় এবং বিজ্ঞপ্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। জন্ম নিবন্ধন সনদই বয়সের একমাত্র গ্রহণযোগ্য প্রমাণ।
    6. প্রশ্ন: চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে ‘কোটা’ বলতে কী বোঝায়? কোটা সুবিধা পেতে কী করণীয়?
      • উত্তর: সরকারি নিয়োগে কিছু শূন্যপদ বিশেষভাবে পিছিয়ে পড়া বা বিশেষ মর্যাদাপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত থাকে। প্রধান কোটাগুলো হল:
        • মুক্তিযোদ্ধা কোটা (৩০%): মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান বা নাতি-নাতনিরা (শর্তসাপেক্ষে)।
        • জেলা কোটা: প্রতিটি জেলা থেকে ন্যূনতম কিছু পদ নিয়োগ নিশ্চিত করা।
        • নারী কোটা: নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো।
        • উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা: আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য।
        • প্রতিবন্ধী কোটা: বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য।
      • করণীয়: আপনি যদি কোন কোটা প্রাপ্যের অধিকারী হন, তাহলে আবেদন করার সময় সংশ্লিষ্ট কোটা বাছুন এবং আবেদনের সাথে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরম্যাটে ইস্যুকৃত বৈধ কোটা প্রমাণপত্রের স্ক্যান কপি (সত্যায়িত কপি, অফলাইনে) অবশ্যই সংযুক্ত করুন। কোটা সনদ ছাড়া কোটা সুবিধা পাওয়া যায় না। কোটা প্রমাণপত্রের ধরন ও ইস্যুকারী কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকে।

    সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ শুধু একটি কর্মসংস্থান নয়; এটি দেশের সেবা করার, নিজের মেধা ও যোগ্যতা প্রমাণ করার এবং পরিবারের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার এক অনন্য সুযোগ। আমরা এই প্রতিবেদনে চেষ্টা করেছি বিজ্ঞপ্তি খোঁজা থেকে শুরু করে সাক্ষাৎকার পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের স্পষ্ট, নির্ভুল ও ব্যবহারিক গাইডলাইন আপনাদের সামনে তুলে ধরতে। মনে রাখবেন, প্রতিযোগিতা কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। সঠিক তথ্য, কৌশলগত প্রস্তুতি, অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাসই পারে আপনাকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে। সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগের সেই কাঙ্ক্ষিত বিজ্ঞপ্তিটি আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে। আবেদন করুন এখনই! সময় নষ্ট করবেন না, প্রস্তুতি নিন গোছালোভাবে, নির্ভুলভাবে আবেদন জমা দিন এবং নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিন। আপনার সাফল্যই আমাদের কামনা। শুভকামনা!


    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    আবেদন এখনই করুন চাকরির নতুন নিয়োগ, লাইফস্টাইল সরকারি সরকারি চাকরির নতুন নিয়োগ
    Related Posts
    পুরুষদের আগ্রহ

    পুরুষের এই গুণটি মেয়েদেরকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করে

    July 16, 2025
    ছাগল পালন

    ছাগল পালনে নতুন খামারিদের করণীয়

    July 16, 2025
    মরিচ

    কাঁচা মরিচ গাছ এই নিয়মে লাগালে হবে বাম্পার ফলন

    July 16, 2025
    সর্বশেষ খবর
    NCP

    নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করল এনসিপি

    OnePlus Nord 5

    লাইফটাইম ওয়ারেন্টি দিচ্ছে ওয়ানপ্লাস

    Sonnasi

    সন্ন্যাসীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের পর ব্ল্যাকমেইল, নারী গ্রেপ্তার

    Zerin Khan

    ‘প্রয়োজন না থাকলেও চুমু খেতে হত, ছোট পোশাক পরতে বাধ্য করত’

    AI

    এআই-এর পরামর্শ মেনে শেয়ারবাজারে বিপুল লাভ তরুণের!

    dollar

    টাকার বিপরীতে ডলারের পতন: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

    e passport application

    ই-পাসপোর্ট আবেদন এখন আরও সহজ, জানুন বিস্তারিত

    Indian Woman Thief

    যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে গিয়ে চুরি করে ধরা খেলেন ভারতীয় নারী

    janata-bank

    বৈষম্যের অভিযোগে জনতা ব্যাংকের কর্মী অসন্তোষ

    Trump

    ছয় ঘণ্টার নোটিশে অভিবাসীদের দেশ ছাড়া করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র

    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    • Feed
    • Banglanews
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.