জুমবাংলা ডেস্ক: বাংলাদেশের ৬টি জেলা জুড়ে সুন্দরবন বিস্তৃত হলেও একমাত্র সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার মুন্সিগঞ্জ থেকে দেখা যায় সুন্দরবনের সবুজ আবহ। সাতক্ষীরা শহর পেরুলেই রাস্তার দুপাশের বড় বড় সবুজ বৃক্ষ আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে সুন্দরবনের পথে। আপনার গাড়ি চলতে থাকবে সবুজ টানেলের ভিতর দিয়ে।
ঢাকা থেকে রওনা হয়ে সরাসরি মুন্সিগঞ্জ গিয়ে গাড়ি থেকে নেমে যতদূর আপনার চোখ যাবে শুধু দেখবেন সবুজ সীমানা। মংলা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট যেদিক দিয়েই সুন্দরবন যান না কেন বন দেখার জন্য নদীপথে ছুটতে হবে অনেকটা দূর। একমাত্র সাতক্ষীরার কোলঘেঁষা সুন্দরবন ব্যতিক্রম।
পর্যটন খাতে আমাদের আয়ের পর্যাপ্ত সুযোগ থাকলেও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে পর্যটন খাত আজো অনেক পিছিয়ে। সাতক্ষীরা সুন্দরবনও তার ব্যতিক্রম নয়। সাতক্ষীরার মালঞ্চ, কালিন্দী, রায়মঙ্গল, খোলপেটুয়া, বুড়িগোয়ালিনী নদীর তীর ছুঁয়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনে ঘোরার জন্য পর্যাপ্ত বোট থাকলেও বন দেখে এসে থাকা খাওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এখানে ছিলো না কখোনোই।
সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো পর্যায় থেকেই শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জে স্থাপন করা হয়নি ভালো মানের কোনো হোটেল বা রেস্ট হাউস। কিন্তু সুন্দরবনের সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কেওড়া, গোলপাতা, খলিসাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, গাছের শ্বাসমূল, হরিণের ছোটাছুটি, বানরের লাফালাফি, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গগন ফাটানো ডাক, বন মোরগ আর বিচিত্র পাখির বৈচিত্র্যময় সুরের মাঝে একটু বেশি সময় কাটাতে ভালো মানের কোনো হোটেল বা রেস্ট হাউসের প্রয়োজন কারো বলে দিতে হয় না।
অগণিত সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত সে স্বপ্ন পূরণ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘সুশীলন’। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে জাপান সরকারের অর্থায়নে মুন্সিগঞ্জে নির্মিত হয়েছে ‘টাইগার পয়েন্ট’ নামে মানসম্পন্ন তিনতলা একটি রেস্ট হাউস।
বনে ঘোরার জন্য ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করা, বনবিভাগের কাছ থেকে অনুমতি নেয়া, গাছ, পাখি চেনানো এবং আশপাশের গ্রামে বসবাসরত মৌয়াল, বাওয়াল ও মুন্ডা নামক আদিবাসীদের জীবনযাত্রা দেখার ক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে এই রেস্ট হাউসের নিবেদিত কর্মীরা। আগে থেকে বুকিং দিয়ে এখানে একসঙ্গে থাকতে পারবেন ১০০ জনের বেশি মানুষ।
তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বনভোজন কিংবা ভ্রমণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আনন্দভ্রমণসহ কাজের ফাঁকে একটু অবসর কাটাতে পরিবার নিয়ে আপনি এখানে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে যেতে পারেন কয়েকটি দিন। এই রেস্ট হাউসটি নির্মাণের ফলে দেশের পর্যটনখাতে সাতক্ষীরা সুন্দরবন উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়।
নাগরিক জীবনের বিষাক্ত বাতাস, ক্লেদাক্ত কর্মময় জীবন থেকে ছুটি নিয়ে তাই ঘুরে আসতে পারেন গাঢ় সবুজের মেলার রাজ্য থেকে। যে রাজ্যের রাজা জাতীয় শৌর্যের প্রতীক, পরাক্রমশালী ভয়ংকর সুন্দর প্রাণী বিশ্বখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। আর রাণী লবংগের পাতার মতো ছোট পাতা, উপরের অংশ মসৃণ এবং নিচের অংশ ধূসর বর্ণের সুন্দরী গাছ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।