ফারুক তাহের, চট্টগ্রাম: জাতীয় রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় শুল্ক স্টেশন কাস্টম হাউজ, চট্টগ্রাম। এখান থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬১ হাজার ৪৬৪ দশমিক ৭২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। যদিও এই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা।
চলমান ডলার সংকট, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে স্থবিরতা ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির মন্দাভাবের কারণে বিগত অর্থবছরের শুরু থেকে টানা আট মাস রাজস্ব আদায় অনেকটা স্থবির ছিল। এই স্থবিরতা কাটিয়ে গত মে মাসে রেকর্ড ৭ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে প্রতিষ্ঠানটি। পরবর্তী মাসে অর্থাৎ জুনে আদায় হয় ৬ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ সূত্রমতে, চোরাচালান রোধ, জালিয়াতি বন্ধসহ শুল্ক ফাঁকি রোধে নানা উদ্যোগের ফলে রাজস্ব আদায় বেড়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দিকে রাজস্ব আদায় বেশি হয় এমন পণ্য কম আমদানি হওয়ায় রাজস্ব আয়ও কম হয়। তবে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে মে ও জুন মাসে গাড়িসহ বিলাসী পণ্যের আমদানি বেশি হওয়ায় রাজস্বের পরিমাণও বেড়ে যায়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের তথ্যানুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসের মধ্যে পাঁচ মাসে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ছিল। অর্থবছরের শুরুতে জুলাই মাসে কাস্টমসের প্রবৃদ্ধি ৪০ দশমিক ৮৭ শতাংশ হলেও ক্রমাগত কমে জুন পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে। সেপ্টেম্বরে দশমিক ১৭ শতাংশ, ডিসেম্বরে ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ, জানুয়ারিতে ৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ১৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ, মার্চ মাসে ৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, এপ্রিল মাসে ১৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ সংকোচন বা ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়।
এর মধ্যে জুলাইয়ে ৪ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা, আগস্টে ৫ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে ৫ হাজার ১০৫ কোটি টাকা, অক্টোবরে ৪ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা, নভেম্বরে ৫ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা, ডিসেম্বরে ৪ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা, জানুয়ারিতে ৪ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা, ফেব্রæয়ারিতে ৪ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা, মার্চে ৫ হাজার ৫২ কোটি টাকা ও এপ্রিলে ৪ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা, মে তে ৭ হাজার ৮৪০ কোটি ও জুনে ৬ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে কাস্টমস।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপকমিশনার বদরুজ্জামান মুন্সি জুমবাংলাকে বলেন, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা পূরণ না হলেও চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের ইতিহাসে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় হয়েছে। যার পেছনে আমাদের প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারির সদিচ্ছা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, নানামুখী কারণে ঋণপত্র ও ডলার সংকটে গত অক্টোবর থেকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে স্থবিরতা চলছে। তবে গত অর্থবছরের শেষ চার মাসের পণ্য আমদানি রাজস্ব আদায়ের পরিমাণকে বাড়িয়ে দেয়। আমাদের রাজস্ব আদায়ের এই সাফল্য অর্জনে তা সহায়ক হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।