বিনোদন ডেস্ক: তিনি চিরকুমার। আাবার তিনি আজীবন চিরপ্রেমিক। প্রেমিকাদের ওপর তার অধিকারবোধও নাকি একটু বেশি, মাত্রাজ্ঞানের ধার ধারেন না,এমনই বলেন নিন্দুকেরা। কিন্তু তিনি কি প্রতারক? কিছুদিন আগে সালমান খানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছিলেন তারই এক প্রাক্তন প্রেমিকা সোমি আলি। তবে হঠাৎই সোমি নিজের বয়ান বদলাতে উঠে পড়ে লেগেছেন।
তিন দশকেরও বেশি সময়ের অভিনয় ক্যারিয়ারে অন্তত হাফ ডজন নায়িকার সঙ্গে নাম জড়িয়েছে সালমান খানের, যাদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদেরই একজন পাকিস্তানের বলিউড অভিনেত্রী সোমি আলি। এই অভিনেত্রী একসময় সালমানকে ‘প্রতারক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। তবে হঠাৎই তিনি নিজের বয়ান বদলে ফেললেন। প্রশংসায় ভাসালেন সালমান ও তার পরিবারকে।
নব্বইয়ের দশকে বলিউডে নিয়মিত অভিনয় করেছেন সোমি আলি। সেই সূত্রেই সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল সালমানের সঙ্গে। যার মেয়াদ ছিল দীর্ঘ আট বছর। পুরনো প্রেমিক প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সোমি বলেছিলেন, বলিউডেরই এক নায়িকার জন্য তার সঙ্গে প্রতারণা করেন সালমান। যার কারণে বাধ্য হয়েই আট বছরের সম্পর্ককে বিদায় জানিয়ে তিনি আমেরিকায় চলে গিয়েছিলেন।
কার জন্য তার সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন সালমান, ইঙ্গিতে তাও বুঝিয়ে দেন ভাইজানের সাবেক প্রেমিকা। বচ্চনবধূ ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনই তার আর সালমানের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণ। এমনকি সোমি এও বলেছিলেন, তিনি নিজেও সালমানের একটি সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণ।
১৯৯১ সালে যখন সোমির সঙ্গে সালমানের দেখা হয়, তখন সঙ্গীতা বিজলানির সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন ভাইজান। সোমি বলেন, ওদের বিয়ে হওয়াটা একরকম ঠিকই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমারও জেদ ছিল সালমানকে বিয়ে করতেই হবে। আমার জন্যই সালমান আর সঙ্গীতার সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছিল।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে পাকিস্তান থেকে শুধু সালমান খানকে বিয়ে করবেন বলেই ভারতে এসেছিলেন সোমি। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সালমানের ছবি ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ দেখার পর আমি ঠিক করেই নিয়েছিলাম এই লোকটাকেই আমাকে বিয়ে করতে হবে।
পাকিস্তানের নাগরিক সোমি এরপর সোজা মুম্বাইয়ে চলে আসেন। সিনেমায় অভিনয়ের জন্য চেষ্টা করতে শুরু করেন। সুযোগও পেয়ে যান। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছবি করেছিলেন সোমি। তার মধ্যে কয়েকটা ছবি ভালো ব্যবসাও করে। কিন্তু অভিনয় কখনোই সোমির লক্ষ্য ছিল না।
অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল সালমানকে বিয়ে করা। আমি সুযোগ পেলেই ওর বাড়িতে যেতাম। সঙ্গীতার হাত ধরে ওকে বসে থাকতে দেখে হিংসে হত আমার।’ ওই বছরই সঙ্গীতা-সালমানের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
সালমান ক্লাবে যাওয়া পছন্দ করতেন। পুরনো সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করতে বসে সোমি জানান, তিনি জোর করে সালমানকে আটকে রাখতেন। বলেন, ‘ছোটরা দোকানের শো-কেসে সাজানো খেলনা দেখে যেমন বায়না করে, আমার কাছে সালমানও ছিল সেরকম। আমি ওকে বাইরে যেতে দিতাম না। সালমান আমাকে ছেড়ে কোথাও যাক, এটা পছন্দ হত না আমার।
আবার সালমানের তাকে আগলে রাখাও পছন্দ ছিল না পাকিস্তানের সাবেক এই অভিনেত্রীর। বলেন, ও এমন আচরণ করতো যেন আমি বাচ্চা মেয়ে। সেটা আমার একেবারেই ভালো লাগত না। আট বছর আমরা একসঙ্গে ছিলাম। কিন্তু সালমানের থেকে নতুন কিছুই শিখিনি।’
গত বছরের শুরু থেকেই সালমানের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বার বার মুখ খুলেছেন সোমি। খবরেও এসেছেন অভিনেত্রী। যদিও সালমান সোমিকে নিয়ে একটি কথাও বলেননি। তার প্রতারণার অভিযোগ প্রসঙ্গেও না।
১৯৯৯ সালে সালমানের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় সোমির। তারপর ২২ বছর কেটে গেছে। আমেরিকার ফ্লোরিডার বাসিন্দা সোমি এখন সেখানে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চালান। খবরে ফিরতে চাওয়া কি বলিউডে ফেরার ইচ্ছে থেকে? জবাবে সোমি জানান, পর্দায় বা অভিনয়ে ফেরার কোনো ইচ্ছাই নেই তার। বলিউডে তিনি গিয়েছিলেন সালমানের জন্যই। সেখানে সালমানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে শিক্ষা হয়েছে তার।
তবে সম্প্রতি আরেকটি সাক্ষাৎকারে সালমান সম্পর্কে বলা সব কথাই ফিরিয়ে নিয়েছেন সোমি। জানিয়েছেন, সালমানকে তিনি ছেড়ে গিয়েছিলেন, কেননা ওই সম্পর্কে তিনি সুখী ছিলেন না। আর তিনি মনে করেন, কোনো সম্পর্কে যখন তিক্ততা চলে আসে তখন সরে যাওয়াই বাঞ্ছনীয়।
ওই সাক্ষাৎকারে সালমান এবং তার পরিবারের প্রশংসাও করেন সোমি। বলেন, সালমান এবং ওর পরিবারের কাছে অনেক কিছু শিখেছি আমি। ওদের পরিবারে যেটা আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছিল তা হল, ওরা কোনো ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করেন না। সালমানের মায়ের থেকেও আমি অনেক মূল্যবোধ শিখেছি, যা কোনো দিন ভুলব না। নিখুঁত ‘ইউটার্ন’বোধ হয় একেই বলে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।