জুমবাংলা ডেস্ক : গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রীর অন্যতম প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশ ৭ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে কারখানা স্থাপন করেছে, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৮৫৮ কোটি টাকা। কারখানাটি এখন পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত। এই কারখানায় চার হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সিঙ্গারের লক্ষ্য, ৯০ শতাংশের বেশি পণ্য দেশেই উৎপাদন করা।
পাশাপাশি ভোক্তাদের বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা দিতে এ দেশে প্রথমবারের মতো ‘সিঙ্গার বেকো কনসেপ্ট স্টোর’ চালু করা হয়েছে, যেখানে রয়েছে কেনার আগে পণ্য ব্যবহার করে দেখার সুযোগ। এভাবে একটি রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে সিঙ্গারের কার্যক্রমে রূপান্তর ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই রূপকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ট্রান্সফর্ম ফর গ্রোথ’ বা ‘উন্নতির লক্ষ্যে রূপান্তর’।
ভোক্তারা অভিজ্ঞতা নিয়ে পণ্য কিনবেন, এটা দেশের জন্য নতুন সুবিধা। নতুন প্রজন্ম আগে জানতে চায়, পণ্য-সেবার মান কেমন? এই কনসেপ্ট স্টোর সেই চাহিদা পূরণ করবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে বৃহস্পতিবার বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিঙ্গারের অন্যতম মালিক আর্চেলিকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার জেমাল জান ডিনচার। তিনিসহ সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এইচ এম ফাইরোজ ও আর্চেলিকের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক বিপণন পরিচালক হান্দান আব্দুর রহমানোউলু বাংলাদেশে সিঙ্গারের রূপান্তর-উদ্যোগ তথা রূপকল্প ঘোষণা করেন। সিঙ্গারের ৫৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক আর্চেলিক। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশ। এ দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে। তাই এ দেশে কারখানা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ অঞ্চলে পণ্য সরবরাহে বাংলাদেশকে হাব বা কেন্দ্র বানাতে চায় সিঙ্গার।
এদিকে রূপান্তরের অংশ হিসেবে সিঙ্গার বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয় ঢাকার গুলশান ২-এ স্থানান্তর করা হয়েছে। তুর্কি স্থপতিদের দ্বারা ডিজাইন করা এই কার্যালয় কর্মীদের বিশ্বমানের কর্মক্ষেত্র ও সুযোগ-সুবিধা প্রদান করবে বলে জানানো হয়।
সিঙ্গারের পরিবর্তন সম্পর্কে আর্চেলিকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার জেমাল জান ডিনচার বলেন, ‘সিঙ্গারকে বাংলাদেশের শীর্ষ ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা কিছু উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ নিয়ে ধীরে ধীরে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে পরিবর্তন করছি। সিঙ্গার বাংলাদেশের যাত্রায় ‘‘উন্নতির লক্ষ্যে রূপান্তর” শীর্ষক স্লোগান চালু করা একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। নতুন কনসেপ্ট স্টোর, নতুন করপোরেট অফিস এবং আমাদের কারখানায় বিনিয়োগ এই পরিবর্তনের সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ। ভবিষ্যতেও উদ্ভাবনী শক্তি, গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
কেনার আগেই মিলবে পণ্য ব্যবহারের সুযোগ। এরপর ফলাফল বিবেচনা করে ভোক্তা সিদ্ধান্ত নেবেন। ভোক্তাদের এমন বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা দিতে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কনসেপ্ট স্টোর চালু করেছে গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রীর অন্যতম ব্র্যান্ড সিঙ্গার বেকো। রাজধানীর গুলশান-১–এ গতকাল সকালে আর্চেলিকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার জেমাল জান ডিনচার, সিঙ্গার বাংলাদেশের এমডি এম এইচ এম ফাইরোজসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে এই কনসেপ্ট স্টোর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরই স্টোরটি ভোক্তাদের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আর্চেলিকের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার জেমাল জান ডিনচার সাংবাদিকদের বলেন, এমন কনসেপ্ট স্টোর তুরস্কের ইস্তাম্বুলসহ বড় বড় শহরে রয়েছে। বাংলাদেশের ক্রেতারাও এখন একই অভিজ্ঞতা নিতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সিঙ্গার-বেকো হলো ইউরোপের শীর্ষ তিন ব্র্যান্ডের একটি। কনসেপ্ট স্টোরে রয়েছে সিঙ্গার ও বেকো ব্র্যান্ডের অধীন গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের পণ্যের পৃথক জোন।
কনসেপ্ট স্টোরটি ঘুরে দেখা যায়, কনসেপ্ট স্টোরের একদিকে রয়েছে অত্যাধুনিক রেফ্রিজারেটর থেকে টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, ওয়াশিং মেশিন ইত্যাদি; অন্যদিকে রয়েছে ওভেন, সেলাই মেশিন ও অন্যান্য ব্যক্তিগত ব্যবহারের পণ্যসামগ্রী। এসব পণ্য কেনার আগে ব্যবহার করে দেখার সুযোগ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, একটি কনসেপ্ট স্টোর সাধারণ খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রের চেয়ে ব্যতিক্রম। এটি একটি নির্দিষ্ট জীবনযাত্রার ওপর ভিত্তি করে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাকে ক্রেতার কাছে উপস্থাপন করে। এই স্টোরগুলোয় বিভিন্ন ব্র্যান্ড ও ডিজাইনারদের ফ্যাশন এবং সৌন্দর্য ও প্রসাধনের সংগ্রহ থাকে। কনসেপ্ট স্টোর মূলত ক্রেতাদের শপিং তথা কেনাকাটাকে স্মরণীয় করে রাখার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা ও উৎসাহ প্রদান করে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলের পুরস্কার বিজয়ী আর্চেলিক কনসেপ্ট স্টোরের ডিজাইনে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশে এই প্রথম কনসেপ্ট স্টোর চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সিঙ্গার বাংলাদেশ নতুন যুগে পদার্পণ করেছে।
সিঙ্গার বাংলাদেশের এমডি এম এইচ এম ফাইরোজ বলেন, ভোক্তারা অভিজ্ঞতা নিয়ে পণ্য কিনবেন, এটা দেশের জন্য নতুন সুবিধা। নতুন প্রজন্ম আগে জানতে চায়, পণ্য-সেবার মান কেমন? এই কনসেপ্ট স্টোর সেই চাহিদা পূরণ করবে।
সিঙ্গার বাংলাদেশের ৫৭ শতাংশ শেয়ারের মালিক হলো আর্চেলিক। এটি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত। সিঙ্গার বাংলাদেশের ৪৬৩টি খুচরা পণ্য বিপণনকেন্দ্র এবং এক হাজারের বেশি ডিলার রয়েছে। সিঙ্গার ১৯০৫ সালে এই অঞ্চলে ব্যবসা শুরু করে। বর্তমানে কোম্পানিটি সিঙ্গার, বেকোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য বাজারজাত করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।