জুমবাংলা ডেস্ক : রাজস্ব আদায়ের চাহিদা পূরণে বিড়ি-সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কম্পানির চেয়েও কার্বোনেটেড বেভারেজ (কোমল পানীয় প্রস্তুতকারক) কম্পানি থেকে বেশি রাজস্ব আদায় করতে চায় সরকার। লাভ-ক্ষতি যাই হোক না কেন, কার্বোনেটেড বেভারেজ কম্পানির পণ্য বিক্রি থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর কর (টার্নওভার ট্যাক্স) ০.৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ করই হবে এমন কম্পানির ন্যূনতম কর। বিড়ি-সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কম্পানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে এসব কম্পানির টার্নওভার ট্যাক্স ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রস্তাবিত ‘আয়কর বিল ২০২৩’ জাতীয় সংসদে তোলেন। পরে বিলটি পাঁচ দিনের মধ্যে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। আইনটি পাস হলে ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ বাতিল হবে। তবে ১৯৮৪ সালের অধ্যাদেশ বাতিল হলেও তার অধীনে এর আগে জারি করা এসআরও এবং গৃহীত কার্যক্রম বহাল থাকবে, যদি না সেগুলো নতুন আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়।
প্রস্তাবিত আয়কর আইনে কার্বোনেটেড বেভারেজ কম্পানির ন্যূনতম কর বাড়ানো হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এক লাফে এ ধরনের কম্পানির ওপর করের বোঝা ৭৩৩ শতাংশের বেশি বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বিড়ি-সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য প্রস্তুতকারী কম্পানির ক্ষেত্রে ন্যূনতম কর ২০০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এভাবে উচ্চ কর আরোপ করলে বেভারেজ কম্পানিগুলোর পক্ষে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করছেন অনেকে।
কর বিশেষজ্ঞ স্নেহাশীষ বড়ুয়া বলেন, ‘হঠাৎ করে ন্যূনতম কর ব্যাপক হারে বাড়ানোর কারণে কার্বোনেটেড বেভারেজ কম্পানির ন্যূনতম কর ৮৩০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এতে এই শিল্পের ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হতে পারে। এই আইনে লোকসানকারী করদাতার জন্য অন্যান্য আয়ের সঙ্গে ব্যাবসায়িক লোকসান সমন্বয় করার সুযোগ রাখা হয়নি। ফলে সম্ভাব্য করদাতারা নিরুৎসাহ হতে পারেন।’
প্রস্তাবিত আইনের কারণে অনেক ক্ষেত্রে উৎস কর কর্তনের উচ্চহার বজায় রাখার ফলে ব্যাবসায়িক খরচ বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আইনে বেশির ভাগ উৎস কর্তিত করকে ন্যূনতম কর হিসেবে বিবেচনার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর কারণে করদাতাদের অতিরিক্ত কর পরিশোধ করতে হবে।
কোমল পানীয় শিল্পে টার্নওভার ট্যাক্স বৃদ্ধির প্রভাব
বাংলাদেশে কোমল পানীয় শিল্প বিস্তৃতির সম্ভাবনা রয়েছে। খাদ্য ও পানীয় খাত বাংলাদেশের জিডিপিতে ১.১ শতাংশ অবদান রাখে, যা ২০১২ সালের পরে দ্বিগুণ হয়েছে। শিল্পটি বহুজাতিক কম্পানির মাধ্যমে এফডিআই আনে এবং দেশি শিল্পও বিনিয়োগ করে, যার ফলে সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রতিবছর বিপুল বিনিয়োগের প্রবাহ নিশ্চিত করে। পানীয়শিল্প প্রতিবছর ২০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাংলাদেশে রেডি টু ড্রিংক পানীয়ের খুব কম অনুপ্রবেশ। এর ব্যবহারের কারণে এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। পানীয়শিল্প তাদের মূল্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে স্থানীয় সোর্সিংয়ের জন্য মূল্য তৈরি করছে; যেখানে বেশির ভাগ কাঁচামাল স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় সাড়ে তিন লাখ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করছে।
প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগের একটি শক্তিশালী পরিকল্পনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশে ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছে কোকা-কোলা। কম্পানির বৈশ্বিক চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী জেমস কুইন্সি ২০২০ সালে বাংলাদেশে তাঁর সফরের সময় এসব কথা বলেছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।