জুমবাংলা ডেস্ক : যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে নিত্যপণ্যের আমদানিতে সিন্ডিকেট ভেঙে পড়ায় বাজারে আলু, পেঁয়াজ, ও ডিমের দাম কমতে শুরু করেছে। এতে বাজারে পেঁয়াজের কেজি কমে ৯০ টাকা, ডিম পিচ ১০ টাকা, আলু ৪৫ ও কাঁচামরিচ দাম কমে ১১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফলে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
এদিকে নিত্যপণ্যের দাম মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে দ্রুত ভারতের সঙ্গে কোটা চুক্তি বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের বাজারে প্রায়ই মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের দাম বৃদ্ধি করে বিপাকে ফেলেন নিম্নআয়ের মানুষদের। দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে আইনি ব্যবস্থা নিয়েও সিন্ডিকেট থামানো যায়নি। এতে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সরকারকে। তবে যখনই অযৌক্তিক দাম বাড়িয়েছে তখন দেখা গেছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বাধ্য হয়ে এসব পণ্যের আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সিন্ডিকেট ভেঙে পড়ায় বাজার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
চলতি বছরের গেল তিন মাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল নিত্যপণ্যের দাম। নানান কারণ দেখিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশের বাজারে ডিম ৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪ টাকা, পেঁয়াজ ২৫ টাকা থেকে ১৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও আলু ২৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে। ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার বাধ্য হয়ে আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। বর্তমানে ভারত থেকে ডিম, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আমদানি হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কোটা চুক্তি বাস্তবায়ন হলে আগামীতে বাজার নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কাজল নামে একজন সাধারণ ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে নিত্যপণ্যের দামে এখনও আগুন। তবে ভারত থেকে আমদানির কারণে কিছুটা কম দামে কিনতে পারছি।’
বেনাপোল বাজারের ডিম বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, ভারত থেকে ডিম আমদানিতে দাম কমতে শুরু করেছে। প্রতি পিস ২ টাকা পর্যন্ত কমে বড় সাইজের ডিম ১১ টাকা ও ছোট ডিম ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, বেনাপোল বন্দরে ডিম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে আফিল এগ্রো, বিসমিল্লাহ ডিম ঘর এবং আদর্শ ডিমের আড়ত নামে তিনটি প্রতিষ্ঠান।
আলু, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ বিক্রেতা হযরত আলী জানান, আমদানির কারণে তারা মোকাম থেকে কম দামে আলু পেঁয়াজ কিনতে পারছেন। বর্তমানে আলু খুচরা বাজারে ৪৫, কাঁচামরিচ ১১৫ টাকা ও পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। দাম আরও কমার সম্ভাবনা আছে।
আমদানিকারক উজ্জ্বল বিশ্বাস জানান, ভারত থেকে নিত্যপণ্য আমদানি যদি আরও সহজ করা যায়; তবে সিন্ডিকেট থাকবে না বাজারে। আর ভারতের সঙ্গে কোটা চুক্তি বাস্তবায়ন হলে যে কোনো ধরনের খাদ্য ঘাটতি অনেকটা পূরণ হবে।
বেনাপোল বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, নিত্যপণ্যের চাহিদা মেটাতে ভারত থেকে কমবেশি পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, ডাল ও ডিম আমদানি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত এসব পণ্য খালাস করে বাজারে সরবরাহ করতে পারেন, তাহলে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
গত এক সপ্তাহে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৩৪৫ মেট্রিক টন কাঁচামরিচ, ৬১ হাজার ৯৫০ পিস মুরগির ডিম ও ৬০০ মেট্রিক টন মসুর ডাল আমদানি হয়েছে। তবে ভারত সরকার প্রতি টন পেঁয়াজ রফতানিমূল্য বৃদ্ধির করায় পেঁয়াজ আমদানি কিছুটা কমেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।