জুমবাংলা ডেস্ক : কোটি টাকার গরু ও লাখ টাকার ছাগল নিয়ে আলোচনা আসেন সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক মো. ইমরান হোসেন। শেষে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল বিক্রি করে ফের আলোচনার জন্ম দেন যার ফলে বেরিয়ে আসে রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের থলের বিড়াল। অনুসন্ধানে এবার বেরিয়ে আসল সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মের অভিনব জালিয়াতি।
জানা গেছে, কোটি টাকায় দেশে আমদানি নিষিদ্ধ ব্রাহমা গরু কোটি টাকায় বিক্রি করা হলেও কর দেওয়ার সময় সেসব গরুর দাম দেখানো হয়েছে ১৪ হাজার টাকারও কম। কোটি টাকায় একটি গরুর বিক্রি করা সাদিক অ্যাগ্রোর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) প্রদর্শন করা হিসাব অনুযায়ী বছরে আয় মাত্র ৮১ লাখ ২১ হাজার ২৬৯ টাকা। সাদিক অ্যাগ্রোর প্রদর্শিত বার্ষিক আয় প্রতিষ্ঠানটির একটি গরু বিক্রির টাকার চেয়েও কম। এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ তথ্যকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করছেন না খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও বিশ্লেষকরা।
ইমরান হোসেন কর অঞ্চল-৬-এর ১৩১ নম্বর সার্কেলে তাঁর কর রিটার্ন জমা দেন। ২০২২-২৩ করবর্ষের নথি সূত্রে জানা গেছে, সাদিক অ্যাগ্রো ছাড়াও তিনি ইমরান হোসেন ফিশ ফার্মের স্বত্বাধিকারী। এছাড়া আরও কয়েকটি কোম্পানির পরিচালক তিনি।
২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সাদিক অ্যাগ্রোর মোট বিক্রির পরিমাণ দুই কোটি আট লাখ ১৫ হাজার ২৩৬ টাকা। তবে এই সময়ে তিনি বাছুর কেনা বাবদ খরচ করেছেন ছয় লাখ ১২ হাজার ৪৭০ টাকা। পশুখাদ্য কিনেছেন ৫১ লাখ সাত হাজার ৮১০ টাকার। ওষুধ কেনার খরচ আট লাখ ৬৫ হাজার ৩৬৬ টাকা। কর্মীদের মজুরি দিয়েছেন ১২ লাখ ৭২ হাজার ৪২৫ টাকা। এভাবে রক্ষণাবেক্ষণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, গবেষণা ও উন্নয়ন এবং অন্যান্য খাতে সর্বমোট ব্যয় করেছেন ৮৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৩৪ টাকা। এর সঙ্গে অন্য সব খরচ বাদ দিয়ে তাঁর বাৎসরিক আয় ৮১ লাখ ২১ হাজার ২৬৯ টাকা।
কিন্তু তাঁর এই হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার বিশাল ফারাক। শুধু কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করেই তাঁর দেড় হাজার পশু বিক্রি হয়। এর মধ্যে রয়েছে ব্রাহমা, ইন্দো ব্রাজিল, হোলস্টাইন, দেশাল, শাহীওয়ালসহ বেশ কয়েকটি জাতের গরুর পাশাপাশি মহিষ ও ছাগল। এ ছাড়া তাঁর ফার্মে উটও বিক্রি করা হয়।
তাঁর ফার্মে বেশির ভাগই কোটি টাকা দামের গরু। বছরজুড়ে দেড় হাজার গরু বিক্রি করলেও সাদিক অ্যাগ্রোর বছরের আয়ের হিসাবের সঙ্গে করের হিসাব মেলানো দুষ্কর। ইমরানের বিক্রয়ের তথ্যানুযায়ী, দুই কোটি আট লাখ ১৫ হাজার ২৩৬ টাকায় তিনি দেড় হাজার গরু বিক্রি করেছেন। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি গরুর দাম পড়েছে ১৩ হাজার ৮৭৭ টাকা। বর্তমান বাজারে এই দামে একটি মাঝারি মানের ছাগলও কিনতে পাওয়া যায় না। তাঁর ফার্মের একটি ছাগল ১২ লাখ টাকায় বিক্রির ইস্যুতে পুরো দেশ এখন সরগরম।
অন্তত ১০ লাখ টাকা গড়ে প্রতিটি গরু বিক্রি করলেও দেড় হাজার গরুর দাম দাঁড়ায় এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে তিনি কর দিতে গিয়ে এই বিশাল অঙ্কের টাকার তথ্য গোপন করেছেন। এর আগেও এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) ইমরানের কর ফাঁকির বিষয়ে তদন্ত করেছিল। ওই অনুসন্ধানে কর ফাঁকির তথ্য প্রমাণিত হয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।