আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি গাড়ির পেছনের আসনে একটি সিংহের শাবক নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়ে এবং সেই ভ্রমণের দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে ভাইরাল হয়েছেন থাইল্যান্ডের এক নারী। সেই ভাইরালের মাত্রা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে সোয়াংজিত কুসুংনার্ন নামের ওই নারীকে এখন জেল জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে থাইল্যান্ডে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ও কন্টেন্ট শেয়ারিং অ্যাপ টিকটকে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায়— হুডখোলা (কনভার্টিবল) একটি বেন্টলি গাড়িতে ব্যাংকক থেকে ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে পাতায়া সমুদ্র সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সোয়াংজিত। চালকের আসনে ছিলেন তিনি।
আর সেই গাড়ির পেছনের আসনে বসে আছে একটি সিংহ শাবক। ভিডিওতে শাবকটির গলায় লাগানো ফ্লুরোসেন্ট কলারবেল্টটি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, এই বাচ্চাটি তার পোষা এবং সেটি বেশ শান্তভাবেই বসে ছিল গাড়ির পেছনের আসনে। মাঝে মাঝে গাড়ির বাইরে ঘাড় বের করে আশপাশ দেখছিল।
এদিকে টিকটকে ভিডিওটি পোস্ট করার পর অনেক নেটিজেন যেমন বিস্ময় ও উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন, তেমনি ক্ষোভও জানিয়েছেন অনেকে।
ক্ষুব্ধদের মধ্যে একটি দল নিরাপত্তার আশঙ্কা জানিয়েছেন, অপর দলটি প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শনের অভিযোগ তুলেছেন ওই নারীর বিরুদ্ধে।
পোস্টের নিচে এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘এটা সঠিক নয়, দায়িত্বশীল আচরণও নয়। যদি সিংহটি অন্য কোনো মানুষ বা প্রাণীর দিকে তেড়ে আসে, কে দায়িত্ব নেবে?’
আরেক নেটিজেন লিখেছেন, ‘আমি যদি ঘটনাস্থলে থাকতাম এবং যদি আমার সঙ্গে (আমার) বাচ্চারা থাকতো, তাহলে আমি দ্রুত ছুটে পালাতাম।’
এদিকে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে পুলিশ। তারপর খোঁজ পাওয়ার পর তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোয়াংজিত জানিয়েছেন, এই সিংহের বাচ্চাটি তার পোষ্য (পেট)।
থাইল্যান্ডের প্রচলিত আইনে বাঘ-সিংহ বা এ ধরনের বুনো প্রাণী পোষা অপরাধ নয়। কিন্তু সেসব প্রাণীকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে চাইলে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবদে সোয়াংজিত স্বীকার করেছেন, নিজের এই বিশেষ পোষ্যকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেননি তিনি।
দোষ স্বীকারের পর সোয়াংজিতকে ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং ১ হাজার ইউরো জরিমানা করা হয়েছে।
থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল পার্ক, ওয়াইল্ডলাইফ এবং অভয়ারণ্য বিষয়ক মন্ত্রণায়ের মন্ত্রী আত্তাফোন চারোয়েঞ্চানা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সব বন্যপ্রাণীই বিপজ্জনক এবং সেগুলো যে কোনো সময় মানুষকে আঘাত করতে পারে। কোনো ব্যক্তি বাঘ-সিংহ-কুমির পুষতেই পারেন, কিন্তু সেসব প্রাণীকে অবশ্যই নির্ধারিত স্থানে রাখতে হবে। বিনা অনুমতিতে লোকালয়ে আনা যাবে না।’
‘সোয়াংজিত স্বীকার করেছেন যে তিনি আইন ভঙ্গ করেছেন। এ কারণে প্রচলিত আইনের আওতাতেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।